“নেতারা তো অনেকেই পালিয়ে আছেন, অনেকে প্রকাশ্যে আসেন না। এখন আপনাদের সাহসের উৎস কোথায়, কে সাহায্য করবে?”
Published : 05 Feb 2024, 02:59 PM
বিদেশিরা বিএনপিকে ছেড়ে চলে গেছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সোমবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “দেশের জনগণও বিএনপি সাথে নেই, বিদেশি বন্ধুরা তাদের ছেড়ে এখন চলে গেছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লম্বা চিঠি পাঠিয়েছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করার জন্য। অর্থনৈতিক উন্নয়নের ব্যাপারে বিশেষভাবে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। পিটার হাস মার্কিন নীতি কৌশলের প্রতিধ্বনিই করছেন।”
সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিএনপির প্রতি প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, “এখন আপনারা কি বলবেন? কে আপনাদের ক্ষমতায় বসানোর জন্য আসবে? আমাদের হটাতে আসবে যাদের আশায় ছিলেন তারা তো এখন একসাথেই কাজ করার জন্য এসেছেন। নেতারা তো অনেকেই পালিয়ে আছেন, অনেকে প্রকাশ্যে আসেন না। এখন আপনাদের সাহসের উৎস কোথায়, কে সাহায্য করবে?”
বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া আবারও রাজনীতি করতে পারবে কিনা এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “খালেদা জিয়া রাজনীতি করবেন কিনা, এটা বিএনপির নেতাদের প্রশ্ন করাটা ভালো। এটা তাদের সিদ্ধান্তের ব্যাপার।
সংসদে বিএনপিকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে, এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, “দেখুন আমি একটা কথা বলি, সংসদে সবাই কথা বলতে পারেন। সদস্যদের নানা মতামত থাকতে পারে। কিন্তু মতামতটাই সিদ্ধান্ত এমনটা মনে করার এখনো কোনো কারণ নেই। আমরা এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত দলীয়ভাবেও চিন্তা করিনি।”
মিয়ানমার প্রসঙ্গ
মিয়ানমারে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের যুদ্ধের মধ্যে সেখান থেকে ছুটে আসা গুলি ও মর্টার শেলের আঘাতে বাংলাদেশে হতাহতের বিষয়ে প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, “যা ঘটছে তা তো আমরা জানি। এটা আমাদের মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিষয়। তিনি একটা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন, সেটাই আমাদের দলের প্রতিক্রিয়া। আমাদের দুই-তিনটা গ্রামের জনগণ বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাচ্ছেন, আমাদের জন্য এটা উদ্বেগের। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব ব্যাপারে নিশ্চয়ই মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ করবে।
বাংলাদেশ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানে আগ্রহী জানিয়ে তিনি বলেন, “এটা তাদের নিজেদের বিষয়। আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সেনাবাহিনীর যুদ্ধ। আমরা আহ্বান করব, পার্শ্ববর্তী দেশের জন্য আতংকের কারণ হয় এমন কনফ্লিক্টের সমাধান তাদের নিজেদেরই করা উচিত। এ ব্যাপারে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একটা সমাধান হতে পারে।”
বর্তমান পরিস্থিতিতে আবারও যদি রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে চায় সেক্ষেত্রে সরকারের নীতি কী হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইতোমধ্যে বলেছেন, আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও বলেছে যে, ব্যাপারটা আমরা এফোর্ট করতে পারব না। এমনিতেই একটা বোঝা, তারপর আরেক বোঝা, এটা আর সম্ভব নয়।”
জাহাঙ্গীরনগরে ধর্ষণকাণ্ড প্রসঙ্গ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বামীকে আটকে রেখে এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আমরা খারাপ কাজটা প্রশ্রয় দেই না। এ পর্যন্ত অনেক দৃষ্টান্ত আছে, এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর যারা খারাপ কাজ করেছে, যারা অপরাধ করেছে, তারা কেউই পার পেয়ে যায়নি।
আবরার হত্যার বিচার হয়েছে, বিশ্বজিৎ হত্যায়ও কাউকে বিচারহীন অবস্থায়... ইম্পিউনিটি যে কালচার, সেটা আমরা গড়তে দেইনি, এটা সবার জানা আছে। এখন কথা হলো একটা দলে ভালোর সাথে খারাপ লোকও থাকতে পারে, খারাপ কাজও করতে পারে, কিন্তু দল সেটাকে কিভাবে নিচ্ছে? দল কি সেই অপরাধকে প্রশ্রয় দিচ্ছে? দল কি সেই অপরাধের ব্যাপারে উদাসীন? আমরা তা নই। আবারও আমি সেটা দৃঢ়ভাবে উচ্চারণ করতে চাই।”
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।