পরিচর্যার পাশাপাশি ভেতর থেকেও পুষ্টির দরকার হয়।
Published : 18 Apr 2024, 02:36 PM
চুলের যত্নে লৌহ, প্রোটিন ও অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি অ্যাসিডের পাশাপাশি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও প্রয়োজনীয়।
কারণ চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের প্রয়োজন পড়ে।
যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহকোষগুলো থেকে ফ্রি রেডিকেলগুলোকে নিরপেক্ষ করতে এবং জারণের কারণে সৃষ্ট ক্ষয় কমাতে সহায়তা করে।
হেল্থশটস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ডা. রিঙ্কি কাপুর এই বিষয়ে আরও বলেন, “অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মানসিক চাপ কমায়। ফলে চুলের ফলিকলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। এতে করে চুল অকালে পেকে যাওয়া বা পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি হ্রাস পায়।”
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন-ভিটামিন এ, সি, ই এবং সেলেনিয়াম ও জিংকের মতো খনিজ উপাদান মাথার ত্বক সুরক্ষিত রাখে এবং চুলের ফলিকলগুলোকে উদ্দীপ্ত করতে ও পুষ্টি যোগাতে সহায়তা করে।
এটা কোলাজেন উৎপাদন করে চুলের শক্তি যোগায়, স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায় এবং চুলের বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।
‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব কসমেটিক সায়েন্স’য়ে প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুলে সুরক্ষার স্তর সৃষ্টি করে। ফলে রোদের কারণে হওয়া ক্ষয় থেকে চুল সুরক্ষিত থাকে। এটি মাথার ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং চুল ঝরে যাওয়া ঝুঁকি হ্রাস করে।”
‘ইন্ডিয়ান ডার্মাটোলজি অনলাইন জার্নাল’য়ে প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ‘ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরন’ রোধ করে। যা চুল পড়া-সহ অন্যান্য সমস্যা কমাতে সহায়তা করে। বলা যায়, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুলের সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খাদ্য তালিকায় যোগ করারা মাধ্যমে মজবুত ও সুস্থ চুল পাওয়া যায়।
স্ট্রবেরি: স্বাস্থ্যকর এই ফলে শর্করা ও ক্যালরির মাত্রা কম। তবে এতে আছে অত্যাবশ্যকীয় আঁশ ও ভিটামিন সি।
ডা. রিংকি কাপুর বলেন, “এটা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভালো উৎস, যা কোলাজেনের উৎপাদন বাড়িয়ে চুলের সুস্থতা রক্ষা করে। এছাড়া এটা সিলিকা খনিজ উপাদান সমৃদ্ধ যা চুল মজবুত ও উজ্জ্বল করতে সহায়তা করে।”
ডিম: আছে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান যা চুল ঘন ও মজবুত করতে সহায়তা করে। আরও আছ বায়োটিন, প্রোটিন, কোলিন, লৌহ, ভিটামিন এ, ডি এবং বি-১২। লুটেইন ও জিয়াক্সান্থিন- এই দুই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করে। দৈনিক একটা ডিম খাওয়া চুলে দ্রুত পরিবর্তন ফুটে ওঠে।
মিষ্টি আলু: ভিটামিন এ এবং বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ যা মাথার ত্বক সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
ব্যাখ্যা করে ডা. কাপুর বলেন, “সুস্থ মাথার ত্বক মানে শুষ্কতা, খুশকি ও অন্যান্য সংক্রমণের ঝুঁকি কম। এতে চুলের ফলিকল উদ্দীপিত হয়। চুলের দ্রুত বৃদ্ধি হয় ও স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
গাজর: আছে উচ্চ মাত্রার বিটা ক্যারোটিন যা চুলে ভিটামিন এ হিসেবে কাজ করে বলে জানান, এই বিশেষজ্ঞ। ভিটামিন এ সিবাম উৎপাদনের মাধ্যমে মাথার ত্বক ‘কন্ডিশন’ করে এবং চুল পড়া কমায়।
বাদাম: বাদাম ও বীজ চুলের জন্য উপকারী। কাঠবাদাম, আখরোট, তিসি ও চিয়া বীজ ইত্যাদি খাবার তালিকায় যোগ করার মাধ্যমে চুলের যত্ন নেওয়া যায়। কারণ এসবে আছে ভিটামিন ই, এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মাথার ত্বকের অক্সিডেটিভ চাপ কমায় এবং চুলের উজ্জ্বলতা ও চকচকে-ভাব আনে।
পালংশাক: ‘প্রিভেন্টিভ নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড সায়েন্স’য়ে প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী, পাতাবহুল এই সবজি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে আছে- লুটেইন, বিটা-ক্যারোটিন, কামারিক ও ফেরুলিক অ্যাসিড। আরও আছে ফোলেইট, লৌহ, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি- যা চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
ডার্ক চকলেট: ডার্ক চকলেটে ৭০ শতাংশের চেয়ে বেশি কোকোয়া থাকে যা চুল পড়া হ্রাস ও চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে” বলেন ডা. কাপুর।
আরও থাকে পটাসিয়াম, কপার, লৌহ ও ম্যাগনেসিয়াম - যা চুল ও ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষায় সহায়তা করে।
চুল বৃদ্ধির আরও কিছু টিপস
ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ খাবার চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
সপ্তাহে দুবার মাথার ত্বক মালিশের ফলে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে।
পর্যাপ্ত ঘুম ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী।
গরম পানিতে গোসল করা চুল ভেঙে পড়ার জন্য দায়ী। যতটা সম্ভব তাপীয় স্টাইলিং যন্ত্র এড়িয়ে চলতে হবে।
রাসায়নিক উপাদান মুক্ত প্রসাধনী যেমন- শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করা।
চুলের বৃদ্ধিতে নিয়মিত চুল ছাটতে হবে।
মনে রাখা জরুরি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার চুলের বৃদ্ধির জন্য উপকারী।
ছবি: পেক্সেল্স ডটকম।
আরও পড়ুন