যেভাবে বুঝবেন ত্বক ভাঙছে নাকি পুনর্গঠিত হচ্ছে

লক্ষণ প্রায় একই রকম হলেও কিছু পার্থক্য রয়েছে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Jan 2023, 12:17 PM
Updated : 15 Jan 2023, 12:17 PM

অনেক সময় নতুন প্রসাধনী ব্যবহার শুরু করলে ত্বকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

এক্ষেত্রে প্রসাধনীটি ছুড়ে ফেলে দেওয়ার আগে একটু চিন্তা করুন- এটা কি ত্বক পুনর্গঠনের লক্ষণ!

কারণ ত্বক ভাঙা বা ‘ব্রেকআউটস’ ও ‘পার্জিং’ বা পুনর্গঠনের লক্ষণগুলো প্রায় এক।

‘পার্জিং’ বলতে যা বোঝায়

‘স্কিন পার্জিং’ খুবই সাধারণ একটি বিষয়। যখন নতুন কোনো পণ্য মুখে ব্যবহার করা হয়, যেমন- রেটিনল বা অ্যাসিড সমৃদ্ধ প্রসাধনী, তখন ত্বকের ওপরের স্তর উঠে গিয়ে নতুনভাবে গজাতে থাকে। যে কারণে খানিকটা প্রদাহ দেখা দেয়।

এই বিষয়ে নিউ ইয়র্ক’য়ের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ কারেন ক্যাম্পবেল বলেন, “যখন ব্রণ নিরাময়ের জন্য ‘অ্যাক্টিভ’ উপাদান যেমন রেটিনল ব্যবহার করা হয় তখন ব্রণ ভালো না হয়ে আরও বাজে অবস্থায় যায়।”

রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি ব্যাখ্যা করেন, “এটা আসলে রেটিনলের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। ত্বকে ব্যবহার বা মুখে খাওয়ার ক্ষেত্রে এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার অর্থ হল উপাদানটি ঠিক মতো কাজ করছে।”

মানে ব্রণ তৈরির জন্য দায়ী ব্যাক্টেরিয়া ধ্বংস করার পাশাপাশি ত্বক পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার চক্র এক্ই সময়ে চলছে।

নিউ ইয়র্ক’য়ের আরেক চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ জোশুয়া জাইখনার বলেন, “ত্বকে মাখার রেটিনয়েড প্রয়োগের পর কোষের বৃদ্ধির পরিমাণ বাড়তে থাকে। এটা অনেকটা পাইপের ভেতর পরিষ্কার করার মতো করে লোমকূপ পরিশোধিত হতে থাকে।”

লোমকূপ বন্ধ হওয়ার উপাদানগুলো দূর করতে পারলে পরে আর সেটা বন্ধ হওয়ার সুযোগ থাকে না।

‘ব্রেকআউটস’ বলতে যা বোঝায়

অন্যদিকে ‘ব্রেকআউটস’ নানান রকম হতে পারে। যেমন- মুখের ত্বকে ব্যথাযুক্ত ফোড়ার মতো ফুলে ওঠা, ‘হোয়াই হেডস’, ‘ব্ল্যাক হেডস’ ইত্যাদি।

ডা. জাইখনার বলেন, “ব্রণের ব্যথা সাধারণত লোমকূপ ঘিরেই হয়। এককভাবে একেকটি ব্রণ প্রচুর পরিমাণে তেল উৎপাদন করে। যা আঠালো ত্বকের নিচেই আটকে থাকে। ফলে লোমকূপ বন্ধ হয়ে যায়।”

হরমোন, মানসিক চাপ, খাদ্যাভ্যাস থেকে ব্রণ হয়। এর মাত্রা বৃদ্ধি পায় যখন লোমকূপ আটকে গিয়ে ব্যাক্টেরিয়া গজাতে থাকে।

‘স্কিন পার্জিং’ দেখতে যেমন লাগে

বিষয় হল, ত্বকের পুনর্গঠন বা ‘পার্জিং’ দেখতে অনেকটা ব্যথাযুক্ত ব্রণের মতোই মনে হয়।

“দেখতে একরকম লাগলেও যখন কোনো প্রসাধনী বা ওষুধ ব্যবহার করা হয় তখন সাধারণভাবে ‘পার্জিং’ অবস্থায় সময় লাগে কম। আর ‘ব্রেকআউট’ হলে নিরাময় হতে দীর্ঘ সময় নেয়”, ব্যাখ্যা করেন নিউ ইয়র্কয়ের আরেক ত্বক বিশেষজ্ঞ ধাভাল জি ভানসালি।

তিনি পরামর্শ দেন- রেটিনলস, আলফা এবং বেটা হাইড্রোক্সি অ্যাসিড, স্যালিসাইলিক অ্যাসিড, বেঞ্জয়ের পারোঅক্সাইড- এই ধরনের উপাদানগুলো ব্যবহারের পর ত্বক আর্দ্র রাখতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার উপকারী।

‘স্কিন পার্জিং’য়ের স্থায়িত্বকাল

সাধারণ দুতিন সপ্তাহ ক্ষতিগ্রস্ত ত্বকের পুনর্গঠন প্রক্রিয়া স্থায়ী হয়। তবে নতুন পণ্য বা প্রসাধনী ব্যবহারের পরেও ‘পার্জিং’ প্রক্রিয়া যদি চার থেকে ছয় সপ্তাহ স্থায়ী হয় তবে বুঝতে হবে সেই পণ্য উপকার না করে বরং আরও অপকার করছে।

‘পার্জিং’ প্রক্রিয়া বেশি দিন ধরে চললে

যদি দেখা যায় ব্রণ নিরাময়ের জন্য কোনো উপাদান ব্যবহারে ত্বকের উন্নতি হচ্ছে তবে চার থেকে ছয় সপ্তাহ ধৈর্য্য ধরাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। এই সময়ের মধ্যে ত্বক পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার চক্র মোটামুটি পুরোটা শেষ হয়। তবে বেশি অস্বস্তিকর লাগলে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।

আরও পড়ুন

ব্রণ হওয়ার বিভিন্ন কারণ ও প্রতিকার

অতিরিক্ত এক্সফলিয়েশনে ত্বকের ক্ষতি সারানোর পন্থা

ব্ল্যাক এবং হোয়াইট হেডস