অনুবাদ সাহিত্যের সংকট ও সম্ভাবনার দিকগুলো

স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরেও অনুবাদ নীতি না থাকায় অনুবাদ সাহিত্যের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য তেমন কোনো প্রাতিষ্ঠানিক অগ্রগতি হয়নি। যা কিছু অনুবাদ আমাদের হয়েছে তা অনেকটাই আমদানি-নির্ভর।

আনিসুর রহমানআনিসুর রহমান
Published : 29 Feb 2024, 10:45 AM
Updated : 29 Feb 2024, 10:45 AM

অমর একুশে বইমেলা উপলক্ষে ক্ষমতাবলয়ের নানা তরফে অনুবাদ সাহিত্যের বিকাশ ও প্রসারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয় বটে। তাই বলে বিগত কয়েক দশকে অনুবাদের পক্ষে নীতিগত সিদ্ধান্ত ও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বলে আমাদের চোখে পড়েনি। ব্যাপারটা এরকম বলনেওয়ালা বলেই যান, শুনলেওয়ালা শুনেই যান। আর আমরা প্রজারা দেখেই চমকিত।

খোদ-সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়টি পরিচালিত হয়ে আসছে অনেকটা রুটিন কাজ চালিয়ে যাবার মতো করে। এতে করে আমলাদের বাড়বাড়ন্তে এই মন্ত্রণালয়ের ‘অধীনস্থ’ বাংলা একাডেমিসহ স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো স্বায়ত্বশাসন যেমন খুইয়ে বসেছে তেমনি সংস্কৃতির বিকাশে উল্লেখ করার মতো আহামরি কিছুই হচ্ছে না। অনুবাদ পরিমণ্ডলটিও এরকম খপ্পর থেকে দূরে থাকেনি।

এহেন অবস্থায় দেশে না আছে আধুনিক ভাষা নীতি, অনুবাদ নীতি, গ্রন্থনীতি এবং সর্বোপরি সংস্কৃতি নীতি। সংস্কৃতির অনুকূলে যৎসামান্য যা কিছু ঘটে সরকারের তরফ থেকে তাও আবার আমলাদের খবরদারি এবং সংস্কৃতি অঙ্গনের মোড়ল সিন্ডিকেটের খপ্পরেই বাধা পড়ে থাকে।

এরকম একটি বাস্তবতায় অনুবাদের সংকট ও সম্ভাবনা নিয়ে কিছু পর্যবেক্ষণ তুলে ধরতে চাই।

স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরেও অনুবাদ নীতি না থাকায় অনুবাদ সাহিত্যের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য তেমন কোনো প্রাতিষ্ঠানিক অগ্রগতি হয়নি। যা কিছু অনুবাদ আমাদের হয়েছে তা অনেকটাই আমদানি-নির্ভর। অর্থাৎ আমরা বাইরের সাহিত্য অনুবাদ করেছি বাংলা ভাষায়। এসবের বেশিরভাগ মূল ভাষা থেকে না হয়ে ইংরেজি থেকে অনূদিত হয়েছে। আমাদের অনুবাদের প্রসঙ্গ অনেকটা ইংরেজির মোড়ল পণ্ডিতদের একচেটিয়া অধিকারে। অন্যদিকে আমাদের সাহিত্য অন্যভাষায় অনূদিত হয়ে রফতানিনির্ভর সাহিত্য উদ্যোগ নেই বললেই চলে। এরকম অবস্থা থেকে উত্তরণ দরকার।

অনুবাদ নীতি এবং প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো না থাকায় পদ ও পদবিধারীদের দৌরাত্ম্যও অনুবাদ সাহিত্যের লাগসই গণতান্ত্রিক বিকাশের পথে অন্তরায় হিসেবে কাজ করে। একবার এশিয়ার বৃহৎ একটি দেশ থেকে বাংলাদেশের পাঁচটি বই ওই দেশটির মূল ভাষায় অনুবাদের প্রস্তাব আসে। দায়িত্বটি পড়ে বাংলা একাডেমির ঘাড়ে। বাস্তবে দেখা গেল একাডেমির বড় দুই কর্তার দুটি বই প্রথমে রেখে আর বাকি তিনটি তাদের পছন্দের এবং অবশ্যই ক্ষমতাধর মোড়ল বুদ্ধিজীবীর বই তালিকায় ঢুকিয়ে দেয়া হলো। অন্যান্য দেশে ঘটে এর উল্টোটি। উদাহরণস্বরূপ দিল্লির সাহিত্য একাডেমি কিংবা সুইডিশ একাডেমি অথবা ফরাসি একাডেমি এরকম ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পদধারী কোনো লেখকের বই এরকম প্রক্রিয়ার বাইরে রাখে।

এ ধরনের ক্ষেত্রে একটা নিয়ম নীতি থাকলে সাহিত্য সংস্কৃতির গণতান্ত্রিক বিকাশ হতে পারে। তাতে অনুবাদ ও লেখালেখি বিকেন্দ্রীকরণ এবং সমতার নীতিতে পরিচালিত হতে পারে। ধ্রুপদী সাহিত্য থেকে শুরু করে একেবারে সমসাময়িক তরুণ একজন লেখকের বইও অনুবাদের জন্যে বিবেচিত হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে আমরা কতিপয় দেশ, বিশেষ করে ইউরোপের নরওয়ে, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক, জার্মানি ছাড়াও এশিয়ার ভারত, চীন, শ্রীলঙ্কা, কোরিয়া এবং জাপানের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারি।

আমাদের অনুবাদ সাহিত্যের পেছনের সংকটগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আমরা অনেকটা ইংরেজিমুখী। বাস্তবতা হচ্ছে ইংরেজি ভাষাভাষী জগতে বাংলাদেশের সাহিত্যের বাজার তৈরি হয়নি। তাও আবার বাঙালি অনুবাদকের ইংরেজি অনুবাদের জন্যে ইংরেজি ভাষাভাষী কোনো পাঠক মুখিয়ে নেই। তাই বলে আমাদের লেখাজোকা ইংরেজিতে অনুবাদ বন্ধ করার কথা বলছি না। তবে মনোযোগটা অন্যবিধ ভাষা সাহিত্যের দিকেও থাকা চাই। আমাদের সাহিত্যের বাজার হতে পারে আরবি ভাষাভাষী দেশগুলোতে, ফার্সি ভাষাভাষী দেশ ইরান, আফগনিস্তান এবং সাবেক সোভিয়েত উনিয়নের কতিপয় দেশ, পাকিস্তান এবং ভারতে উর্দু ভাষার বাজার সেই সঙ্গে ভারতবর্ষের হিন্দি এবং অন্যান্য ভাষায়।

এই পর্যায়ে ইংরেজির পণ্ডিতদের খবরদারির একটি নমুনা উল্লেখ করতে চাই। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা একটি বইয়ের ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশের জন্যে বাংলা একাডেমি আগ্রহ প্রকাশ করে। ইংরেজির দুই জাঁদরেল অধ্যাপক ও অনুবাদকের বিরোধিতার মুখে, একাডেমি এই উদ্যোগ নিয়ে এগোতে পারেনি। পরবর্তী সময়ে অনুবাদকর্মটি আন্তর্জাতিক একটি প্রকাশনা সংস্থা থেকে নিউ ইয়র্ক, বিলেত এবং তালিন থেকে একযোগে প্রকাশিত হয়। এসব ক্ষেত্রে স্বচ্ছ প্রক্রিয়া এবং অনুবাদ কমিশন থাকলে অনুবাদ ঘিরে ইংরেজির পণ্ডিত বুজুর্গদের খামখেয়ালি এড়ানো সম্ভব হতে পারে।

পাশের মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, এশিয়ার চীন, জাপান, কোরিয়া, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, ফিনল্যান্ড এবং মালয়েশিয়ায় আমাদের বইয়ের বাজার হতে পারে। বাস্তবে দেখা যায় এসব দেশের ভাষা সাহিত্যের সঙ্গে আমাদের পারস্পরিক যোগাযোগ ও দ্বিপাক্ষিক সাহিত্য বিনিময় নেই বললেই চলে। অথচ এসব অঞ্চলের সঙ্গে ভৌগোলিক রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক যোগসাজশের কারণে অনুবাদ ও সাহিত্য বিনিময় সহজ এবং ব্যবসায়িকভাবেও লাভজনক হতে পারে।

তবে সব ক্ষেত্রে সরকারের মুখাপেক্ষী হয়ে বসে থাকতে হবে এমন কোনো কথা নেই। আমাদের প্রকাশকদের তরফ থেকেও উদ্যোগ থাকতে পারে। বিশেষ করে প্রকাশক সমিতির পক্ষে। শিশু একাডেমি ওপরে উল্লিখিত অঞ্চলের ছোটদের বইয়ের বাংলায় অনুবাদ একই সঙ্গে বাংলাদেশের শিশুদের বইয়ের এইসব অঞ্চলের ভাষায় অনুবাদের উদ্যোগ নিতে পারে। প্রতিষ্ঠানটিতে ইতোপূর্বে ‘পরিচালকের' অধীনে যে কর্মযজ্ঞ পরিচালিত হতো, বর্তমানে পদটি 'মহাপরিচালকে' উন্নীত হবার পরে এখানকার কর্মযজ্ঞ পরিচালনায় মহাব্যাপার ঘটেনি। বরং ক্ষেত্রবিশেষে কিছু কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়েছে।

জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র হতে পারত দুনিয়ার বহুবিধ ভাষার সঙ্গে সাহিত্যের বিনিময় বিকাশ ও প্রসারের জন্যে জুতসই কর্তৃপক্ষ। আদতে এই প্রতিষ্ঠানটি করে কী সেটাই বুঝে উঠতে পারি না। এটি কী আমলাতন্ত্রের খপ্পরে জেগে ঘুমাচ্ছে না কি ঘুমিয়ে জেগে আছে তা গবেষণার বিষয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে একটি আন্তর্জাতিক অনুবাদ ব্যুরো প্রতিষ্ঠা করলেও স্বাধীনতার অর্ধশতকেও তা কার্যকর করতে পারেনি।

দেখে শুনে যা বোঝা যায় অনুবাদ সাহিত্যের তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতির সামনে সংকট রয়েছে প্রতিষ্ঠান, চর্চা, প্রচার, প্রসার এবং বাজারে। এর দায় সংশ্লিষ্ট প্রায় সকল তরফের। এর থেকে উত্তরণ একদিনে বা রাতারাতি হবার কোনো কারণ নাই। আমাদের ভিশন ২০৪১ আছে বটে, সেখানে সংস্কৃতির ভিশন কী? সংস্কৃতির ভিশন থাকতে হবে আরও সুদূরপ্রসারী। অনুবাদের ক্ষেত্রেও তাই।

অনুবাদক তৈরি এবং অনুবাদের সম্ভাব্যতার বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক এবং আমাদের আদিবাসী ভাষার ভিত্তিগুলোর দিকে নজর দেয়া দরকার। আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আধুনিক ভাষা প্রতিষ্ঠানের অধীনে অনেকগুলো ভাষা বিভাগ রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে পালি, ফার্সি, উর্দু, আরবি, বাংলা এবং ইংরেজিসহ ভাষা ও সাহিত্যের নানা বিভাগ। দেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কয়েকটিতে রয়েছে এসব ভাষা সাহিত্যের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী। এর বিপরীতে আমাদের ভাষা ও সাহিত্যের প্রায়োগিক অর্জন কতটুকু?

পাঠদান এবং মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় অনুবাদকে ব্যবহারিক বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। সেই সঙ্গে এসব ভাষার তরুণদের দক্ষ অনুবাদক হিসেবে গড়ে তোলার জন্যে প্রাতিষ্ঠানিক পৃষ্ঠপোষকতা এবং অনুপ্রেরণা দরকার। অনুবাদক হিসেবে কর্মক্ষেত্র বেছে নেবার সুযোগ যেমন রাখতে হবে, তেমনি অনুবাদের জন্যে দেশে বিদেশে বৃত্তির ব্যবস্থা থাকতে হবে; থাকতে হবে অনুবাদ প্রকল্পে বরাদ্দের জন্যে নিয়মিত অর্থের উৎস বা তহবিল। অনুবাদের জন্যে স্বতন্ত্র কমিশন বা জাতীয় অনুবাদ কেন্দ্র গঠন করা যেতে পারে। এরকম কাঠামো বাংলা একাডেমি, শিশু একাডেমি, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র, শিল্পকলা একাডেমি, মাতৃভাষা প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে কর্মযজ্ঞ পরিচালনা করা যেতে পারে। সেই সঙ্গে বঙ্গবন্ধু লেখক ট্রাস্টকে পুনরুজ্জীবিত করে এর সঙ্গে অনুবাদকদেরও যুক্ত করা যেতে পারে।

বিভিন্ন ভাষা-সাহিত্যের শিক্ষার্থীদের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে শিক্ষা বিনিময়ের আওতায় তিন মাস বা সর্বোচ্চ ছয় মাসের জন্যে ওইসব দেশে পাঠগ্রহণ এবং শিক্ষানবিশী অনুবাদক হিসেবে কাজ করার সুযোগ থাকতে পারে। একইভাবে ওইসব দেশের ভাষা সাহিত্যের শিক্ষার্থীদের জন্যে আমাদের দেশেও সুযোগ থাকতে পারে। শুরুটা হতে পারে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে, বিশেষ করে ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, ভুটান, মালদ্বীপ, থাইল্যান্ড এবং চীনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে।

আশার কথা হচ্ছে চীনের বেশকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগ চালু হয়েছে। এর পাশাপাশি চীনের অর্থায়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কনফুসিয়াস প্রতিষ্ঠান। এসব উদ্যোগ দক্ষ অনুবাদক তৈরির কাজে আসতে পারে। তবে অনুবাদকের জন্যে কর্মসংস্থানের আশার আলোও থাকতে হবে। এখানে আমি শ্রীলঙ্কার উদাহরণ টানতে চাই। দুই কোটি জনসংখ্যার দেশটিতে খোদ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়েই অনুবাদের জন্যে দুই শতাধিক অনুবাদক পদ রয়েছে। সেখানে ১৭ কোটির মানুষের বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রে অনুবাদকের পদ রয়েছে কয়টি?

কিছু ক্ষেত্রে আমাদের সম্ভাব্য অনুবাদক অনেকটা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। ঢাকা শহরেই রয়েছে অনেক উর্দুভাষী, আরবীভাষী এবং হিন্দিভাষী মানুষ। তাদের প্রশিক্ষণের আওতায় এনে পেশাদার অনুবাদক হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। অনেক আদিবাসী ভাষার মানুষ রয়েছে আমাদের দেশে। এরকম ভাষার সংখ্যা চল্লিশের মতো। এর মধ্যে অনেকগুলো ভাষা প্রতিবেশী দেশ বিশেষ করে ভারত এবং মিয়ানমারে রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ ককবরক, চাকমা, গারো, খাসিয়া, রাখাইন, মনিপুরী ভাষার কথা বলা যায়। মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলঙে খাসিয়া, গারো, হিন্দি, ইংরেজিসহ অনেকগুলো ভাষার পত্রিকা সহজলভ্য। তার মানে এসব ভাষার দক্ষ মানুষও এই অঞ্চলে রয়েছে। এর বিপরীতে আমাদের দেশেও রয়েছে এসব ভাষার মানুষ। নিয়মিত অনুবাদ উদ্যোগ এবং লাগসই প্রকল্প থাকলে অনুবাদ পাঠ ও চর্চায় দক্ষ মানুষ পাওয়া কঠিন হবে না।

আন্তর্জাতিক দুনিয়ার কোনো কোনো দেশে বিদ্যালয় পর্যায়েই শিক্ষার্থীদের অনুবাদে হাতেখড়ি দেয়া হয়। এর উদ্দেশ্য সকলেই অনুবাদক হবে এমন কোনো কথা নাই। তবে ভাষার দক্ষতা অর্জনে অনুবাদের মাধ্যমে গাঁথুনিটা শক্ত হতে পারে। আমাদের বাস্তবতা হচ্ছে আমরা মুখে মুখে যতটা ইংরেজি আর আরবি উদ্ধৃতি দেই এবং হরহামেশাই এসব ভাষার শব্দ বাংলা বাক্যের আগাপাশতলায় জুড়ে দিয়ে স্মার্ট আর পরহেজগার হবার চেষ্টা করি। আদতে বাঙালি বাংলাটাই ভালোমতো রপ্ত করেনি; ইংরেজি আরবিও করতে পারেনি বেশিভাগ ক্ষেত্রে। তা দৃশ্যমান অনুবাদ সাহিত্যের সঙ্কটের দিকে নজর বুলালে।

নতুন সরকারের মধুচন্দ্রিমা পর্বে আশাবাদ ব্যক্ত করতে চাই। আমাদের সংস্কৃতি অঙ্গন আমলা এবং মোড়ল বুদ্ধিজীবীর খপ্পর থেকে মুক্ত হয়ে একটি যুগোপযোগী আধুনিক সংস্কৃতি নীতির পাশাপাশি অনুবাদ, গ্রন্থ ও স্বতন্ত্র ভাষানীতি লাভ করবে। এক্ষেত্রে জাতীয় সংসদে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে পারে। যা অনুবাদ সাহিত্যের সঙ্কট দূরীকরণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।