বিএনপি বাংলাদেশে ‘জঙ্গি তত্পরতা ও সন্ত্রাসী কাজে’ রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম।
Published : 05 Oct 2017, 04:05 PM
বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক অনুষ্ঠানে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ‘সেইফ জোনে’ রাখার বিষয়ে সরকারের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে বিএনপির অবস্থানের সমালোচনা করেন এই আওয়ামী লীগ নেতা।
তিনি বলেন, ”আমি বিশ্বাস করি, কূটনৈতিক তৎপরতায় রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে আমরা মিয়ানমারকে বাধ্য করতে পারব। বিশ্বের সকল মানুষ প্রধানমন্ত্রীর পাঁচ দফা দাবি সমর্থন করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনার পক্ষে বিশ্ব বিবেক সাড়া দিয়েছে। অথচ আমাদের দেশে একটি রাজনৈতিক দল তার সমালোচনা করছে।
দীর্ঘদিন থেকে মিয়ানমারে বাস্তুচ্যুত চার লাখের বেশি রোহিঙ্গার ভার বহন করে আসা বাংলাদেশে সম্প্রতি আরও পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী হয়ে এসেছে।
বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য মিয়ানমারে সেইফ জোনের কথা বলা হলেও এতে সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে না বলছেন বিএনপি নেতারা।
তবে বিএনপির এই সেইফ জোন বিরোধিতার মধ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে তাদের অন্য উদ্দেশ্য দেখছেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “তারা চায় রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাক। অতীতে তারা যেমন আগুন সন্ত্রাস করেছে, জঙ্গি তত্পরতার মদদ দিয়েছে, ঠিক তেমনিভাবে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে জঙ্গি তৎপরতায় জড়িয়ে পড়ুক, সন্ত্রাসী তৎপরতায় জড়িয়ে পড়ুক… বিএনপি তাদেরকে নিয়ে নতুন একটা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মেতে উঠতে চায়।”
প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার অবস্থান সম্পর্কে জানতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের আবেদনের সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল ইসলাম।
“আমাদের প্রধান বিচারপতি অসুস্থতার কারণে ছুটিতে গেছেন। একজন মানুষ অসুস্থ হতেই পারেন, ছুটিতে যেতেই পারেন, এটা নিয়ে আজকে রাজনীতি শুরু হয়েছে।
“তার অবস্থান জানতে আজকে সুপ্রিম কোর্টে তারা (বিএনপিপন্থি আইনজীবী) একটা দরখাস্ত দিয়েছেন; একেবারে বালখিল্যতা… একটা দরখাস্ত নিয়ে গেছেন তারা। বিচারপতিরা বলেছেন, তিনি (প্রধান বিচারপতি) তার বাড়িতে আছেন সেটা জানি।”
স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের আয়োজনে ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস ও শিক্ষকদের মযাদা’ শিরোনামে আলোচনা সভায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
তিনি বলেন, “শিক্ষা জাতির মেরুদ্ণ্ড হলে শিক্ষার মেরুদণ্ড শিক্ষক। শিক্ষকদের যদি যথাযথ সম্মান দেওয়া না হয়, তাহলে মেধাবী শিক্ষার্থীরা আরো ১০ পেশায় যেতে চাইলেও তারা শিক্ষকতা পেশাতে আসতে চাইবে না।
বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার সমালোচনা করে আরেফিন সিদ্দিক বলেন, “পরীক্ষা কেন্দ্রিক, জিপিএ-৫ কেন্দ্রিক পরীক্ষা শিক্ষা ব্যবস্থাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে, সেটি আমাদের অভিভাবকরা এখনও বুঝতে পারছেন না। ছেলে-মেয়েকে জিপিএ-৫ পাওয়ার জন্য কোন কোচিং সেন্টারে নিয়ে যাচ্ছে, সেখান থেকে বাসায় পড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তারা মনে করছে জিপিএ-৫ পাওয়া গেলেই তারা সফল।
“জিপিএ-৫ পাওয়া খারাপ কিছু না, কিন্তু এর সাথে সাথে মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে হবে, সেটা আমরা দেখছি না। আমলাতান্ত্রিক শিক্ষা প্রশাসন দিয়ে সেটি সম্ভব নয়। শিক্ষাতান্ত্রিক প্রশাসন দরকার।”
স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান আলম সাজুর সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিম, অবসর সুবিধা বোর্ডের সদস্য শরীফ আহমদ সাদী ও বেশ কয়েকজন শিক্ষক নেতা।