বিএনপির সঙ্গে আবার জোটের প্রশ্নে শফিকুর রহমান বলেন, “দেশ ও জাতির স্বার্থ বিবেচনায় রাজনৈতিক দলগুলো কোনো উত্তম সিদ্ধান্ত যে কোনো সময় নিতেই পারে।”
Published : 17 Apr 2025, 06:46 PM
এক সময়ের জোটসঙ্গী বিএনপির সঙ্গে এখন নানা বিষয়ে মতপার্থক্য থাকলেও, নেতাদের মধ্যে কখনো কখনো বাগযুদ্ধ চললেও বিষয়টিকে ‘বিরোধ’ বলতে রাজি নন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান।
তিনি বলেছেন, “রাজনীতিতে দুই দলের বিরোধ… যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গত নির্বাচনের দিকে তাকান, তাহলে এটা (বিএনপি-জামায়াত) কোনো বিরোধই না। সেখানে বাগযুদ্ধ তো হয়েছে আরও প্রচণ্ড।
“কিন্তু ইলেকশন হয়ে যাওয়ার পরে হ্যান্ডশেক। একদল চলে গেছে সরকারে, আরেক দল বসে গেছে বিরোধী দলে। এখন তারা মিলে-মিশে দেশ চালাবে এটাই স্বাভাবিক।”
ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি দেশ সফরের অভিজ্ঞতা জানাতে বৃহস্পতিবার গুলশানে হোটেল ওয়েস্টিনে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন জামায়াতের আমির। এই সফরে লন্ডনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গেও তিনি সাক্ষাৎ করেছেন, যা নিয়ে দেশের রাজনীরিত অঙ্গনে চলছে নানা আলোচনা।
শফিকুর রহমান বলেছেন, খালেদা জিয়ার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে রাজনীতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তবে কী আলোচনা হয়েছে, তা তিনি খোলাসা করেননি।
আগামী নির্বাচনে জামায়াত আবার বিএনপির সঙ্গে জোট বাঁধবে কি না, সে প্রশ্নও করা হয়েছিল সংবাদ সম্মেলনে। তবে ডা. শফিকুর রহমান উত্তর দিয়েছেন কূটনীতির ভাষায়। বলেছেন, ‘দেশের প্রয়োজনে’ অনেক কিছুই হতে পারে।
কী কথা খালেদার সাথে?
জামায়াতের আামির শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের গত ১৩ এপ্রিল লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় যান। গত সাড়ে তিন মাস ধরে সেখানেই আছেন তারেকের মা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
সেই সাক্ষাতের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে জামায়াতের আমির বলেন, “আমাদেরকে অতি ভালোবাসা ও সম্মানের সঙ্গে গ্রহণ করেছেন। আমাদের মূল উদ্দেশ্যই ছিল উনাকে (খালেদা জিয়া) দেখা। কিন্তু যেহেতু উনি অবস্থান করছেন তার বড় সন্তান দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের (তারেক রহমান) বাসায়, সেই কারণে তিনিও থাকবেন, এটা স্বাভাবিক… তিনি ছিলেন।”
ওই বৈঠকে যে রাজনীতির আলাপও হয়েছে, সে কথা স্বীকার করে শফিকুর রহমান বলেন, “দুইজন বাংলাদেশি মানুষ চা খাইতে গেলে একজনের সাথে আরেকজনের কোনো পরিচয় নাই শুরু করে দেয় আমাদের রাজনীতির কথা। আর আমরা দুই দলের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ এক জায়গায় বসব আর রাজনীতির কোনো কথা হবে না এটা কি বাস্তব? এটা বাস্তব না… কথা তো হয়েছে।
“তবে আমরা কোনো সুনির্দিষ্ট বিষয়ে কথা বলেনি। কখন নির্বাচন হবে, কীভাবে নির্বাচন হবে, (আওয়ামী লীগের) বিচার প্রক্রিয়া কীভাবে হবে না হবে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরা সাধারণ আলোচনা করেছি। ওইটা ডিসাইসিভ কোনো ডিসকাশন ছিল না।”
বিএনপির সঙ্গে বিরোধ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জামায়াতের আমির বলেন, “রাজনীতিতে আমরা চাই মতপার্থক্য থাকুক। না থাকলে রাজনীতিবিদরা অন্ধ হয়ে যাবে। বন্ধ চোখ খুলে দেওয়ার জন্য প্রয়োজন মতপার্থক্য। কিন্তু এও আমরা প্রত্যাশা করি যে, এটা যেন মতবিরোধে রূপ না নেয়, ওটা পার্থক্য পর্যন্ত থাকুক।
“দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের রাজনীতিবিদরা অনেক সময়ে বিষয়গুলো খেয়াল করেন না বা করি না। এটা করতে হবে, যদি আমরা দেশকে ভালোবাসি, তাহলে এই ভালবাসা-শ্রদ্ধার জায়গায়, মিউচুয়াল রেসপেক্টের জায়গায় আমাদের আসতে হবে। আমার ওপিনিয়ন আমি দেব, কিন্তু এটা বলতে পারব না যে এটাই করতে হবে। আমি ওপিনিয়ন দিয়ে বলব যে, আমি মনে করি এটা করলে আমার দেশ ও জাতির উপকার হবে। আর ‘এটা আমি করতে দেব না’–যে যাই চাক, এটা রাজনীতি ও গণতন্ত্রের ভাষা না।”
বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে জামায়াত আমিরের এটাই ছিল প্রথম সাক্ষাৎ। আর এই দেখা করার কারণও সংবাদ সম্মেলনে ব্যাখ্যা করেন শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, “আমাদের ভিজিটের মেইন পারপাসটা ছিল একজন সম্মানিত অসুস্থ সহকর্মীকে দেখা; এটা আমাদের একটা নৈতিক দায়িত্বের পর্যায়ে পড়ে। আমরা শুধু এটাই পালন করেছি, এর বেশি কিছু না।“
আবার জোট?
আগামী নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোটবদ্ধ হবে কিনা, সেই প্রশ্ন সংবাদ সম্মেলনে রাখেন একজন সাংবাদিক।
জবাবে শফিকুর রহমান বলেন, “দেশ ও জাতির স্বার্থ বিবেচনায় রাজনৈতিক দলগুলো কোনো উত্তম সিদ্ধান্ত যে কোনো সময় নিতেই পারে।
“কিন্তু ইতোমধ্যে কোনো কোনো দলের পক্ষে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে, ‘আমরা কোনো রাজনৈতিক জোট করব না।’ আমরা এখানেই আপাতত থাকি; আর অপেক্ষা করতে থাকি।”
বিএনপি ও জামায়াতের বন্ধুত্বের ইতিহাস অনেক পুরনো। স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগের সময়ে নিষিদ্ধ হওয়া জামায়াত বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ পায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সময়ে।
১৯৯১ সালে জামায়াতের সমর্থনে বিএনপি সরকার গঠনের মত যথেষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করে। এরপর ১৯৯৯ সালে দল দুটি জোট গঠন করে।
২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোটের জয়ের পর খালেদা জিয়ার সরকারে মন্ত্রিত্ব পান তখনকার জামায়াতের দুই শীর্ষ নেতা মতিউর রহমানী নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ।
প্রায় দুই যুগ টিকিয়ে রাখা জোট ভেঙে দেওয়া হয় ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। সে সময় বিএনপি সরকারবিরোধী বৃহত্তর ঐক্য গড়তে যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেয়।
আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে জামায়াত ও বিএনপি দুই দলই বেকায়দায় ছিল। গতবছর অগাস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে বিএনপি ও জামায়াতের ফের ‘মুক্তভাবে’ রাজনীতি করার সুযোগ হয়।
আওয়ামী লীগ সরকার তো তাদের শেষ সময়ে জামায়াতকে নিষিদ্ধই করেছিল। ক্ষমতার পালাবদলে মাত্র এক মাসের মধ্যে সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যায়।
তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই সময়ে জামায়াত ও বিএনপির মধ্যে সম্পর্ক খুব একটা ভালো যাচ্ছিল না। নির্বাচনের সময় ও পদ্ধতি, সংস্কারসহ বিভিন্ন প্রশ্নে মতপার্থক্য দুই দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যে বাগযুদ্ধেরও কারণ ঘটায়।
তবে খালেদা জিয়ার সঙ্গে শফিকুর রহমানের সাক্ষাতের পর রাজনীতির অঙ্গনে প্রশ্ন উঠেছে– দুই দল কি তাহলে দূরত্ব ঘোচানোর প্রক্রিয়ায় আছে?
‘ম্যাডাম একটু ভালো আছেন’
চিকিৎসার জন্য লন্ডনে অবস্থানরত খালেদা জিয়া এখন কেমন আছেন, সেই প্রশ্ন শফিকুর রহমানের কাছে রেখেছিলেন সাংবাদিকরা।
উত্তরে তিনি বলেন, “ম্যাডামের ব্যাপারে অনুধাবন করেছি যে, তিনি মানসকিভাবে একটু ভালো আছেন। কারণ দীর্ঘদিন পরে তিনি আপনজনকে পাশে পেয়েছেন, তাদের সঙ্গে থাকতে পারছেন।”
খালেদা জিয়া কবে দেশে ফিরবেন, সেই আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে জামায়াত আমির বলেন, “না, এটা নিয়ে আলোচনা হয়নি। তিনি প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আগামী মাসে হতে পারে, আমরা অনুমান করেছি। সুনির্দিষ্ট কিছু উনি বলেননি।
“আর তারেক সাহেবের পক্ষ থেকে ওরকম কিছু আসেনি… কবে আসতে পারেন তিনি দেশে… সেই আলোচনা আমরাও তুলিনি, উনিও কিছু বলেননি। তিনি তার দেশে আসবেন অসুবিধা কি? অসুবিধা তো নাই। এই দেশ তো তার, আমার-আপনার- সবার।”
আওয়ামী লীগের বিচার
বিএনপি যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন চাইলেও জামায়াতে ইসলামী আগে সংস্কার এবং আওয়ামী লীগের বিচারে গুরুত্ব দিচ্ছে।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নে শফিকুর রহমান বলেন, “আমরা বলেছি যে, কিছু বিচার হতে হবে দৃশ্যমান, যাতে জাতির মনে আস্থা তৈরি হয় বিচারের এই ধারাটা অব্যাহত থাকবে। আপনি (প্রশ্নকর্তা) বলেছেন যে, পরিবর্তী সরকার (বিচার চালিয়ে নেবে কি না) এই ব্যাপারে সন্দেহ আছে কিনা। আমরা আস্থা রাখতে চাই এবং আমরা মনে করি যে, সরকারে যারা আসবে, তারা জনগণের সমর্থন নিয়ে আসবে। জনগণের পালস বুঝে আসবে এবং জনগণও তাদের গ্রহণ করবে।
“আমরা বিচারকে বাধ্য করে দিতে পারি না। আমরা বলে দিতে পারি না যে, অত তারিখের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করতে হবে। তাহলে এটা হবে বিচারের ওপর নির্লজ্জ হস্তক্ষেপ, অহেতুক হস্তক্ষেপ। এই অধিকার আমাদের নেই। কিন্তু আমরা দাবি করতে পারি, আমরা মজলুম জনগণ হিসেবে দাবি করতে পারি, দাবির জায়গা আমাদের খোলা। এই দাবি সবাই করে, সকল যুগে হয়েছে। এই দাবি (ফ্যাসিস্টদের বিচার) আমাদেরও থাকবে।”
নির্বাচন প্রসঙ্গ
এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুর রহমান বলেন, “আপনি জানতে চেয়েছেন ইউরোপীয়ন ইউনিয়নের সাথে অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা। অবশ্যই হয়েছে।আপনি বলেছেন, আওয়ামী লীগের ব্যাপারে তারা জানতে চেয়েছে কিনা। হ্যাঁ জানতে চেয়েছে। সবাই চায়নি, দুই-একটা জায়গায় তারা চেয়েছে।
“আমরা তাদেরকে বলেছি, আমাদের দেশে এই কেবলমাত্র একটা গণহত্যা হয়ে গেছে, শহীদের মা-শিশুরা এখনো কান্নাকাটি করছে, স্ত্রীরা কান্না-কাটি করছে। আহতরা কেউ কেউ এখনো হাসপাতালের বেডে আছে। আমরা জাতি হিসেবে তাদেরকে আমাদের যে করণীয়, এটাও পুরোপুরি করে উঠতে পারিনি। গোটা জাতি ট্রমাটাইজড। কারণ জুলাই-অগাস্ট ওই সময়টাতে সরকার কার্য্ত গোটা জাতির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। এই আন্দোলন কোনো একক দলের বা পক্ষের ছিল না। এটা ছিল জনতার আন্দোলন।”
আওয়ামী লীগ তিনটা নির্বাচনের সুযোগ পেয়েছিল এবং তারা নির্বাচনের ‘জান কবজ করেছে’ মন্তব্য করে জামায়াত আমির বলেন, “সেই রকম একটা দলকে দেশের জনগণ গ্রহণ করবে কিনা তা দেখতে হবে। এটা বলার পর তারা (ইউরোপীয় ইউনিয়ন) আর কিছু বলেনি।”
বুধবার এক অনুষ্ঠানে শফিকুর রহমান বলেছিলেন, আগামী রোজার আগেই নির্বাচন হয়ে যাওয়া ভালো বলে তিনি মনে করেন, কেননা তা না হলে পরে বর্ষাকাল, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্য কারণে নির্বাচন ঝুলে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে।
আগামী রোজা শুরু হবে ২০২৬ সালের মধ্য ফেব্রুয়ারিতে। সে কারণে জামায়াত এখন ফেব্রুয়ারির মধ্যেই নির্বাচন চাইছে বলে খবর প্রকাশিত হয় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে। তবে এক দিন বাদে এ বিষয়ে ভিন্ন কথা বলেন জামায়াত আমির।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আমি বলি নাই যে, ফেব্রুয়ারির ভেতরে নির্বাচন হতে হবে। আমি অনেকগুলো কারণে সেখানে বলেছি যে, কেন এই ফেব্রুয়ারিকে চয়েজ করা যায়। এরপরে এটা কোরানের আয়াত নয়। বাস্তবের প্রয়োজনে একটু আগাইতে পারে, একটু পিছাইতে পারে।
“এর আগেই যদি জাতির প্রত্যাশা পূরণ করে ইলেকশন হয়, তাতে আমার আপত্তি থাকবে কেন? আমার তো আপত্তি থাকার কথা না। আবার যদি আরেকটু সময়ের প্রয়োজন হয়… আমরা সাড়ে ১৫ বছর/১৬ বছর অপেক্ষা করতে পেরেছি, আরও এক-দুই মাস অপেক্ষা করতে পারব। ইনশাল্লাহ দেশটা তো আমাদেরই, ভালোর জন্যই এটা করব।”
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত বুধবার বলেছেন, এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে, তা না হলে দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক পরিস্থিতি আরো ‘খারাপের দিকে’ যাবে বলে তারা মনে করছেন।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শফিকুর রহমান বলেন, “আমরা এরকম কিছু প্রেডিক্ট করতে চাই না। বরং আমরা ভালোটাই প্রত্যাশা করি। আমরা আশা করব, সরকারে যারা আছেন তারাও তো এদেশের মানুষ। যদিও তাদের কেউ কেউ মাঝে-মধ্যে কথা বলে সমাজে কিছু অস্থিরতা তৈরি করে ফেলেন… তাদেরও ওই ব্যাপারে আরও সর্তক হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি এবং জনগণের দেওয়া দায়িত্ব তারা পালনের সময় যেন নিজেদের আমানতদারির জায়গাটা খেয়াল রাখেন, এটা আমরা আশা করি।
“আমরা ধারণা করি, প্রধান উপদেষ্টা তার কথার মর্যাদা রক্ষা করবেন এবং যেভাবে মির্জা (মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর) সাহেব বলেছেন যে, ‘কাট অফ টাইম’, আমরা ওরকম কথা বলতে চাচ্ছি না। কারণ এটা ওইরকম ফিক্সড করে দিলে এটা ‘পয়েন্ট অব নো রিটার্নের’ মতো হয়ে যায়। মিনিমাম ফ্লেক্সিবিলিটি তো থাকতে হবে।”
শফিকুর রহমান বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন যে, ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। আমরা এই সময়টাকে প্রস্তুতির জন্য, সংস্কারের জন্য, বিচারের জন্য আমরা মনে করি যে, এই সময়টা গ্রহণযোগ্য । কিন্তু এই সময়ের সীমা যেন অতিক্রম করে না যায়, সেই ব্যাপারে আমরা সর্তক দৃষ্টি রাখব।”
এনসিপি ও নিবন্ধন
অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতাদের সামনে রেখে গঠিত নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুর রহমান বলেন, “এই পার্টিটা এখনো কিন্তু পুরোপুরি ফর্ম করেনি। তারা ফর্মেশনে আসতে যাচ্ছে। এই অবস্থায় এখন তাদের সম্পর্কে কোনো কিছু বলা আমার পক্ষে সম্ভব না।
“আমরা দেখতে চাই তারা কীভাবে আসে? আসার পরে সব কিছু বিবেচনা করে অবশ্যই আমাদের কর্তব্য নির্ধারণ করব।”
আওয়ামী লীগের সময় আদালতের রায়ে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাওয়ায় গত কয়েকটি নির্বাচনে দলীয়ভাবে অংশ নেওয়ার সুযোগ ছিল না জামায়াতের।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নে শফিকুর রহমান বলেন, “নিবন্ধন কেন পাব না? নিবন্ধন তো অন্যায়ভাবে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ইনশাল্লাহ আমাদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার ফিরে পাব। আমরা পাব ইনশাল্লাহ।”
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
অন্যদের মধ্যে জামায়াতের নায়েবে আমির মজিবুর রহমান, আনম শামসুল ইসলাম, সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম মাছুম, রফিকুল ইসলাম খান, আবদুল হালিম, হামিদুর রহমান আজাদ, উত্তরের মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন দক্ষিণের রফিকুল ইসলাম বুলবুল উপস্থিত ছিলেন সংবাদ সম্মেলনে।