অল্প বিস্তর হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে যকৃতে অতিরিক্ত চর্বি ডেকে আনে মহা বিপদ।
Published : 15 Sep 2022, 02:04 PM
অ্যালকোহল সেবন ছাড়াও ‘ফ্যাটি লিভার ডিজিজ’ হতে পারে।
শরীরের যে কোনো স্থানেই চর্বি জমতে পারে, যকৃতেও। এই অঙ্গতে সামান্য চর্বি থাকলে ক্ষতি নেই, তবে অতিরিক্ত হলেই বিপদ।
‘নন অ্যালকোহোলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ’ বা ‘স্টিয়াটোসিস’ মদ্যপান করেন না এমন মানুষের মধ্যে প্রায়শই দেখা যায়। স্বস্তির কথা হল স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করে ফেলা যায়।
যেভাবে যকৃতে চর্বি বাড়ে
যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্ট্যাটেন আইল্যান্ড ইউনিভার্সিটি হসপিটাল’য়ের ‘ব্যারিয়াট্রিক অ্যান্ড মিনিমালি ইনভেইসিভ সার্জারি’ বিভাগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. জন অ্যাংস্ট্যাট এ বিষয়ে ‘ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “যকৃতের ভেতরে চর্বি জমা হওয়াকে বলা হয় ‘কন্ডিশন স্টিয়াটোসিস’। যকৃতের ওজনের পাঁচ শতাংশের বেশি যদি চর্বি জমা হয় তবেই এই রোগ হয়েছে বলা যাবে “
অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ করলে এমনটা হতেই পারে। কোমল পানীয় আর মদকেই এখানে মুল কারণ ধরা হয়।
কাদের ঝুঁকি বেশি
ডা. অ্যাংস্ট্যাট বলেন, “বর্তমান সময়ে ‘স্টিয়াটোসিস’ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মানুষের শারীরিক ওজনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। ‘বডি ম্যাস ইনডেক্স’য়ের মাত্রা যদি ৩০’য়ের বেশি হয় তাহলেই আপনি ঝুঁকিতে আছেন। এই মাত্রা যত বাড়বে ঝুঁকিও ততই বাড়তে থাকবে।”
এছাড়াও ডায়াবেটিস, ‘মেটাবলিক সিন্ড্রোম’ যাদের আছে তাদেরও ঝুঁকি বেশি। আবার কিছু নির্দিষ্ট ধরনের ওষুধও এই ঝুঁকি বাড়ায়।
এই রোগের হুমকি
“রোগের তীব্রতা যত বাড়বে হুমকি ততই বাড়বে। অনেক রোগীর মাঝে দেখা যায় যকৃতে জমা হওয়া ওই চর্বি থেকে প্রদাহ তৈরি হয়। ‘স্টিয়াটোসিস’ পরে মোড় নেয় ‘স্টিয়াটোহেপাটাইটিস’য়ের দিকে। সেই প্রদাহ থেকে ‘স্কার টিস্যু’ সৃষ্টি হয়, সুত্রপাত হয় সিরোসিস’য়ের”, বলেন ডা. অ্যাংস্ট্যাট।
একবার ‘স্কার টিস্যু’ সৃষ্টি হয়ে গেলে তার আর কোনো চিকিৎসা নেই। একটাই উপায় তখন, ‘স্কার টিস্যু’কে বাড়তে দেওয়া যাবে না।
যকৃত থেকে চর্বি সরানো উপায়
ওজন কমানোই হল যকৃত থেকে চর্বি সরানোর আদর্শ উপায়। নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস আর শরীরচর্চার মাধ্যমে ওজন কমাতে হবে। মারাত্মক স্থূলকায় ব্যক্তিদের জন্য অস্ত্রোপচার প্রযোজ্য হতে পারে।
ডায়াবেটিস থাকলে এই রোগের লাগাম টানা খুব কঠিন। আর এই রোগ হয়ে গেলে সব ধরনের মদ্যপান নিষিদ্ধ।
রোগের লক্ষণ
‘স্টিয়াটোসিস’য়ের অধিকাংশ রোগীরই তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য লক্ষণ থাকে না। কিছু রোগী বলেন তাদের খেতে ভালো লাগে না, মানে রুচির অভাব হয়।
পেটের ডান পাশের ওপরের দিকে ব্যথা হয়। ওই জায়গাটা সবসময় ভরা থাকে মনে হয়। বমি ও বিতৃষ্ণাবোধ থাকে। রোগের তীব্রতা বেড়ে গেলে চোখ ও ত্বকে হলুদাভ আভা দেখা দেয়। পাশাপাশি পেট ফুলে থাকতে পারে।
আরও পড়ুন