মোজা নির্বাচনের ক্ষেত্রেও সাবধান হতে হবে।
Published : 27 Dec 2023, 02:56 PM
যেহেতু ঠাণ্ডার মাস তাই অনেকেই হয়ত ঘরে ও বাইরে মোজা পরেন। সেক্ষেত্রে মোজা ব্যবহারে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি।
মোজা কোথায় ও কতক্ষণের জন্য পরা হবে, এর তন্তু কী এবং পরিষ্কার কিনা ইত্যাদি।
প্রাপ্ত বয়স্কদের পায়ের পাতায় ছোট ছোট অনেক ঘামগ্রন্থি থাকে। জুতা পরা অবস্থায় এই গ্রন্থিগুলো আবদ্ধ থাকে। ফলে ঘাম আরও বেশি হয়।
বাংলাদেশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের বস্ত্র ও বয়নশিল্প বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাহমিনা রহমান বলেন, “মোজা নির্বাচন করার সময় প্রথমে কাপড় বা তন্তুর প্রতি নজর দেওয়া উচিত। যদি মোজা পায়ের আর্দ্রতা বাইরে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিবর্তে নিজেই শুষে নেয় তাহলে পায়ে অস্বস্তি বোধ হয় ও দুর্গন্ধও ছড়ায়।”
সুতি কাপড় পরতে আরামদায়ক হলেও মোজা হিসেবে এর ব্যবহার সুবিধাজনক নয়। এটা বেশি আর্দ্রতা শোষণ করে পায়ের ত্বক স্যাতস্যাঁতে করে ফেলে। যে কারণে পায়ে ফোস্কা পড়া, র্যাশ দেখা দেওয়া ইত্যাদির সমস্যা হতে পারে।
মোজা হিসেবে মিশ্র, সিন্থেটিক, পাতলা উল, নাইলন ইত্যাদি বেশ ভালো, জানান এই অধ্যাপক।
মোজা কেনার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মনে রাখার পরামর্শ দেন শাহমিনা রহমান। যেমন-
নিজের পছন্দের প্রাধান্য দেওয়া। হাঁটু পর্যন্ত বড়, মাঝারি, ছোট অথবা কেবল পায়ের তালু ঢাকে এমন যে কোনো মোজা বাছাই করা যেতে পারে।
মোজার কাপড় ভালো কি-না সে বিষয়ে আগে নিশ্চিত হতে হবে।
মোজা যেন খুব বেশি আটঁসাঁট বা খুব বেশি ঢিলা না হয়।
জুতার ভেতরে থাকবে মোজা, তাই কেউ দেখতে পাবে না- এমন ভেবে নিম্ম মানের মোজা পরা ঠিক না।
কোন পরিবেশে কেমন মোজা পরা উচিত, সে বিষয়ে ধারণা রাখতে হবে। যেমন- অফিসে খুব বেশি রঙিন মোজা না পরাই ভালো।
মোজার ধরন ভেদ
বিভিন্ন মাপের মোজা পাওয়া যায়। গোড়ালি পর্যন্ত ঢাকে এমন সবচেয়ে ছোট আকারের ‘অ্যাঙ্কল সক্স বা গোড়ালি মোজা এবং এর থেকে সামান্য বড় আকারের ‘কোয়ার্টার সক্সগুলো’ দৌঁড়ানো, বাইক চালানো ও যে কোনো স্বল্প উচ্চতার (লো-টপ) জুতায় ব্যবহারের উপযোগী।
হাইকিং, ব্যাকপ্যাকিং ও লম্বা বুট জুতার সঙ্গে পরার জন্য ‘ক্রু মোজা’ বেশি মানানসই। খেয়াল রাখতে হবে, মোজা যেন পায়ের আঙ্গুলগুলো বেশি পরিমাণে আঁটসাঁট করে না রাখে। না হলে পায়ে ফোস্কা পরার সম্ভাবনা থাকে।
মোজার যত্ন
সব সময় কয়েক জোড়া মোজা রাখা উচিত। প্রতিবার ধোয়া পরিষ্কার মোজা পরা উচিত বলে বলে করেন এই বিশেষজ্ঞ। কয়েক জোড়া মোজা থাকলে একটা ধুয়ে আরেকটা পরা যায়।
কয়েকদিনের জন্য বাইরে থাকার পরিকল্পনা থাকলে ব্যাগে একাধিক মোজা রাখা উচিত।
পায়ে মোজার দুর্গন্ধ সৃষ্টি হলে প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া কিছু উপায় অনুসরণের পরামর্শ দেন তিনি।
যেমন–
মোজা ধোয়ার সময় কুসুম গরম পানিতে সামান্য লবণ মিশিয়ে তাতে কয়েক মিনিট মোজা ডুবিয়ে রাখতে হবে । লবণ ছত্রাকের সংক্রমণ কমায় ফলে ঘামের কারণে পায়ে সৃষ্টি হওয়া ছত্রাক নাশ হয়। লবণ যুক্ত পানিতে পা ডুবিয়ে রাখলে ধীরে ধীরে এই সমস্যার সমাধান মেলে।
বেইকিং সোডা ও লেবু খুব কার্যকর। দুই চা-চামচ বেইকিং সোডার সাথে এক চামচ লেবুর রস যোগ করে ভালো মতো পায়ে মালিশ করে নিতে হবে। এটা স্ক্রাবের কাজ করে। এরপর পা ভালো মতো ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।
ভিনিগার পায়ের দুর্গন্ধ দূর করতে উপকারী। একটা বড় পাত্রে গরম পানিতে কয়েক চামচ ভিনিগার মিশিয়ে তাতে পা ডুবিয়ে বসে থাকতে হবে। নিয়মিত ব্যবহারের ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
পায়ের দুর্গন্ধ দূর করতে ল্যাভেন্ডার তেল, টি ট্রি তেল, পেপারমিন্ট বা লেবুর এসেনশল তেল কার্যকর। পায়ে ব্যবহারের ক্রিমের সাথে দুয়েক ফোঁটা এসেনশল তেল মিশিয়ে ব্যবহার করা আর্দ্রতা রক্ষার পাশাপাশি দুর্গন্ধ কমাতেও সহায়তা করে।
পায়ের ঘাম প্রতিরোধ করতে আর্দ্র রাখা জরুরি। তাই বাইরে যাওয়ার আগে ‘অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল’ উপাদান সমৃদ্ধ ক্রিম বা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উপকারী।
আরও পড়ুন
বাহুমূলের দুর্গন্ধ দূর করার উপায়