যেসব প্রতিষ্ঠান শেখ হাসিনার নামে রয়েছে, সেগুলোর নাম পরিবর্তনের কথাও বলা হয়েছে আবেদনে।
Published : 19 Aug 2024, 06:51 PM
কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতাকে ‘নির্বিচারে হত্যার’ অভিযোগে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ এবং দলটির নিবন্ধন বাতিল চেয়ে হাই কোর্টে একটি রিট আবেদন হয়েছে।
‘সারডা সোসাইটি’ নামের একটি মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষে নির্বাহী পরিচালক আরিফুর রহমান মুরাদ ভূঁইয়া সোমবার এ রিট আবেদন করেন।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ সর্বনিম্ন তিন বছর করা, ছাত্র-জনতাকে নির্বিচারে হত্যার দায়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিল, বিদেশে পাচার করা ১১ লাখ কোটি টাকা ফেরত আনার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিট আবেদনে।”
যেসব প্রতিষ্ঠান শেখ হাসিনার নামে রয়েছে, সেগুলোর নাম পরিবর্তনের কথাও বলা হয়েছে আবেদনে।
এছাড়া বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পিএসসির চেয়ারম্যানসহ সব ক্ষেত্রে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া সব কর্মকর্তা, চলমান প্রশাসনের সব বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি, ইউএনওসহ বাংলাদেশ পুলিশের সব বিভাগীয় কমিশনার, এসপি ও ওসিদের বদলি করে বিচার বিভাগীয় নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের জনবিভাগের সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, আইন সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিব, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বিএফআইইউ প্রধান এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়কদের বিবাদী করা হয়েছে মামলায়।
বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মুহম্মদ মাহবুব-উল ইসলামের বেঞ্চে এ আবেদনের শুনানি হবে জানিয়ে আরিফুর রহমান বলেন, “আদালত বলেছেন, আগামী কাল শুনানি হবে।”
ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান।
সেদিনই আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়, নেতাকর্মীদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট অগ্নি সংযোগ শুরু হয়। দলটির নেতাকর্মীদের অধিকাংশই এখন আত্মগোপনে রয়েছেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতে ক্ষমতায় এসেছিল। কিন্তু তাদের অধীনে পরের তিনটি নির্বাচনই প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
এই ১৫ বছরে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিয়ে অনেক কথা বলা হলেও সর্বগ্রাসী দুর্নীতি, ব্যাংক খাতে লুটপাট, দুই অংক ছুঁই ছুঁই মূল্যস্ফীতি, রাজনৈতিক দমন-পীড়ন, মত প্রকাশের অধিকার ও বাক স্বাধীনতা হরণ এবং রাষ্ট্রের সবক্ষেত্রে দলীয়করণের বিস্তর অভিযোগে নাগরিকদের বিভিন্ন অংশের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়, যার প্রকাশ ঘটে সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনে।