শুধু উদ্ভিজ্জ খাবার খাওয়া হয়ত ক্ষতিকর

গবেষণা বলছে, সব ধরনের পুষ্টি উপাদান উদ্ভিদ থেকে পাওয়া সম্ভব নয়।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2023, 05:42 AM
Updated : 16 Nov 2023, 05:42 AM

মাংস খাওয়া বাদ দেওয়ার নানান কারণ থাকতে পারে। তবে যারা শুধুই উদ্ভিজ্জ খাবারের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন তাদের হয়ত পুষ্টির ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।

এরকমই তথ্য উঠে এসেছে সুইডেনের ‘চামার্জ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি’র করা গবেষণায়। ‘নিউট্রিয়েন্টস’ সাময়িকীতে প্রকাশিত এই গবেষণা পত্রে বলায় হয়- মাংসের বিকল্প হিসেবে বাজারে প্রায় ৪৪ ধরনের খাবার রয়েছে, যার বেশিরভাগই সয়া এবং মটর প্রোটিন ভিত্তিক।

এছাড়াও রয়েছে সয়া গাঁজিয়ে তৈরি করা খাবার, যা কিনা ছত্রাক থেকে পাওয়া প্রোটিন।

তবে গবেষকরা দেখতে পান, মাংসের বিকল্প খাবারে পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি রয়েছে। বিশেষ করে লৌহ ও জিংক খুব কম পরিমাণ দেহে শোষিত হয়। এর কারণ হল, উদ্ভিজ্জ খাবারে থাকা ‘ফাইটেইটস’ যা পুষ্টি-রোধী।

উদ্ভিজ্জ প্রোটিন থেকে নির্দিষ্ট পুষ্টি নাও মিলতে পারে

“সব প্রোটিন এক নয়”- ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মন্তব্য করেন উত্তর আমেরিকা নিবাসী পুষ্টিবিদ ক্যাথরিন হের্ভাসিও।

তিনি বলেন, “এটা ঠিক যে, মাংসের চাইতে উদ্ভিজ্জ প্রোটিনে চর্বি, ক্যালরি ও কোলেস্টেরলের পরিমাণ কম। তারপরও কিছু গুণের ঘাটতি রয়েই যায়।”

তিনি ব্যাখ্যা করেন, “মাংসের বিকল্প খাবারের উৎস মানে উদ্ভিজ্জ খাবার, যেসবে প্রাকৃতিক উপাদান ‘ফাইটেইটস’ জমা থাকে ‘ফসফরাস’য়ের মধ্যে। এটা উদ্ভিদের বেড়ে ওঠা ও বংশবিস্তারে কাজে লাগলেও মানব শরীরে জন্য উপকারী নয়। কারণ ‘ফাইটেইটস’ পুষ্টি-রোধী হিসেবে পরিচিত। বিশেষ করে ক্যালসিয়াম, জিংক ও লৌহ শোষণে বাধা দেয় বা কম শোষণ হয়।”

যে কারণে উদ্ভিদ-ভিত্তিক প্রোটিন বা মাংসের বিকল্প খাবারকে ‘কম লৌহ শোষিত’ উপাদান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

এক্ষেত্রে গাঁজানো খাবার হয়ত ভালো

উদ্ভিদ-নির্ভর খাবার থেকে সঠিক পুষ্টি পেতে হের্ভাসিও বলেন, “গবেষণায় বলা হয়েছে সয়া থেকে গাঁজানো প্রক্রিয়াতে তৈরি ‘টেম্পে’ বরং উদ্ভিজ্জ খাবার হিসেবে উপকারী। কারণ গাঁজানো বা ফার্মেন্টেইশন প্রক্রিয়ার সময় এর ‘ফাইটেইটস’ ভেঙে যায়।”

“লৌহ ও জিংক গ্রহণের উদ্দেশ্য যদি থাকে তবে উদ্ভিজ্জ-খাবার বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে কৌশলী হওয়ার প্রয়োজন হবে। আর বাজারে পাওয়া যায় এমন অনেক খাবার, ‘ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল’ বা উদ্ভিজ্জ খাবার থেকে তৈরি দুধ যেমন- সয়া বা কাঠবাদামের দুধে আলাদা করে লৌহ বা জিংক দেওয়া থাকে”- বলেন এই পুষ্টিবিদ।

মাঝে মধ্যে প্রাণিজ খাবার খাওয়া উপকারী

হের্ভাসিও পরামর্শ দেন, “আমি বলবো প্রাণিজ ও উদ্ভিজ্জ খাবার সঠিক ভারসাম্য করে খাওয়া উচিত। যদিও প্রাণিজ খাবারে কোলেস্টেরল ও চর্বির পরিমাণ বেশি তারও এখান থেকে মিলবে দেহের জন্য প্রয়োজনীয় লৌহ ও জিংক। আবার উদ্ভিজ্জ খাবার থেকে শোষিত হওয়ার মতো লৌহ ও জিংক না পাওয়া গেলেও এগুলো রক্তের কোলেস্টেরল কমায়, আর ক্যালরি কম।”

আসলে দুই ধরনের খাবারই একে অপরের ঘাটতি পূরণ করে।

তাই এই পুষ্টিবিদের মতে, যদি উদ্ভিজ্জ খাবারেই অভ্যস্ত হতে চায় কেউ, তবে খাদ্য-বিশেষজ্ঞ ও ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চলা উচিত হবে যাতে দেহে পুষ্টির ঘাটতি দেখা না দেয়।

আরও পড়ুন

Also Read: উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে প্রোটিন

Also Read: জিঙ্ক সমৃদ্ধ উদ্ভিজ্জ খাবার

Also Read: মাংসের পুষ্টিগুণ ও খাওয়ায় সতর্কতা