“সম্ভবত লোকাল গভর্নমেন্টে অ্যাডভাইজার সাহেব বলেছেন যে, ‘চার বছর সরকারের মেয়াদ’, এটা তার বলা কথা নয়”, বলেন তিনি।
Published : 31 Oct 2024, 09:37 PM
অন্তর্বর্তী সরকারের কতদিন ক্ষমতায় থাকবে, এই প্রশ্নে একজন উপদেষ্টার বক্তব্যে ‘খটকা’ লাগার কথা জানিয়ে দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীতে এক আলোচনায় তিনি এই আহ্বান জানান। বলেছেন, নির্বাচিত সরকার ছাড়া জনগণকে ‘ব্যবহার’ করা সম্ভব নয়।
ফখরুল বলেন, “(উপদেষ্টারা) কখন কী বলেন, ওই খানেই আমাদের খটকা লাগে। আমি আশা কবর যে, উপদেষ্টারা এমন কোনো কথা বলবেন না বা এমন কোনো কাজ করবেন না যাতে জনগণ বিভ্রান্ত হয়।
“আমাদের সম্ভবত লোকাল গভর্নমেন্টে অ্যাডভাইজার সাহেব (এ এফ হাসান আরিফ) বলেছেন যে, ‘চার বছর সরকারের মেয়াদ।’
“এটা তার বলা কথা নয়। তারা কমিশন গঠন করেছেন সেই কমিশন প্রস্তাব দেবেন, তারপরে না ঠিক হবে। কিন্তু যিনি ক্ষমতায় বসে আছেন তিনি যদি বলেন যে, ‘সরকারের মেয়াদ চার বছর হবে’ তাহলে একটা চাপ পড়ে যায়।… অনুরোধ করব, এমন কথাবার্তা না বলা যেটাতে জনগণ বিভ্রান্ত হয়।”
গত ৮ অগাস্ট সংবিধান মেনে চলার অঙ্গীকার করে শপথ নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকার কত দিন ক্ষমতায় থাকবে, কবে নির্বাচন দেবে, এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য দিচ্ছে না।
সংবিধান অনুযায়ী সংসদ ভেঙে যাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন হতে হবে। দৈব দুর্বিপাকে সেটি করা না হলে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে।
কেন নির্বাচন জরুরি?
এই বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বিএনপি নেতা বলেন, “দ্রুত নির্বাচন চাই এজন্য যে, নির্বাচিত সরকার ছাড়া জনগণকে আর কেউ ‘ব্যবহার’ করতে পারবে না।
“দ্বিতীয়ত, আমাদের এই ‘শত্রুরা’ যারা চেষ্টা করছে আমাদের সমস্ত কিছু ‘দখল’ করে ফেলা এবং ‘বিপ্লব’কে ব্যর্থতায় পরিণত করতে, তারা সুযোগ পেয়ে যায় এবং পাচ্ছে।”
বিভিন্ন মহলের নানা দাবি-দাওয়া নিয়ে নামার কথা তুলে ধরে বিএনপি নেতা বলেন, “কেন বাবা, আগে কেউ করনি, এখন নিয়ে আসছ! অপেক্ষা কর, জনগণের সরকার আসুক।
“এসব বিষয়গুলো বোঝা উচিত। অনেকে বলে যে, ‘এতদিন পারিনি তাই এখন দাবিগুলো নিয়ে আনছি’, কিন্তু এটাতে দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়।”
‘একটি সম্প্রদায়ের আন্দোলনের চেষ্টা‘
বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাসী মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, “আমরা লক্ষ্য করছি, এটা বলতে বাধ্য হচ্ছি, ইদানীং দেখছি আমরা একটা সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে… একটা বড় রকমের আন্দোলন সৃষ্টি করার চেষ্টা চলছে। সেটা কেন জানি না, ভারতের যে বক্তব্য বাংলাদেশের বিপদ সম্পর্কে, তার সঙ্গে মিলে যায়।”
ছাত্র-জনতার রক্ত দিয়ে ‘বিপ্লবের’ অর্জনকে অনেকাংশে বিপন্ন করার চেষ্টা চলছে বলে সতর্ক করে তিনি বলেন, “আমাকে বিদেশের সাংবাদিকরা টেলিফোন করেন, বিশেষ করে ভারতের সাংবাদিকরা বলতে চান যে, ‘ড. ইউনুস কি রাষ্ট্র চালাতে পারছেন না?’
“আমি তাদেরকে বলি, ‘প্রশ্নই উঠতে পারে না। গোটা দেশের মানুষ তার উপর আস্থাশীল। তিনি সুন্দরভাবে দেশ চালাচ্ছেন। যাকে মানুষ সমর্থন দেয় সেখানে কোনো কিছু থাকতে পারে না’।”
“এই কথা বলতে আমি বাধ্য হলাম”, বলেন ফখরুল।
জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রবের সভাপতিত্বে আলোচনায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জেএসডির তানিয়া রব, শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনও বক্তব্য রাখেন।