বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও সমমনাদের ডাকা তৃতীয় দফা অবরোধেও বেশ কিছু গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস জানাচ্ছে, বুধবার ভোর থেকে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পর্যন্ত ১৬টি যানবাহনে আগুন দেওয়ার খবর জেনেছেন তারা। এর মধ্যে রাজধানীতে আগুন দেওয়া হয় আটটি বাসে।
বৃহস্পতিবার ৪৮ ঘণ্টা অবরোধের দ্বিতীয় দিন দুপরের পর থেকেই সড়কে গাড়ির চাপ বেড়ে যায়। বিকালের পর রাজধানীতে যানজটও তৈরি হয়।
সড়কে ভিড়ের মধ্যেই দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে রাইদা পরিবহনের বাসে আগুন দেওয়া হয় বাড্ডা এলাকায়।
সন্ধ্যা ৭ টা ১০ মিনিটে মাতুয়াইল মাদ্রাসা বাজার রোডে আসিয়ান পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বুত্তরা। পোস্তগোলা ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট সেই আগুন নেভায়।
ফায়ার সার্ভিসের কেন্দ্রীয় মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসীম জানান, রাত ১১টার পর মিরপুর দিয়াবাড়ী এলাকায় রাস্তার পাশে পার্ক করে রাখা ট্রান্স সিলভা পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। কল্যাণপুর ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট গিয়ে ওই আগুন নেভায়।
এসব ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে গত ২৮ অক্টোবর ঢাকার নয়া পল্টনে জমায়েতের অদূরে কাকরাইল ও বিজয়নগর এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীেদর সংঘর্ষের পর থেকে হরতাল-অবরোধের বৃত্তে ফেরে বাংলাদেশ।
২৯ অক্টোবর হরতালের পর ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত অবরোধ ডাকে বিএনপি। পরে জামায়াত ও সমমনা দলগুলোও একই কর্মসূচি দেয়।
এরপর শুক্র ও শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি শেষে ডাকা হয় ৪৮ ঘণ্টার হরতাল। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের ঘটনাবহুল দিনটিতে বিরতি দিয়ে ফের অবরোধ ডাকা হয় বুধবার ভোর থেকে।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার তৃতীয় মাসের সেই দিনটিতে নানা ঘটনার পর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কেন্দ্রে চলে আসেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। এই দিনটিকে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে পালন করে বিএনপি। তবে এবার কোনো কর্মসূচি রাখা হয়নি।
তালহা বিন জসীম জানান, ২৮ অক্টোবর থেকে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ১১০টি আগুনের সংবাদ পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
ঢাকা মহানগর পুলিশ জানিয়েছে, নতুন-পুরনো নাশকতার মামলায় ২৮ অক্টোবর থেকে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত ১২ দিনে ঢাকায় ১ হাজার ৭৩৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সর্বশেষ ৮ নভেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪১ জনকে।
শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি শেষে আগামী রোববার ভোর থেকে আবার ৪৮ ঘণ্টা হরতালের ডাক দেওয়া হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলতেই থাকবে। তবে তত্ত্বাবধায়কের দাবি নাকচ করে সরকার সংবিধানের বিধান অনুযায়ী ভোট করতে অনড়।