‘শর্ত পূরণ’ হওয়ার পরও নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন না দেওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ)।
Published : 24 Oct 2018, 11:11 PM
বুধবার দলটির এক বিবৃতিতে বলা হয়, “রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের বিষয়ে নির্বাচনী দলবিধি ব্যবহার করে নির্বাচন কমিশন চরম স্বেচ্ছাচারী ও রাজনীতিবিরোধী আচরণ করছে।”
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু নেতৃত্বাধীন জাসদে ভাঙনের পর আলাদাভাবে সক্রিয় রয়েছে জাসদের অন্য অংশটি। শরীফ নুরুল আম্বিয়া ও নাজমুল হক প্রধান নেতৃত্বাধীন এই অংশ ‘বাংলাদেশ জাসদ’ নামে নিবন্ধন চাইছে।
শরীফ নুরুল আম্বিয়ার সভাপতিত্বে বুধবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সভায় উত্থাপিত প্রস্তাবে নিবন্ধন সংক্রান্ত বিভিন্ন বক্তব্য আসে।
এতে বাংলাদেশ জাসদের ‘নিবন্ধন নিয়ে তালবাহানা’ বন্ধ না হলে ‘জবাবদিহিতার কাঠগড়ায়’ দাঁড়াতে হবে বলে ইসিকে হুঁশিয়ার করা হয়।
প্রস্তাবে বলা হয়, “দলে দুজন সংসদ সদস্য বিদ্যমান থাকাসহ রাজনৈতিক দল বিধির শর্তসমূহ পূরণ করার পরেও নানা অজুহাত তুলে বাংলাদেশ জাসদের নিবন্ধন ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে।”
বাংলাদেশ জাসদ বলছে, ৩৮টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের চাইতে তারা কোনো বিবেচনায় নিবন্ধনের অযোগ্য নয়।
“বর্তমানে নিবন্ধিত দলসমূহ এবং নতুন নিবন্ধনের মাপকাঠি সমতাভিত্তিক নয়। অবস্থা বিবেচনায় আমরা ন্যায়বিচার থেকে চরমভাবে বঞ্চিত হচ্ছি।”
আলোচনায় আরো অংশ নেন দলের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধানের পরিচালনায় সভায় কার্যকরী সভাপতি মইন উদ্দিন খান বাদল, স্থায়ী কমিটির সদস্য মুশতাক হোসেন ও মো. খালেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক এমরান আল আমিন, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, সহ-সম্পাদক আবু আহমেদ রামিম, কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য আবদুস সালাম খোকন এবং নূরুল ইসলাম হিটলার।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে নিবন্ধন পেতে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর নির্ধারিত সময়ে ৭৬টি দল আবেদন করে নির্বাচন কমিশনে। সাত মাস ধরে আবেদন যাচাই-বাছাই ও প্রাথমিকভাবে টিকে থাকা দলগুলোর দলিলাদি পর্যালোচনা করে ‘নিবন্ধন অযোগ্য’ দলের তালিকা জানিয়ে দেওয়া হয়।
নিবন্ধন অযোগ্য ঘোষণা হওয়ার পর জাতীয় সংসদে দুজন সংসদ সদস্য থাকার পরও বাংলাদেশ জাসদকে নিবন্ধন না দিলে নির্বাচন কমিশন প্রশ্নবিদ্ধ হবে বলে হুঁশিয়ার করেছিল দলটি।
এরপর বাংলাদেশ জাসদ নিবন্ধনযোগ্য কি না তা যাচাইয়ে গত অগাস্টে জেলা-উপজেলা কমিটির তালিকাসহ বাংলাদেশ জাসদের একটি আবেদন পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত দেয় ইসি।
মাঠ পর্যায়ে ৩৭টি জেলার কমিটি ও শতাধিক উপজেলার সমর্থকদের তালিকা যাচাই শেষে নিবন্ধন পাবে বলে আশাবাদী ছিল হাতি অথবা আনারস প্রতীকে আবেদন করা দলটি।
তবে এরপরও নিবন্ধন না পেলে আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়ে ওই সময় নাজমুল হক প্রধান বলেন, “আমাদের সংসদ সদস্য থাকার পরও নিবন্ধন দিল না; এখন মাঠে তদন্ত চলছে। সব কিছু ঠিক থাকার পরও নিবন্ধন না দিলে আমরা আদালতে যাব।”
২০০৮ সালে নিবন্ধন পদ্ধতি চালু হওয়ার পর এখন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোই কেবল ভোটে অংশ নেওয়ার সুযোগ পায়। বর্তমানে ৪০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে।