বেইলি রোডের মত নগরীর বহুতল ভবনে আগুনে মৃত্যুর ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, “মানুষের জীবনের মতো তুচ্ছ আর কিছু নাই অন্তত সরকারের কাছে।”
Published : 02 Mar 2024, 10:37 PM
গুটিকয়েক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কাছে দেশের বাজার ব্যবস্থা জিম্মি বলে অভিযোগ করেছেন মাহমুদুর রহমান মান্না।
শনিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ব্যাংক লোপাট ও অর্থপাচার’ শীর্ষক এক প্রতিবাদ সমাবেশে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার পেছনের কারণ হিসেবে এমন অভিযোগ করেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি।
তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দেশে সিন্ডিকেটের কারণে জিনিসের দাম কমে না। আমাদের দেশে দেশে সিন্ডিকেট ক‘জন? সাতজন বা আটজন-এই সাতজন বা আটজন দেশের প্রায় সমস্ত ইম্পোর্ট নিয়ন্ত্রণ করে। এই সাতজন-আটজনের এদের পরিচয় জানেন।
“একেক করে আমি নাম বলব না, কিন্তু অনেকেরই নাম আপনারা জানেন।“
তার অভিযোগ, “এদের সকলের সম্পর্ক আওয়ামী লীগের সাথে, আওয়ামী লীগ তাদের মদদ দেয়। ওরা বাংলাদেশ থেকে এক বিলিয়ন ডলার সিঙ্গাপুর পাঠায় চুরি করে। দুদক বলে তদন্ত কর, আদালত বলে তদন্ত বাতিল। পরশুর আগের দিন এফবিসিসিআই মিটিংয়ে বসেছিল।
“মিটিংয়ের মধ্যে তারা বলেছেন, জিনিসপত্রের দাম বাড়ে তিনটা কারণে। এক নম্বর সিন্ডিকেট ওরা ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়ে দেয়। দুই নম্বর ব্যাংক ব্যবস্থা, ডলার পাওয়া যায় না। লুটেরা, ব্যাংক ডাকাত, ভোটের ডাকাত তাদেরকে সরকার মদদ দেয়, তাদেরকে প্রশ্রয় দেয়। পুরো বাজার ব্যবস্থা ওদেরকে কাছে জিম্মি।”
নাগরিক অধিকার আন্দোলন নামের একটি সংগঠন আয়োজিত সমাবেশে মান্না অভিযোগ করে বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের দাম কমবে কীভাবে? ৭/৮ জন আমাদের দেশের সমস্ত ইম্পোর্ট নিয়ন্ত্রণ করে কীভাবে? ৭ জন থেকে ৭০ জন করতে পারবে না। তাহলে তো একচেটিয়া থাকত, তাহলে এভাবে জিম্মি করতে পারতো না। কিন্তু এরা সেটা করবে না।
‘‘কারণ এদের দরকার আছে সামিট গ্রুপকে, এদের দরকার এস আলমের মতো মানুষকে, এদের দরকার দরবেশের মতো মানুষকে…এদের সরকার সেই সমস্ত কোম্পানিকে যারা ক্যাপাসিটি ট্যাক্সের নামে লক্ষ কোটি টাকা বিদ্যুৎ দেবার নাম করে নিয়ে চলে গেছে।“
এ অবস্থা থেকে উত্তরণে জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে আবারও আন্দোলন করবে- এমন আশা রেখে তিনি বলেন, ‘‘আমরা পরিবর্তনের জন্য কাজ করছি। আমরা মনে করি, সেদিন সমাগত, আসছে সামনে মানুষ নিজেরা তাদের বাঁচার তাগিদে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার তাগিদে, ভোট এবং ভাতের দাবিতে গণতন্ত্রের দাবিতে রাজপথে নামবে এবং সেই লড়াই হবে চূড়ান্ত। আমরা কেউ আশা হারাচ্ছি না।”
বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে মান্না বলেন, ‘‘উনার বক্তব্যে নির্দয় নিষ্ঠুর রসিকতার মতো মনে হয়েছে আমার কাছে। উনি বলেছেন, ‘ওরা কথা শুনেনি, মানে নাই।‘…কথার মানে কী তাই দাঁড়ায় না।
‘‘আচ্ছা এই ঘটনায় কোনো মামলা হতে পারে। আমি পত্রিকায় বিবৃতি দেখলাম। নগর পরিকল্পনাবিদ অন্যান্য মানুষ যারা সমাজ নিয়ে ভাবেন তারা বলছেন, এটা একটা হত্যাকাণ্ড। এরকম করে নিমতলীর সময়ে বলা হয়েছিল, এটা এফআর টাওয়ারের সময়ে বলা হয়েছিল। আমাদের দেশে মানুষের জীবনের মতো তুচ্ছ আর কিছু নাই অন্তত সরকারের কাছে।”
নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের সমাবেশে জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, বিএনপির আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, বিলকিস ইসলাম, তাঁতী দলের কাজী মনিরুজ্জামান মুনির, কৃষক দলের শাহ আবদুল্লাহ আল বাকী, মৎস্যজীবী দলের ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।