উপ-নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত গাইবান্ধা, কেন্দ্র থেকে চোখ রাখবে ইসি

১৪৫টি ভোট কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হবে; সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ চালানো হবে সব কেন্দ্রে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক গাইবান্ধা প্রতিনিধি,বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Oct 2022, 05:30 PM
Updated : 11 Oct 2022, 05:30 PM

ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে শূন্য হওয়া গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের উপ-নির্বাচনে ‘সুষ্ঠুভাবে’ ভোটগ্রহণের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

বুধবার এ নির্বাচনী এলাকার ১৪৫টি ভোট কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণের পাশাপাশি সব কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ চালানো হবে।

সেজন্য রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে স্থাপিত পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রেও সব প্রস্তুতি সারা হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল ও অন্য নির্বাচন কমিশনাররা মঙ্গলবার ওই পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে ঘুরের দেখেছেন।

সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে এ নির্বাচন পযবেক্ষণ করব। কোনো ধরনের অনিয়ম হচ্ছে কিনা, অবৈধ লোক ভোট কেন্দ্রের গোপন কক্ষে রয়েছে কিনা- তা ধরা পড়বে সিসি ক্যামেরায়। নির্বাচনকে সুষ্ঠু করার প্রয়াস থাকবে আমাদের। অনিয়ম ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া গত ২৩ জুলাই মারা গেলে তার সংসদীয় আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। উপ-নির্বাচনটি ‘ছোট হলেও’ নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ রাখতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান সিইসি।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, “নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা কীভাবে বাড়ানো যায় এবং স্বাধীনভাবে নাগরিকরা যাতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে করতে পারে, সেটা নিশ্চিত করাই আমাদের কাজ।”

ইসি কর্মকর্তারা জানান, ১৪৫টি ভোট কেন্দ্রে দুটি করে এবং প্রতিটি ভোটকক্ষে (ভোটদানের গোপন কক্ষের দৃশ্য ছাড়া) ৯৫২টি মিলিয়ে মোট ১ হাজার ২৪২টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা এসব কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলবে।

মঙ্গলবার সকাল থেকেই কেন্দ্রে কেন্দ্রে কঠোর নিরাপত্তায় ইভিএম মেশিন, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ও নির্বাচনী সামগ্রী পাঠানো হয়। এ আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ৩৯ হাজার ৯৮ জন।

গাইবান্ধার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, “অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সব প্রস্তুতি প্রশাসনের রয়েছে। নির্বাচনের দিন কয়েক প্লাটুন র‌্যাব এবং আনসার সদস্য ছাড়াও ১ হাজার ২৮৫ জন পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন।”

নির্বাচনী এলাকার দুই উপজেলা বর্তমানে ‘নিরাপত্তার চাদরে’ রয়েছে বলে জানান তিনি।

জেলা প্রশাসক মো. অলিউর রহমান বলেন, “দুই উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গাইবান্ধা-৫ আসন। নির্বাচনের দিন প্রতি ইউনিয়নে একজন করে মোট ১৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও দুইজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি কয়েক প্লাটুন বিজিবি এবং অস্ত্রধারী আনসার থাকবে।”

অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন সহকারী রির্টানিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আবদুল মোত্তালিবও।

তিনি বলেন, “এ আসনে ইভিএমে ১৪৫টি কেন্দ্রে ৯৫২টি বুথে ভোট নেওয়া হবে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ না থাকায় ৯টি কেন্দ্রে জেনারেটরের মাধ্যমে ইভিএম মেশিন চালানো হবে।”

নৌকা বনাম লাঙ্গল

গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের এই উপ-নির্বাচনে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামী লীগের মাহমুদ হাসান নৌকা প্রতীক নিয়ে, জাতীয় পার্টির (জাপা) এএইচএম গোলাম শহীদ লাঙ্গল মার্কা নিয়ে, বিকল্প ধারার জাহাঙ্গীর আলম কুলা প্রতীক নিয়ে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান আপেল, স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মাহবুবুর রহমান ট্রাক প্রতীক নিয়ে ভোট করছেন।

স্থানীয়রা বলছেন, এ নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মধ্যে।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহমুদ হাসান বলেন, “আশা করি, এই উপ-নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। নৌকা উন্নয়নের প্রতীক; এ প্রতীকে ভোট দিলে দেশের উন্নয়ন হয়। ভোটারররা নৌকায় ভোট দিতে ভুল করবেন না।”

জাতীয় পার্টির প্রার্থী গোলাম শহীদ বলেন, তিনি আশাবাদী, ভোটাররা তাকেই ‘বিজয়ী’ করবেন। এখন ভোটাররা সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট দিতে চান।

আরও খবর-

Also Read: গাইবান্ধা-৫ আসনে উপ-নির্বাচন: নৌকা ও লাঙ্গলে লড়াইয়ের আভাস

Also Read: ফজলে রাব্বীর আসনে উপ-নির্বাচন ১২ অক্টোবর

Also Read: উপ-নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত ফজলে রাব্বীর আসন

Also Read: আচরণবিধি লঙ্ঘন নিয়ে ইসির কঠোর বার্তা