ময়লা চুল মন মানসিকতায় বাজে প্রভাব ফেলে।
Published : 10 Nov 2024, 06:03 PM
চুল ভেজানো, শ্যাম্পু করা, কন্ডিশনিং, ধোয়া, মোছা, শুকানো- এই ধারাবাহিক কাজের জন্য যে পরিমাণ সময় প্রয়োজন, সেটা সবসময় পাওয়া যায় না।
এজন্য অনেকেই সপ্তাহে একবার চুল পরিষ্কারের যুদ্ধে নামেন।
তবে আসল বিষয় হলে চুল ময়লা হলে ধুতে হবে। আর সেটা বোঝার জন্য রয়েছে বেশ কয়েকটি লক্ষণ।
আঠালো ভাব
শুষ্ক কিংবা তৈলাক্ত, মাথার ত্বক যেমনই হোক না কেনো, তেল উৎপাদন হবেই।
“নিয়মিত চুল পরিষ্কার করা না হলে তেল জমতে থাকে”- রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মন্তব্য করেন নিউ ইয়র্ক সিটি’র চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. হ্যাডলি কিং।
তেলের কারণে চুলে আঠালো ভাব হয়, এমনকি অপরিষ্কারের ধরনের গন্ধও তৈরি করে।
মাথার ত্বকে চুলকানি ও অস্বস্তি
চুলে তৈলাক্তভাব হওয়ার পাশাপাশি মাথার ত্বকে চুলকানি ও অস্বস্তি দেখা দেবে, যথেষ্ট পরিমাণে পরিষ্কার না করলে।
একই প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফ্যামিলি নার্স প্র্যাক্টিশনার’ জোডি লো-জেরফো বলেন, “যদিও সিবাম (মাথার তেল) প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। তবে এতে ধুলা ময়লাও আটকে যায়। ফলে অনেক সময় ব্যাক্টেরিয়া বা ফাঙ্গাস কিংবা ইস্টের সংক্রমণ হতে পারে।”
তাই মাথা চুলকানো বা অস্বস্তি দেখা দেওয়া হল চুল অপরিষ্কার থাকার প্রধান লক্ষণ।
আঁশ ওঠা বা খুশকি
মাথার ত্বক থেকে আঁশের মতো চামড়া ওঠার কারণে চুলকানি দেখা দিতে পারে।
ডা. কিং বলেন, “যদি নিয়মিত পরিষ্কার করা না হয় তবে সিবাম উৎপন্ন হতে হতে মাথার ত্বকে ইস্টের আক্রমণের পরিবেশ তৈরি হয়। ফলাফল হিসেবে দেখা দেয় মাথা চুলকানি ও আঁশ ওঠার সমস্যা।”
যদি খুশকি বা আঁশ ওঠার সমস্যা দেখা দেয় তবে নিয়মিত ‘মেডিকেটেড অ্যান্টি-ড্যান্ড্রাফ’ শ্যাম্পু ব্যবহারের প্রয়োজন পড়বে।
ভালো মতো না ধোয়া
শুধু পরিষ্কার করলেই হবে না, শ্যাম্পু কন্ডিশনার ভালো মতো ধুতেও হবে। নাহলে এসব প্রসাধনী জমতে জমতেও চুলে আঠালোভাব তৈরি করবে।
মার্কিন সেলিব্রেটি কেশসজ্জাকর তেরারোজ পানচেরেলি বলেন, “যখন শ্যাম্পু, কন্ডিশনার বা চুলে ব্যবহৃত যে কোনো প্রসাধনী বা স্প্রে, স্টাইলিং জেল ব্যবহারের পর ভালো মতো পরিষ্কার না করলে আঠোলভাবের তৈরি হয়।”
তাই শ্যাম্পু দিলেই হবে না, ভালোমতো ঘষে পরিষ্কার করা হচ্ছে কিনা, আর যে প্রসাধনীই ব্যবহার করা হয় যথেষ্ট ভালো মতো ধোয়ার ব্যাপারটা খেয়াল রাখতে হবে।
স্বাভাবিকের চাইতে বেশি চুল পড়া
অবাক হলেও আসল বিষয় হল, ঠিম মতো পরিষ্কার না করা হলেও চুল পড়তে পারে। দেখা দিতে পারে আগাফাটার সমস্যা।
‘স্কিন অ্যাপেন্ডেজ ডিসকর্ড’ সাময়িকীতে প্রকাশিত একটি গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে ডা. কিং জানান- গবেষণায় দেখা গেছে, কম ধোয়ার অভ্যাস থেকে চুল পড়ার পরিমাণ বাড়ে।
ধুলা ময়লা তেল জমার কারণে চু্লে ও মাথায় প্রদাহের সৃষ্টি হয়। ফলে চুল পড়ার পরিমাণ বাড়ে।
চুল লেপটে থাকা
যখন তেল ও অন্যান্য প্রসাধনী জমে চুল ভারি করে ফেলে তখন স্বাভাবিকভাবেই চুল দেখতে সমতল ও ল্যাপটানো লাগে।
লো-জেরফো বলেন, “এই সময়ের অনেক প্রসাধনীতেই সিলিকন-সহ নানান ধরনের উপাদান ব্যবহার করা হয়, যা মাথার ত্বক ও চুলে লেগে থাকে ভালো মতো পরিষ্কার করা না হলে। এসব বেশি জমলে চুল ভার হয়ে লেপটে থাকে।”
নিজের কাছেই ভালো না লাগা
ডা. কিং বলেন, “চুল নিয়ে নিজেই অসন্তুষ্ট থাকলে বুঝতে হবে ভালো মতো চুল ধোয় হচ্ছে না। আর এটা এখন পর্যন্ত উপলব্ধি করার সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি।”
তিনি আরও বলেন, “চুল পরিষ্কারের সাথে মন-মানসিকতাও প্রভাবিত হয়। সামাজিকভাবেও প্রভাব পড়ে।”
কারণ ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার অংশ হিসেবে চুল পরিষ্কার রাখার বিষয়টা দেখা হয়্। চুল ভালো মতো ধোয়া না থাকলে তাই নিজের কাছেও যেমন অস্বস্তি লাগে তেমনি অন্যর সামনেও অপ্রস্তুত হতে হয়।
আরও পড়ুন