প্রস্তাবিত বাজেটের বিভিন্ন দিক নিয়ে ঘরে বাইরে সমালোচনায় বিদ্ধ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের পাশে দাঁড়ালেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
Published : 21 Jun 2017, 03:53 PM
‘ক্ষমা চাই, আর বাজেট দিয়েন না’
সংসদে অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি বাবলুর
বুধাবর প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তোফায়েল সরকারের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও বিরোধী সদস্যদের বিভিন্ন সমালোচনা ও ‘বক্রোক্তির’ জবাব দেন।
তিনি বলেন, “যখন আমি জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু ও কাজী ফিরোজ রশীদকে দেখলাম… যে ভাষায় তারা অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করেছেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের কাছ থেকে এই ভাষা আশা করি নাই।”
জাতীয় পার্টির দুই জ্যেষ্ঠ সদস্য বাবলু ও ফিরোজ মঙ্গলবার ৮৪ বছর বয়সী অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করতে গিয়ে তার বয়স নিয়েও কথা বলেন এবং পদত্যাগ দাবি করেন।
আর কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হকসহ সরকারদলীয় বেশ কয়েকজন সাংসদ বাজেট আলোচনায় ব্যাংক হিসাবের ওপর আবগারি শুল্ক ও ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায় নিয়ে অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করেন।
সংসদে উপস্থিত বাবলু ও ফিরোজের উদ্দেশে তোফায়েল বলেন, “বয়স নিয়ে কথা বলেন, আপনার নেতা হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের বয়সের কথা বিবেচনা করেন না… যিনি আপনাকে মহাসচিব বানান, তারপর আবার রুহুল আমিন হাওলাদারকে বানান, যার বয়স অর্থমন্ত্রীর চেয়েও ৫ বছর বেশি।
“বাবলু আমার খুব প্রিয় লোক। তার মামা শ্বশুর তার নেতা এরশাদ। তিনি কী করে ভুলে গেলেন যে তার নেতার বয়স ৮৬ বছরের বেশি। তিনি যদি বলতেন এরশাদ আপনি পদত্যাগ করেন, বয়স হয়েছে...।”
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল বলেন, “একজন সম্মানিত মানুষকে সম্মান দিতে হয়। বাবলু (মুহিতকে) বলেছেন- ‘এখন বিদায় হন’। উনি আপনাদেরও অর্থমন্ত্রী ছিলেন। উনি ১২টা বাজেট দিয়েছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে আরও দেবেন। উনার ওপর প্রধানমন্ত্রীর আস্থা আছে।”
এমনকি মন্ত্রীদের মধ্যে কয়েকজনও সংসদে দাঁড়িয়ে বাজেটের সমালোচনা করেছেন, যদিও তাদের উপস্থিতিতেই মন্ত্রিসভার বৈঠকে পাস হওয়া বাজেট মুহিত উপস্থাপন করেছেন।
বাজেট নিয়ে মন্ত্রীদের সমালোচনা প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “অর্থমন্ত্রী বাজেট দিয়েছেন। এই বাজেট কেবিনেট অনুমোদিত। আমার কথা থাকলে সেটাই প্রোপার প্লেস। পাস হয়ে যাওয়ার পর এমপিরা বলতে পারেন । এটা প্রস্তাবিত বাজেট। আমার যদি কোনো কথা থাকে আবগারি, ভ্যাট, সঞ্চয়পত্র নিয়ে ....।
তোফায়েল বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জানেন মানুষ কী চায়। ২৮ তারিখ প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দেবেন। সেই দিনই তিনি অর্থমন্ত্রীকে বলবেন- এটা করেন, ওটা করেন। এমনভাবে অনুমোদিত হবে, বাংলাদেশের মানুষ শুধু প্রশংসা করবে না, বলবে এটা শ্রেষ্ঠ বাজেট।”
সমালোচকদের উদ্দেশে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন কেন? আমারও পদত্যাগ দাবি করতে পারেন। আমিও এর পার্ট। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যদি কোনও সমস্যা থাকে, করের বোঝা আসে, তিনি সেগুলো দেখবেন। আলোচনা অবশ্যই করবেন। বাজেট কি সব শুধু নেগেটিভ? এর পজেটিভ দিক নেই?”
নতুন অর্থবছরের শুরু থেকে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায়ের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেও সুখবর আসতে পারেও বলে আভাস পাওয়া যায় তোফায়েলের কথায়।
তিনি বলেন, “বাজেট সকলের। অর্থমন্ত্রী মুখপাত্র। আপনারা আলোচনা করবেন প্রস্তাব নিয়ে। ভ্যাট নিয়ে যে আলোচনা হচ্ছে... আশা করছি এমনভাবে করা হবে যে সব নিরসন হবে। এই সরকার ব্যবসাবান্ধব। ব্যবসায়ীরা খুশি হবে… আমার বলা ঠিক না। প্রধানমন্ত্রী বলবেন।”
চালের দাম বাড়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “মিল মালিকরা চাল বাজারে ছাড়ছেন না। আমরা শুল্ক কমিয়েছি। প্রতি কেজি ছয় টাকা দাম কমবে, এটা স্বাভাবিক হয়ে যাবে।”
বাজেটের খবর