রেসিপি: পেঁয়াজ পাতার পাকোড়া

শুধু সবজি ভাজিতে নয়, পেঁয়াজ পাতা বা কলি দিয়ে মুখরোচক পাকোড়া তৈরি করা যায়।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 March 2023, 01:41 PM
Updated : 1 March 2023, 01:41 PM

পেঁয়াজ কলির পাকোড়া তৈরি করতে পারেন রন্ধনশিল্পী আইরিন সুলতানার রেসিপিতে।

পেঁয়াজ পাতা বা পেঁয়াজ কলি যে নামেই বলা হোক, এর স্বাদে তারতম্য হবে না। কুচি কুচি করে কাটা কাঁচা পেঁয়াজ পাতা সালাদে মিশিয়ে খেতে বেশ লাগে। সবজিতে মিশিয়ে রান্না করে খাওয়ার স্বাদও আলাদা।

পেঁয়াজ পাতার স্বাস্থ্য উপকারিতাও রয়েছে; তাই মওসুম থাকতে থাকতে যতটুকু সামর্থ্য রয়েছে এরমধ্যে মাঝেসাঝে কিনে নানান ভাবে খেলে রসনা তুষ্ট থাকবে।

অনেকে অবশ্য ভাবেন পেঁয়াজ পাতা সালাদ ও সবজিতে দিয়ে ভাজি ছাড়া আর কিছুই রাঁধা যায় না। ফলে শীত ও শীতের পরও অনেকটা সময় বাজারে পেঁয়াজ পাতার দেখা মিললেও নিয়মিত কিনে খাওয়া হয়ে ওঠে না।

বিশেষ করে তাদের জন্যই এই মুখরোচক ও ঝটপট রেসিপি- পেঁয়াজ পাতার পাকোড়া।

যা যা লাগবে

পেঁয়াজ পাতা (কুচি কুচি করে কাটা) ১ আঁটি। বেসন ১ কাপ। কর্ন ফ্লাওয়ার আধা কাপ। সয়াবিন অথবা সূর্যমুখীর তেল ভাজার জন্য। লবণ পরিমাণ মতো। পানি পরিমাণ মতো। কালোজিরা আধা চা-চামচ। কাঁচা মরিচ (কুচি করে কাটা) ৪টি। জিরা গুঁড়া ১ চা-চামচ উঁচু উঁচু করে। ধনিয়া গুঁড়া ১ চা-চামচ ‍উঁচু উঁচু করে। আদা কুচি বা বাটা ১ চা-চামচ। হিং আধা চা-চামচ। লাল মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ। হলুদ গুঁড়া আধা চা-চামচ। ওরিগানো গুঁড়া আধা চা-চামচ। রোজমেরি গুঁড়া আধা চা-চামচ। বেসিল গুঁড়া আধা চা-চামচ, পেঁয়াজ (ঝিরি ঝিরি করে কাটা) ১টি (মাঝারি আকারের)।     

চটপট পাকোড়া   

পেঁয়াজ পাতা কুচির সাথে প্রথমে আধা কাপ বেসন ও আধা কাপ কর্ন ফ্লাওয়ার মিশিয়ে নিতে হবে। কালোজিরা, কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ, আদা, জিরা-ধনিয়া, লাল মরিচ, হলুদ গুঁড়া দিয়ে আবার মেখে নিতে হবে। এরপর হিং এবং ওরিগানো, বেসিল, রোজমেরি দিতে হবে।

যারা পিৎজ্জা বানান ঘরে, তাদের সংগ্রহে অনেক রকম হার্ব থাকে। এমন মজার মসলাগুলো আধা চামচ করে দেওয়া যেতে পারে। হিং ও ইতালিয়ান হার্ব হাতের কাছে না থাকলে দিতে হবে না; তাতে পেঁয়াজ পাতার পাকোড়ার একই সাথে মোলায়েম ও মচমচে স্বাদে কমতি হবে না।

এবার লবণ দিয়ে আবার সব মেখে নিতে হবে। সামান্য পানি ছিটিয়ে আবার মেখে নিতে হবে। এই মিশ্রণ ঘন বা পাতলা হবে না। বরং বেশ আঠালো হবে। মানে পেঁয়াজ পাতার গায়ে সব মিশ্রণ মাখো মাখো হয়ে লেগে থাকবে, আবার পেঁয়াজ পাতা একটু দেখাও যাবে।

প্রয়োজন মতো বাকি বেসন দিতে হবে। পানি যদি কমবেশি হয়ে যায়, বেসন ও কর্ন ফ্লাওয়ারও কমবেশি হবে পরিমাণে।

চালের গুঁড়াও মেশানো যায় এতে ২-৩ টেবিল-চামচ। অনেকের পেটে সয় না বলে, এই রেসিপিতে চালের গুঁড়া এড়িয়ে গেছি।

কর্ন ফ্লাওয়ারের পরিমাণ আরেকটু বাড়িয়ে আরও মচমচে পাকোড়া হতে পারে। আমি অবশ্য এই পাকোড়া বেশি মচমচে না করে স্বাভাবিক রেখেছি, তাতে পেঁয়াজ পাতা ভাজার পরও খেতে মোলায়েম লাগে।

পেঁয়াজ পাতার এই মিশ্রণ হাতে নিয়ে আলু ভর্তার মতো চেপে চেপে আকার দেওয়া যাবে না, তবে একসাথে ধরা যাবে দলার মতো; এমন ভাবে মাখা হলে পাকোড়া ভাজা যাবে।

দুই টেবিল-চামচ গরম তেল পাকোড়ার মিশ্রণে মিশিয়ে দেওয়া যায়। এভাবে যে কোনো চপ বা পাকোড়া মাখাতে গরম তেল মিশিয়ে দিলে, ভাজার সময় ফুলে ওঠে ও মচমচে হয়।

কড়াইতে তেল গরম হলে আঁচ মাঝারি রাখতে হবে। পাকোড়ার মিশ্রণ দলার মতো হাতে নিয়ে তেলে ছাড়তে হবে।

সাথে সাথে নাড়া যাবে না, দুই-চার সেকেন্ড পরে নাড়তে হবে; এরমধ্যে গরম তেলে পাকোড়ার মিশ্রণ পেঁয়াজ পাতার গায়ে গায়ে লেগে যাবে, ফলে পাকোড়া আর তেলে ছড়িয়ে যাবে না একদম।

পাকোড়ার দলা বেশি বড় না করে ছোট ছোট করে তেলে ছাড়তে হবে। তাতে ভেতরে বেসন মাখা কাঁচা থাকবে না।

পাকোড়া তেলে ভাজার সময় উল্টে দেওয়ার পর হালকা করে চেপে দিতে হবে, এতে ভেতরেও ভাজা হবে ঠিকঠাক।

পাকোড়ার গায়ে গাঢ় সোনালি রং ধরলে নামিয়ে নিতে হবে।

টমেটোর সস, ধনেপাতার চাটনি, কাঁচা মরিচের সস অথবা মেয়নেইজ দিয়ে পেঁয়াজ পাতার এই পাকোড়া খেতে খেতে আড্ডায় গল্পের তুবড়ি ছুটবে।

আরও রেসিপি-

Also Read: রেসিপি: কড়াইশুঁটির কচুরি

Also Read: রেসিপি: বেগুন ভাজা

Also Read: টোমেটো সস

Also Read: গার্লিক সস