দীর্ঘায়ু লাভে উপকারী চা

‘ব্লু জোন্স’য়ের অধিবাসীদের খাদ্যাভ্যাস হতে পারে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার পন্থা।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Jan 2023, 09:21 AM
Updated : 13 Jan 2023, 09:21 AM

তিন ধরনের ‘অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামাটরি’ চা পানে বাড়তে পারে আয়ু।

যদিও রূপকথার গল্পের মতো ‘অমৃত সুধা’ বলতে পৃথিবীতে কিছু নেই। তবে বৃদ্ধ হওয়ার গতি হয়ত কিছুটা ধীর করতে পারে এই জগতের জনপ্রিয় পানীয় চা।

আর এমনটাই দাবি করছেন মার্কিন লেখক, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সদস্য ড্যান বিউটনার।

‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’য়ের সেরা বিক্রিত বইয়ের এই লেখক এবং ‘ব্লু জোন্স’য়ের প্রতিষ্ঠাতার ভাষায়, “খাবার আমাদের দীর্ঘায়ু লাভে এবং তারুণ্য ধরে রাখতে সহায়তা করে।”

বিস্তৃত গবেষণার পরে বিউটনার ও তার দল বিশ্বের পাঁচটি অঞ্চল ‘ব্লু জোন্স’ হিসেবে চিহ্নিত করেন। যেখানে রয়েছে দীর্ঘজীবী মানুষের বাসস্থান।

এই ব্লু জোন্স চিহ্নিত অঞ্চলগুলো হল- কোস্টারিকার নিকোয়া, গ্রিসের একারিয়া, ইতালির সার্ডিনিয়া, জাপানের ওকিনাওয়া এবং ক্যালিফোর্নিয়ার লোমা লিন্ডা।

বিউটনারের উদ্ধৃতি দিয়ে ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, ‘ব্লু জোন্স’য়ে এলাকাভিত্তিক রান্নার পদ্ধতি আলাদা হলেও একটা সাধারণ বিষয়ে মিল রয়েছে; সেটা হল চা পান।

তাদের গবেষণায় দেখা গেছে, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চা পান হাড় ও মস্তিষ্ক শক্তিশালী রাখতে পারে। প্রতিদিন দুবার বা এর বেশি ‘ব্ল্যাক টি’ পান দীর্ঘায়ু লাভে সহায়তা করে।

চা পান দেহে ইতিবাচক প্রভাব রাখে। ‘ব্লু জোন্স’য়ের অধিবাসীয়া নিয়মিত পান করেন এমন তিন ধরনের চা সম্পর্কে জানান বিউটনার।

গ্রিন টি

জাপানের ওকিনাওয়া অঞ্চলের মানুষরা নিয়মিত গ্রিন টি পান করেন।

বিউটনার বলেন, “এই অঞ্চলের মানুষ সবুজ ধরনের খাবার পছন্দ করেন। এগুলো হৃদরোগ ও কয়েক রকম ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। গ্রিন টি এমনই একটা পানীয়।”

এতে আছে ‘ফ্লাভানল্স’, এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা ‘এলডিএল’ বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং হৃদস্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে।

এতে আরও আছে ‘ক্যাটেকিন্স’ এক ধরনের পলিফেনল ও অ্যান্টিওক্সিডেন্ট যা ‘উন্মুক্ত রেডিকেল’ থেকে সুরক্ষিত রাখে। এতে থাকা ‘এল-থিয়েনিন’ এক ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড। যা মেজাজ ও জ্ঞানীয় কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়তা করে।

ভেষজ চা

গ্রিসের একারিয়া’তে স্থানীয়ভাবে ভেষজ চা পাওয়া যায়। রোজমেরি, ওয়াইল্ড সাগা ও ড্যান্ডালায়ন চা প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে বলে জানান, বিউটনার।

গবেষণায় তিনি উল্লেখ করেন, “স্মৃতিভ্রংশ ও অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতার সংখ্যা একারিয়া’তে কম। আর এর কারণ তাদের স্বাস্থ্যকর অভ্যাস।”

মিল্ক থিসল টি

‘মিল্ক থিসল’ উদ্ভিদ থেকে তৈরি হয় এই ভেষজ চা।

বিউটনার জানান, ইতালির সার্ডিনিয়া’তে ‘মিল্ক থিসল’ চা বেশ জনপ্রিয়। এটা ব্রেক ডাউন, হজমের সমস্যা কমায়, দেহে ভিটামিন ও খনিজ সঞ্চয়ে সাহায্য করা এবং দূষিত ধরনের পদার্থ দেহ থেকে বের করে দিতে সহায়তা করে।

এই ভেষজ কিছু নির্দিষ্ট ধরনের ক্যান্সারের বিরুদ্ধেও কাজ করে।

গবেষণায় দেখা গেছে, ‘মিল্ক থিসল’য়ের নির্যাস প্রদাহরোধী ও হৃদস্বাস্থ্যে প্রতিরক্ষামূলক প্রভাব রাখে। ফলে দূষিত পদার্থের হাত থেকে রক্ষা করার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী যকৃতের রোগের হাত থেকে বাঁচাতে পারে।

আরও পড়ুন

Also Read: চা নাকি কফি- কোনটা ভালো?

Also Read: গৃহস্থালীর কাজে ব্যবহৃত চা পাতা

Also Read: মালাই চা তৈরির পদ্ধতি