মুক্তিযুদ্ধের ওপর যে আঘাতগুলো হয়েছে, সেগুলো পুনঃনির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে, স্পষ্টভাবে অন্তবর্তীকালীন সরকারের তরফ থেকে এই ঘোষণা চান প্রিন্স।
Published : 26 Mar 2025, 03:53 PM
জুলাই-অগাস্ট অভ্যুত্থানের সাত মাস পরে এসে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলছেন, ওই অভ্যুত্থানে নানা ‘উগ্র শক্তির’ আবির্ভাব ছিল।
বুধবার স্বাধীনতা দিবসে সাভার স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে নানা উগ্র শক্তির আবির্ভাব ছিল, তারা শুরুতেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, ইতিহাস, ঐতিহ্যের উপর আক্রমণ পরিচালনা করল। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী কোনো চক্রান্ত এবং ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না।”
মুক্তিযুদ্ধের ওপর যে আঘাতগুলো হয়েছে, সেগুলো পুনঃনির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে, স্পষ্টভাবে অন্তবর্তীকালীন সরকারের তরফ থেকে এই ঘোষণা চান প্রিন্স।
তিনি বলেন, “একই সাথে গণতন্ত্র এবং বৈষম্যমুক্ত সমাজ গড়ার যে আকাঙ্ক্ষা আছে সে প্রচেষ্টায় তারা ভূমিকা নেবে৷ তারা তো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সুতরাং তাদের কাছে বেশি কিছু প্রত্যাশা করে লাভ নেই।
“দ্রুত একটা নির্বাচন চাই, সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যারা ক্ষমতায় আসবে আমরা আশা করব মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার দিকে এগিয়ে যাবে।”
প্রিন্স বলেন, “নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার করা অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ হলেও সেই আলোচনায় না গিয়ে তারা সংবিধান নতুন করে লেখার আলোচনা করছেন। সংবিধান নতুন করে লেখার নামে ইতিমধ্যে সংস্কার কমিটি আমাদের সঙ্গে কথা না বলেই যে কথাগুলোকে সামনে এনেছে, আরেকটি অন্যতম বিষয় হল মুক্তিযুদ্ধের সাথে যেন কাউন্টার পুশ করতে চাচ্ছে।”
সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী রাষ্ট্রের মূলনীতি হবে পাঁচটি। সেগুলো হচ্ছে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ এবং গণতন্ত্র।
বর্তমান বাংলাদেশ সংবিধানে রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে ‘জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা’ রয়েছে।
আর বাংলাদেশের সাংবিধানিক নাম ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ পরিবর্তন করে ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
এ প্রসঙ্গ টেনে সিপিবি নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, “প্রকারান্তরে মুক্তিযুদ্ধকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। আমি মনে করি এ জায়গা থেকে তাদের সরে যাওয়া দরকার। মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যে কোনো আঘাত আসলে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াব।
“এটা মনে রাখতে হবে আমরা কিন্তু সাতচল্লিশকে নাকচ করে দিয়ে একাত্তরে বিজয় অর্জন করেছিলাম। কেউ যদি একাত্তরকে বাদ দিয়ে সাতচল্লিশকে পুনর্স্থাপন করে, চব্বিশ আনতে চায় আমার ধারণা তারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ স্বমহিমায়, স্বগৌরবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।”
ভালো নির্বাচন ব্যবস্থার জন্য সংস্কারে রুহিন হোসেন প্রিন্সের মত থাকলেও, অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়কে ‘কালক্ষেপণ’ বলছেন তিনি।
তিনি বলেন, “যে টিমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাদেরকে যদি বলত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে জানতে ভালো নির্বাচনের জন্য কী কী করা যাবে.... আমার ধারণা ইতোমধ্যে উত্থাপন করতে পারত। দুই মাসও সময় লাগত না।”