ভারতে রাজ্য নির্বাচনে বিজেপি’র ভরাডুবি, ৩ রাজ্যে ফিরছে কংগ্রেস

ভারতে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি)।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Dec 2018, 10:42 AM
Updated : 11 Dec 2018, 12:14 PM

অন্তত তিনটি রাজ্যে তারা বিরোধীদল কংগ্রেস পার্টির কাছে ক্ষমতা হারানোর পাশাপাশি কোনো রাজ্যেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বলে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যমগুলো।

রাজস্থান ও ছত্তিসগড়ে কংগ্রেস সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে সরকার গঠনের পথে রয়েছে। মধ্যপ্রদেশের ফলও সেপথেই যাচ্ছে।

তেলেঙ্গানার নির্বাচনে অবশ্য দুই দলই চন্দ্রশেখর রাওয়ের তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির কাছে উড়ে গেছে।

 এ রাজ্যগুলোর তুলনায় মিজোরামের চিত্র অবশ্য একেবারেই ভিন্ন। কেন্দ্রে বিজেপি’র মিত্র মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট (এমএনএফ)এখানে কংগ্রেসকে প্রায় নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে।

লোকসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগে গুরুত্বপূর্ণ এ রাজ্যগুলোতে এমন বাজে ফল বিজেপির জন্য অশনি সংকেত, বলছেন পর্যবেক্ষকরা।

অন্যদিকে, এ জয় কংগ্রেসে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বকে পোক্ত করবে। বিজেপি-বিরোধী জোটের পালেও দেবে হাওয়া।

মঙ্গলবার দিনের শুরু থেকে বিধানসভায় বিজেপি’র ভরাডুবির চিত্র স্পষ্ট হতে থাকে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মধ্যপ্রদেশের ২৩০টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস ১১৬টি আসনে এগিয়ে ছিল। বিজেপি এগিয়ে ছিল ১০৪টি আসনে। এখানে বহুজন সমাজবাদী পার্টি (বিএসপি) এগিয়ে ৪টিতে।

রাজস্থান আর ছত্তিশগড়ে কংগ্রেস একচেটিয়াভাবে এগিয়ে রয়েছে। বিজেপি শাসিত এ দুই রাজ্যে কারা নতুন মুখ্যমন্ত্রী হতে যাচ্ছে তা নিয়েই চলছে জল্পনা-কল্পনা।

রাজস্থানের ১৯৯টি আসনের মধ্যে ১০৩টিতে কংগ্রেস এগিয়ে আছে, বিজেপি এগিয়ে মাত্র ৬৯টিতে। অন্যদিকে ছত্তিসগড়ের ৯০টির মধ্যে কংগ্রেস এগিয়ে ৬৬টিতে, বিজেপি মাত্র ১৪টিতে। এ রাজ্যে ভালো করেছে বিএসপিও, তারা এগিয়ে ৯টিতে।

তেলেঙ্গানায় টিআরএস এগিয়ে ৮৬টিতে। ১১৯টির মধ্যে কংগ্রেস জিততে পারে ২২টিতে। মিজোরামে কংগ্রেসকে হটিয়ে ৪০টির মধ্যে ২৬টিতে এমএনফ এগিয়ে রয়েছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।

এবারের নির্বাচনে তরুণদের পাশাপাশি কৃষক-শ্রমিক ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ভোটও কংগ্রেসের বাক্সে গেছে। ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও তেলেঙ্গানার ভোট একচেটিয়াভাবে পেয়েছিল বিজেপি।

“আমরা এবার সবাই কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছি, আমাদের প্রার্থী জিততে যাচ্ছে,” রয়টার্সকে এমনটাই বলেছেন মধ্যপ্রদেশের গমচাষী বিষ্ণু প্রসাদ জলধিয়া।

কৃষকদের ‘হতাশ করার কারণেই’ বিজেপির এ ভরাডুবি বলেও মত তার।

“বিজেপি আমাদের অবজ্ঞা করেছে। তারা পিরামিডের নিচের দিকে থাকা আমাদের মতো মানুষকে অবজ্ঞা করেছে,” ক্ষুদ্ধ কণ্ঠে বলেন এ মধ্যবয়সী।

পাঁচ রাজ্যের এ ফল কেন্দ্রে বিরোধীদের মনোবল বাড়িয়ে দেবে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। আগামী বছরের মার্চের নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হারাতে তাদের জোটও শক্তিশালী হবে।

কংগ্রেস বলেছে, তারা আগামী নির্বাচনে রাহুলের নাম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নাও প্রস্তাব করতে পারে। যে কারণে অন্য দলের হেভিওয়েট কাউকে মোদীর বিরুদ্ধে জোটের নেতৃত্বে দেখা যেতে পারে বলেও ধারণা অনেকের।

বিজেপি বিরোধী এ জোট দিন দিন আরও শক্তিশালী হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব।

“যখন এক আর একে এগারো হয়, তখন সর্বশক্তিমানকেও ক্ষমতা ছাড়তে হয়,” বিরোধী জোটের সম্ভাবনা নিয়ে বলেন উত্তরপ্রদেশের সাবেক এ মুখ্যমন্ত্রী।