“কিন্তু তার কাছে প্রস্তাবটা কে দিয়েছে? এক সাদা চামড়া বললে তো হবে না”, বলেন তিনি
Published : 25 May 2024, 04:05 PM
মিয়ানমারের রাখাইন ও পার্বত্য চট্টগ্রামের একাংশ নিয়ে খ্রিষ্টান দেশ গড়ার চেষ্টার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বক্তব্য রেখেছেন, সে বক্তব্যকে ‘কাহিনী’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
কোন সাদা চামড়ার মানুষ এই প্রস্তাব দিয়েছেন- সে প্রশ্ন রেখে তিনি দাবি করেছেন, প্রধানমন্ত্রী সে জবাব ‘দিতে পারবেন না’।
শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী মোটর চালক দলের এক অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ নেতা-কর্মীদের মুক্তি এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে কর্মসূচিতে নাগরিক ঐক্যের নেতা দাবি করেন, যেদিন তারা জনগণকে নিয়ে মাঠে নামবেন, সেদিনই সরকার পড়ে যাবে।
প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক এক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিরোধী এই রাজনীতিক বলেন, “আগে বলেছিলেন, ‘ওরা আমার কাছে সেন্টমার্টিন দ্বীপ চেয়েছিল, আমি দেই নাই।’
“যুক্তরাষ্ট্র নাকি সেন্ট মার্টিন দ্বীপ চায়। যুক্তরাষ্ট্র বলেছেন, ‘সেন্ট মার্টিন কেন, আমরা বাংলাদেশের এক ইঞ্চি জমিও চাইনি।’ তারপর আর সেই কথা বলেনি।”
“এবার কাহিনী তৈরি করেছেন, এক সাদা চামড়ার লোক নাকি তাকে (শেখ হাসিনা) প্রস্তাব দিয়েছে, রাখাইনদের একটা অংশ নিয়ে আর পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে নতুন একটা খ্রিষ্টান রাজ্য গড়ে তুলতে হবে।
“এ রকম কথা যেই বলুক, আমরা তার বিরুদ্ধে আছি। …কিন্তু তার কাছে প্রস্তাবটা কে দিয়েছে? এক সাদা চামড়া বললে তো হবে না। চামড়া সাদা তো বৃটিশদেরও, ইউরোপিয়ানদের, কানাডিয়ানদের, জাপানিজদের। আর যদি কারো ধবল কুষ্ঠ, হয় তাহলে পুরোটাই সাদা। কোন সাদা চামড়ার লোক আপনাকে এই প্রস্তাব দিয়েছে সেটা বলতে হবে।”
প্রধানমন্ত্রী সেটি বলতে পারবেন না দাবি করে মান্না বলেন, “আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাই, কোন মানুষ, কোন সরকার, কোন দেশ আপনার কাছে পার্বত্য চট্টগ্রাম চায়? কাহিনী বানিয়ে মনে করবেন কান্না-কাটি করব আর আপনার দুঃখে সবার মন গলে যাবে, আর আপনাকে বলবে, ‘না আপনিই থাকেন, আমরা সেই বান্দা নই’।”
আরও নিষেধাজ্ঞা আসছে
সাবেক র্যাব ও পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদ এবং সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ছাড়াও আরও অনেকের ওপরই নিষেধাজ্ঞা আসছে বলেও মন্তব্য করেন মান্না।
তিনি বলেন, ‘‘সরকার সমস্যায় আছে। তার তৈরি সেনাবাহিনীর প্রধানের নামে আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কী কারণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে? সরাসরি বলেছে দুর্নীতির কারণে। দুর্নীতির মাধ্যমে ব্যবসা পাইয়ে দিয়েছে নিজের ভাইদের, দুর্নীতির মাধ্যমে নিজের ভাই খুনের আসামি, তাকে জেল থেকে মুক্ত করে দিয়েছে।
“আমার মনে প্রশ্ন হয়, ওই যে, খুনের আসামিকে জেল থেকে মুক্ত করে দিল, ওটা শুধু জেনারেল আজিজ বলেছেন তাই হয়েছে? প্রেসিডেন্টের সই করতে হয়নি? যিনি তখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তাকে তার প্রধানমন্ত্রী রিকোয়েস্ট করে বলেন নাই তাকে ছেড়ে দেন?
“ অতএব স্যাংশন যদি ঠিকমত হয়, তাহলে শুধু সেনাপ্রধান খাবেন না, তৎকালীন রাষ্ট্রপতিও খাবেন, এখনকার এবং তখনকার যে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, সেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও স্যাংশন খাবেন। অপেক্ষা করেন, আমেরিকার স্যাংশন দিতে হবে না, আমরাই আপনাকে স্যাংশন দেব। সেই পথ তৈরি হচ্ছে, সেই পথে মানুষ এখন যাচ্ছে।”
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের প্রসঙ্গ টেনে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, ‘‘সব চোর-চোট্টা-খুনি ডাকাত মিলে আওয়ামী লীগের দল।”
সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজে যাবে
সরকারের পতন সময়ের ব্যাপার বলেও মনে করেন মান্না। তিনি বলেন, ‘‘ এই সরকার সবখানে দুর্বল। জনগণ বলেছিল, পাঁচ বছর টিকে থাকার। আমি বলি, পাঁচ বছর টেকার কোনো কারণ নাই। যদি আমরা সবাই আপনারা এক সঙ্গে রাস্তায় নামি, সেদিন রাস্তায় নামবেন, ঠিকমত নামবেন, সেইদিন ঘণ্টা বেজে যাবে এবার।
“মানুষ তৈরি, ওই রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছে। সর্বত্র, সমস্ত, সব পেশার মানুষ জেগে গেছে, জাগছে। ইনশাল্লাহ আগামীতে আরো বড় সুসংবাদ পাবেন। আন্দোলনের পথে আমি আপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি।”
জাতীয়তাবাদী মোটর চালক দলের সভাপতি সেলিম রেজা বাবুর সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, সহপ্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় নেতা আজমল হোসেন পাইলট, ভিপি ইব্রাহীমও বক্তব্য রাখেন।