কাঁচা খাবার খেলে পেটে গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর এর থেকে পরিত্রাণের রয়েছে উপায়।
Published : 02 Apr 2024, 07:51 PM
এক বাটি বিভিন্ন ধরনের রঙিন ফল ও সবজি দিয়ে তৈরি সালাদ খাওয়ার উপকারিতার কথা নতুন করে বলার কিছু নেই।
তবে স্বাস্থ্যকর এই খাবার খাওয়ার পরে অনেক সময় পেট ফোলাভাব ও গ্যাসের সমস্যা দেখা দেয়।
সালাদ খেলে যে কারণে পেট ফোলাভাব হয়
কাঁচা সবজি বা সালাদ খেলে পেট ফোলাভাব দেখা দিতে পারে।
ভারতীয় পুষ্টিবিদ নুপুর পাতিল হেল্থশটস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে, এই সমস্যা তৈরি হওয়ার পেছনে বিভিন্ন কারণ উল্লেখ করেন।
উচ্চ আঁশ যৌগ: সবজি উচ্চ আঁশ সমৃদ্ধ। বিশেষ করে কপি ধরনের সবজি যেমন- ব্রকলি ও ফুলকপি খেলে পেটে ফোলাভাব সৃষ্টি করে।
তাই অতিরিক্ত পরিমাণে কপি খাওয়া ঠিক না।
কাঁচা সবজি: রান্না সবজির তুলনায় কাঁচ সবজি খাওয়া অনেকের হজমে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। ফলে দেখা দেয় পেট ফোলাভাব ও গ্যাস।
বাতাস গেলা: অনেক সময় দ্রুত খাবার খাওয়া বা সম্পূর্ণ চিবিয়ে না খাওয়ার ফলে বাতাস পেটে পৌঁছে ফোলাভাব সৃষ্টি করে।
খাবারে অসহিষ্ণুতা: অনেকের সাধারণ সবজি বা উপাদানের প্রতি সংবেদনশীলতা বা অসহিষ্ণুতা থাকতে পারে।
সালাদ খাওয়ার পরে গ্যাস বা ফোলাভাব দূর করার উপায়
বিভিন্নভাবে এই সমস্যা সমাধান করা যায়।
পর্যাপ্ত পানি পান
আমাদের শরীর পরিপাক রসে পরিপূর্ণ এবং পর্যাপ্ত পানি পান, এর মাত্রা বজায় রাখতে সহায়তা করে। পানিতে দ্রবণীয় আঁশ যেমন- শস্য, বাদাম, বীজ, অন্যান্য ফল ও সবজি ইত্যাদি পানিকে আকর্ষণ করে।
মানে হল, যদি পর্যাপ্ত পানি পান করা হয় তবে দেহে ভালো মতো প্রবাহিত হয় এবং বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যেমন- ফোলাভাব, গ্যাস বা ব্যথা নিরসনে সহায়তা করে।
সতর্কতা: তার মানে এই নয় যে, খাবার খাওয়ার সময় প্রচুর পানি পান করতে হবে। পানি পাচক রস হালকা করে ফেলে অর্থাৎ হজম ক্রিয়া হ্রাস পায়।
তাই খাবারের সঙ্গে সামান্য পরিমাণ তরল গ্রহণ করে বরং খাবারের পরে কিছুক্ষণ সময় নিয়ে পর্যাপ্ত পানি গ্রহণ করতে হবে।
চিবিয়ে খাবার খাওয়া
তাড়াহুড়া করে খাওয়া হলে অধিকাংশ সময় খাবার ভালো মতো চিবিয়ে খাওয়া হয় না। হজম করতে ভালোমতো চিবিয়ে- প্রায় তরল-সম ঘনত্বে পরিণত করে খাওয়া প্রয়োজন।
হজম প্রক্রিয়া শুরু হয় মুখ থেকেই। তাই ভালো মতো চিবিয়ে না খেলে পরে হজম করা কঠিন হয়ে পরে।
খাওয়ার ধরনের পরিবর্তন
তাড়াহুড়ো করে খাওয়া যাবে না। বসে বা আরাম করে খাওয়া যায় এমন পরিবেশে খেতে হবে। মানসিক চাপ বৃদ্ধি হজম ক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করে। দেহ প্রস্তুত নয় এমন সময় খাবার খাওয়া হজম ক্রিয়াতে সমস্যা তৈরি করে। ফলে অস্বস্তি অনুভূত হতে পারে।
দেহের ভালো ব্যাক্টেরিয়ার যত্ন
অন্ত্রে অনেক ভালো ব্যাক্টেরিয়া থাকে যা আঁশ ভাঙন প্রক্রিয়াতে সহায়তা করে।
কম্বুচা, দই বা কিমচি ভালো প্রোবায়োটিক অর্থাৎ এগুলো ভালো ব্যাক্টেরিয়ার উৎস।
দৈনিক খাবার তালিকায় এগুলো যোগ করা হজম ক্রিয়া উন্নত করে। সালাদ খাওয়ার পরে পেটের ফোলাভাব কমাতে সহায়তা করে দই।
হাঁটাহাঁটি করা
সালাদ খাওয়ার পরে হালকা হাঁটাহাঁটি করা বা স্ট্রেচিং উপকারী। যে কোনো ধরনের হালকা ব্যায়াম পেশি সচল রাখে এবং জমে থাকা গ্যাস বের করে দিতে সহায়তা করে।
সালাদে কিছুটা রান্না সবজি ব্যবহার
সালাদের সবজিতে তাপ প্রয়োগ করা তা ভাঙ্গনে সহায়তা করে, হজমে উপকার করে।
পেট মালিশ করা
অনেক সময় পেটে হালকা মালিশ করা বা চাপ প্রয়োগ- গ্যাস বের করে দিতে ও ব্যথা কমাতে সহায়তা করে।
এই বিষয়ে পাতিল বলেন, “তল পেটের ডান দিক থেকে গোলাকার গতিতে পাঁজর পর্যন্ত মালিশ করতে হবে। এরপর সরাসরি বাম পাঁজরের দিকে এবং পরে বাম নিতম্বের দিকে মালিশ করতে হবে। এরপর নাভির দিকেও দোলাকার ভাবে মালিশ করতে হবে।”
কমপক্ষে দশ মিনিট ঘড়ির কাটা বরাবর ও ঘড়ির কাটার উল্টো দিকে মালিশ করা পেট ফোলার সমস্যা নিরসনে সহায়াত করে।
ছবি: পেক্সেল্স ডটকম।
আরও পড়ুন
খালি পেটে কী খাবেন আর কী এড়াবেন