ব্রিকসের সম্প্রসারণ: খর্ব করবে ডলারের একাধিপত্য

ব্রিকস অর্থনৈতিকভাবে গ্লোবাল সাউথকে একীভূত করতে চায়, চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) যার ভৌত অবকাঠামো প্রদান করবে। ইরান ও সৌদি আরব উভয়ই বিআরআই-এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যদি এই দেশগুলিকে অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিকভাবে একীভূত করা যায়, তাহলে বর্ধিত ব্রিকস হবে বৈশ্বিক পণ্যের পাওয়ার হাউস যা বিশ্ব বাজারে ‍উল্লেখযোগ্য প্রভাব রাখবে।

মঞ্জুরে খোদামঞ্জুরে খোদা
Published : 20 April 2023, 07:16 AM
Updated : 20 April 2023, 07:16 AM

ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে মার্কিন ও পশ্চিমা শক্তি রাশিয়ার ওপর সর্বাত্মক বাণিজ্যিক অবরোধ আরোপ করে। তাদেরকে আন্তর্জাতিক লেনদেনের সুইফট সিসটেম থেকে বিচ্ছিন্ন করার মাধ্যমে আটকে দেয় ইউএস ডলারের বিশাল বৈদেশিক রিজার্ভ। ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে রাশিয়া তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়। তাদের মুদ্রার মানে ধস নামে। রাশিয়া এই অবস্থা মোকাবিলার পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে রুবল ব্যবহারের বাধ্যবাধকতার ঘোষণা দেয়। রাশিয়ার বক্তব্য তাদের সঙ্গে বাণিজ্য করতে হলে রুবলের মাধ্যমেই করতে হবে। এই ঘোষণায় বিশ্ব নড়েচড়ে বসে এবং রুবলের দাম ঝটপট বেড়ে শক্তিশালী হয়ে ওঠে মুদ্রাটি। কিন্তু গল্পের এখনেই শেষ নয়, শুরু মাত্র।

যুদ্ধকালীন সময়ে পশ্চিমা শক্তি রাশিয়াকে একঘরে করে ফেলে। নিঃসঙ্গ রাশিয়াও মিত্রের সন্ধানে নামে এবং সে তার এশিয় প্রতিবেশীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলায় মনোযোগী হয়। চীন, রাশিয়া ইতোমধ্যেই একে অন্যের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। বিভিন্ন ক্ষেত্রে নতুন করে তারা ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারিত্বের ঘোষণা করে। তারা বলে, ‘তাদের সম্পর্কের কোনো সীমা-পরিসীমা নেই।’ এমনকি রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলেও, চীন ঘোষণা করে যে, রাশিয়া তার ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার’ এবং তাদের বন্ধুত্ব ‘ইস্পাত দৃঢ়’ তা থেকে কোনোভাবেই বিচ্যুত করা যাবে না তাদেরকে। আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট যেভাবেই পরিবর্তন হোক না কেন চীন-রাশিয়ার সমন্বিত কৌশলগত অংশীদারিত্ব অব্যাহত থাকবে। 

গত মাসে চীনের রাষ্ট্রপতির রাশিয়া সফরের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ছিল ‘বিশ্ব বাণিজ্যে মার্কিন ডলারের একক আধিপত্য খর্ব করা’। শি জিনপিং ও ভ্লাদিমির পুতিন মিলে উল্লেখ করেন যে, ‘ইতোমধ্যে আমরা আমাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে জাতীয় মুদ্রা ব্যবহার করছি এবং তা ক্রমেই বাড়ছে।’ চীন-রাশিয়ার মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ বাণিজ্য হচ্ছে ইয়েনে। পুতিনও চীনের মুদ্রাকে বিশ্বব্যাপী ব্যবহারের আহ্বান জানান।

শি-পুতিনের এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিশ্বজুড়ে ডলারের একাধিপত্য চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। এরই মধ্যে এ বছরের জানুয়ারিতে সৌদি সরকার ঘোষণা করে যে, তারা শুধু ডলারে নয়, অন্যান্য মুদ্রায়ও তেল বিক্রি করার কথা বিবেচনা করছে। চীনের রাষ্ট্রপতির সৌদি সফরের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই আসে এই ঘোষণা।

এই সময়ে চীনের মধ্যস্থতায় তেহরান ও রিয়াদের সম্পর্ক স্বাভাবিককরণ এশিয়ার রাজনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে এক উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। সৌদি আরব ও ইরানের এই কূটনৈতিক অগ্রগতি থেকে নিঃসন্দেহে পুরো মধ্যপ্রাচ্য ইতিবাচক ফল পাবে। ইতোমধ্যে উভয় দেশের নেতারা একে অন্যকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন এবং পরস্পর মিলিতও হচ্ছেন। সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে গত মাসে দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তিও সম্পাদিত হয়। 

চীন বিশ্বের বৃহত্তম তেলের ভোক্তা ও গ্যাসের অন্যতম আমদানিকারক। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চীন পশ্চিম এশিয়া থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে অধিক তেল কিনছে। বেইজিং তার শক্তি সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে আমদানি করে। ইরান থেকে ইয়েন ব্যবহার করেই তেল কিনছে চীন।

এশিয়ায় বাণিজ্যের জন্য অন্যান্য মুদ্রারও ব্যবহার বাড়ছে। একতরফা পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। ভারত ও ইরানের মতো দেশগুলো দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে রাশিয়াকে স্থানীয় মুদ্রা রুবল পরিশোধ করেছে। পূর্বে শি জিনপিংও ঘোষণা করেন যে, চীন শুধু পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে নয় এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চল থেকেও ডলারে নয় তার নিজস্ব মুদ্রায় তেল-গ্যাস কিনবে। 

মধ্যপ্রাচ্যে চীনের কূটনৈতিক সাফল্য ও বাণিজ্যিক অংশীদারিত্ব এই অঞ্চলে মার্কিন আধিপত্যকে খর্ব করবে। শুধু সৌদি আরব নয়, অন্যান্য পারস্য উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোও নিরপেক্ষ পররাষ্ট্র নীতির মাধ্যমে চীন-রাশিয়ার এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অবস্থানের মধ্যে অনেকটা ভারসাম্য রাজায় রেখে চলেছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সৌদি আরব ও ইরানের এই মধ্যস্থতার ক্ষেত্রে নিজেদেরকে ‘দুই দেশের নির্ভরযোগ্য বন্ধু’ হিসাবে বর্ণনা করেছে। সৌদি আরব ও ইরান উভয়েরই বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হলো চীন।

১৯৯৭ সালে সাবেক মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেবিগনিউ ব্রজেজিনস্কি, ‘দ্য গ্র্যান্ড চেসবোর্ড: আমেরিকান প্রাইমাসি অ্যান্ড ইটস জিওস্ট্র্যাটেজিক ইম্পেরেটিভস’ বইতে এই বলে সতর্ক করেছিলেন যে, ‘চীন, রাশিয়া ও ইরানের ঐক্য ওয়াশিংটনের একমুখী আধিপত্যের জন্য হুমকি তৈরি করবে’। এরা অ্যান্টিহেজিমোনিক জোট। এই তিন শক্তির প্রতি মার্কিন সরকারের আক্রমণাত্মক নীতি ও নিষেধাজ্ঞা তাদের এক হতে বাধ্য করেছে। যে শঙ্কা ও ভয়ের কথা আজ থেকে ২৫ বছর আগে ব্রজেজিনস্কি বলেছিলেন।

রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর জো বাইডেন সৌদি সফরে গিয়ে তেলের উৎপাদন বাড়ানো ও দাম কমানোর প্রস্তাব করেছিলেন। সৌদি এবং ওপেক তার কথায় সম্মত হয়নি। এই অবস্থানের মাধ্যমে রিয়াদ ক্রমশ তার মার্কিন ও পাশ্চাত্যের অতীত অনুসৃত নীতি থেকে সরে আসার স্পষ্ট ইঙ্গিত করে। একটি বহুমুখী বিশ্বের নীতিতে তারা তাদের অবস্থান ও প্রবণতা প্রকাশ করতে থাকে। 

এ মাসে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভা চীন সফর করেন। সেখানে তিনি বলেন ‘ডি-ডলারাইজেশন’ তার সরকারের একটি শীর্ষ অগ্রাধিকারের বিষয়। তিনি আরও বলেন, ‘প্রতি রাতে আমি নিজেকে প্রশ্ন করি, কেন সব দেশকে তাদের বাণিজ্য ডলারের ওপর ভিত্তি করে করতে হবে? কেন আামরা আমাদের নিজস্ব মুদ্রার ওপর ভিত্তি করে বাণিজ্য করতে পারি না?’ ইতোমধ্যে চীন ও ব্রাজিলের মধ্যে ঐতিহাসিক ডি-ডলারাইজেশন চুক্তি হয়েছে। এ কারণে অনেক মার্কিন রাজনীতিক ক্ষুব্ধ হয়েছেন। চীন সফরের সময় দুই নেতা শি ও লুলা মার্কিন ডলারের একক আধিপত্য খর্ব করারও আহ্বান জানান। 

দক্ষিণ আফ্রিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী নালেদি প্যান্ডর এ বছরের শুরুতে তার এক বক্তব্যে বলেন, ‘ডলারের একক আধিপত্যের বিপরীতে বিশ্বে একটি ‍সুষম/ন্যায্য মুদ্রা বিনিময় ব্যবস্থা চালুর পরিকল্পনা নিয়ে তারা কাজ করছেন৷ তার অংশ হিসাবে ব্রিকস-এর সদস্য দেশগুলো (ব্রাজিল, রাশিয়া, ইন্ডিয়া, চীন ও সাউথ আফ্রিকা) একটি নতুন আন্তর্জাতিক রিজার্ভ মুদ্রা তৈরির কথা বিবেচনা করছে।’

মার্চে ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট দিলমা রুসেফ চীন-সাংহাই ভিত্তিক নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এনডিবি) নেতৃত্ব গ্রহণ করেছেন। যাকে ব্রিকস ব্যাংক হিসেবেও অভিহিত করা হয়। মার্কিন নিয়ন্ত্রিত বিশ্বের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিকল্প হিসেবে ২০১৪ সালে এনডিবি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। নয়া উদারনৈতিক অর্থনৈতিক সংস্কারের নামে দরিদ্র দেশগুলোর ওপর যে ঋণের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল তার পরিপ্রেক্ষিতেই এই সংস্থার জন্ম দেয়া হয়েছে। 

ব্রিকস ব্যাংকের দায়িত্ব নেয়ার পর দিলমা বলেন, ‘গ্লোবাল সাউথ-নেতৃত্বাধীন ব্লক, মার্কিন ডলারের ব্যবহার ক্রমশ কমিয়ে দিয়ে ডি-ডলারাইজেশনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এনডিবি তার সদস্যদের মধ্যে (২০২২-২০২৬) স্থানীয় মুদ্রায় প্রায় এক-তৃতীয়াংশ (৩০%) ঋণ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। ১৪ এপ্রিল চীনের প্রধান মিডিয়া সিজিটিএনকে রুসেফ ব্যাখ্যা করেছিলেন, ‘বিদেশী মুদ্রার ঝুঁকি এবং অন্যান্য সমস্যা এড়ানোর উপায় খুঁজে বের করা প্রয়োজন। এখনো যেমন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মার্কিন ডলারের মতো একক মুদ্রার ওপর নির্ভরশীল হতে হয়। তবে সবার জন্য সুসংবাদ হচ্ছে, ইতোমধ্যে অনেক দেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে তাদের নিজস্ব মুদ্রার ব্যবহার করছে।’

এনডিবি-এর সদস্যদের মধ্যে শুধু ব্রিকস নয় বাংলাদেশ, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মিশরও রয়েছে। উরুগুয়ে যোগদানের প্রক্রিয়ায় আছে অন্যান্য অনেক দেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ইতোমধ্যে ইরান, সৌদি আরব, তুরস্ক, মেক্সিকো, এইউই, ইন্দোনেশিয়া, আর্জেন্টিনা, মিশর, আলজেরিয়া, ভেনিজুয়েলা, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ ব্রিকস-এ যোগদানের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করেছে।

এক্ষেত্রে ব্রিকস অর্থনৈতিকভাবে গ্লোবাল সাউথকে একীভূত করতে চায়, চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) যার ভৌত অবকাঠামো প্রদান করবে। ইরান ও সৌদি আরব উভয়ই বিআরআই-এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যদি এই দেশগুলিকে অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিকভাবে একীভূত করা যায়, তাহলে বর্ধিত ব্রিকস হবে বৈশ্বিক পণ্যের পাওয়ার হাউস যা বিশ্ব বাজারে ‍উল্লেখযোগ্য প্রভাব রাখবে। 

সৌদি আরব, ইরান দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্বের শীর্ষ তেল উৎপাদনকারী দেশ। পশ্চিম এশিয়ার এ দেশগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিকসে যোগ দিলে, ব্রিকস প্লাস হবে বিশ্বের শীর্ষ তেল উৎপাদনকারীদের অবস্থান। সেক্ষেত্রে ব্রিকস বিশ্বের পেট্রোলিয়াম উৎপাদনের এক-তৃতীয়াংশেরও অধিক প্রতিনিধিত্ব করবে। ওপেক ও ওপেক প্লাসে প্রভাবশালী রাশিয়ার অবস্থানের সঙ্গে সৌদি আরবের ভূমিকায় ব্রিকস গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হয়ে উঠবে।

অ্যাসোসিয়েশন অফ সাইউইস্ট এশিয়ান নেশনস (আসিয়ান) এর দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীরা বৈঠক করে ডলার, ইউরো, পাউন্ড, ইয়েনের নির্ভরশীলতা কমাতে স্থানীয় মুদ্রার ব্যবহার নিয়ে কথা বলেন। সেখানে তারা একটি ক্রস বর্ডার ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম তৈরি করেছেন যা আঞ্চলিক বাণিজ্যে স্থানীয় মুদ্রা ব্যবহারের অনুমতি দেবে। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করে ডি-ডলারাইজেশনের পক্ষে মত দেন এবং এশিয়ার মুদ্রা ব্যবস্থা ও এশিয়ায় একটি অভিন্ন মুদ্রা চালুর বিষয়ে কথা বলেন।

ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের সম্পাদকীয় বোর্ডের চেয়ার এবং ইউএস এডিটর-এট-লার্জ গিলিয়ান টেট মার্চের এক নিবন্ধে একটি ‘মাল্টিপোলার কারেন্সি ওয়ার্ল্ড’-এর পূর্বাভাস দিয়েছেন। ২০২২ সালে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) তার এক রিপোর্টে ডলারের আধিপত্য দুর্বল হওয়া সম্পর্কে সতর্ক করেছিল। সংস্থাটি স্বীকার করেছে যে, ডলারে থাকা বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের অংশ গত দুই দশকে ৭০% থেকে ৬০% কমে এসেছে। 

গত মাসে মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন বলেছেন, ‘তেহরানের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞার তেমন কোনো প্রভাব ইরানের ওপর পড়েনি এবং যেমনটি আমরা চেয়েছিলাম তেমনটি হয়নি’। মার্কিন অর্থমন্ত্রীর কথায় অন্তত এই স্বীকারোক্তি পাওয়া গেল যে, অবরোধে আর কাজ হচ্ছে না। 

আন্তর্জাতিক মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, রাশিয়ার বিরুদ্ধে দেয়া পশ্চিমাদের অবরোধও শিথিল হয়ে আসছে। ইউরোপের দেশগুলো নানা প্রক্রিয়ায় রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করে যাচ্ছে। ইউক্রেইনের পক্ষে জোরালো অবস্থানে থাকা অনেক দেশ তাদের অবস্থান পরিবর্তন ও শিথিল করছে। সেটাও এমনি হয়নি পরিস্থিতি ও বাস্তবতায় চাপেই হয়েছে।

পরিশেষে বলতে হয়, যাদের বিরুদ্ধে অবরোধ দেয়া হয়েছে, তাদের ধ্বংস করা যাচ্ছে না বরং অবরোধ মোকাবিলা করে তারা টিকে থাকছে, এগিয়ে যাচ্ছে। শুধু এগিয়ে যাচ্ছে তাই নয় তারা জোটবদ্ধ হয়ে ডলারকেন্দ্রিক এক বিশ্বব্যবস্থার বিপরীতে বহুকেন্দ্রিক মুদ্রা ও বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তুলছে।