প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে সহজ পন্থায় ত্বকের ফাটা দাগ কমানো যায়।
Published : 15 May 2024, 08:26 PM
স্ট্রেচ মার্ক বা ত্বকে ফাটা দাগ একবার দেখা দিলে সেটা দূর করা বেশ কষ্টসাধ্য।
নানান কারণে দেহের বিভিন্ন অংশে বিশেষ করে নিতম্বে এই ফাটা দাগ দেখা দেয়। যেমন- গর্ভাবস্থা, ওজন হ্রাস বা হঠাৎ বৃদ্ধি। ‘ইলাস্টিন ফাইবার’য়ে টান পড়া ইত্যাদি।
যেসব কারণে হয়
ত্বক দ্রুত প্রসারিত বা সংকুচিত হওয়ার ফলে কোলাজেন ও ইলাস্টিনের গঠন ব্যহত হয়। হলে স্ট্রেচ মার্ক বা ত্বকে ফাটা দাগ দেখা দেয়।
‘স্ট্যাটস পার্ল জার্নাল’য়ে প্রকাশিত সমীক্ষা অনুসারে ত্বকে ফাটা দাগ হওয়ার নানান কারণগুলো হল-
দ্রুত ওজন হ্রাস ও বৃদ্ধি।
হরমোনের মাত্রা, কোলাজেন গঠন ও স্থিতিস্থাপক কোষের পরিবর্তন।
বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা, যেমন- মারফ্যান সিইন্ড্রোম, অ্যানোরেক্সিয়া ও দীর্ঘমেয়াদী যকৃতের রোগ।
গর্ভাবস্থার কারণেও নিতম্ব ও পেটের ত্বকে ফাটা দাগ হতে পারে।
এছাড়াও কৈশোরের হঠাৎ বৃদ্ধির কারণেও দেখা দিতে পারে।
প্রাকৃতিক উপাদানের সাহায্যে ফাটা দাগ দূর করার পন্থা
বিভিন্ন সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণার সূত্র ধরে ভারতীয় ত্বক বিশেষজ্ঞ ডা. ডিএম মাহাজান, হেল্থশটস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ত্বকের ফাটা দাগ কমাতে পারে এমন কয়েকটি ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানান।
অ্যালো ভেরা
অ্যালো ভেরা ব্যাক্টেরিয়া-রোধী উপাদান সম্পন্ন, এটা ফাটা দাগ সারাতে সহায়তা করে।
‘টেয়লর অ্যান্ড ফ্রান্সিস জার্নাল’য়ে প্রকাশিত গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, নিয়মিত অ্যালো ভেরার জেল ব্যবহার করার ফলে ফাটা দাগের পাশাপাশি চুলকানিও কমে।
ব্যবহার পদ্ধতি: একটা অ্যালো ভেরার পাতা কেটে তার থেকে জেল আলাদা করে নিতে হবে। ত্বকে জেল ব্যবহার করে ২০ থেকে ৪০ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলতে হবে।
নারিকেল তেল
‘ইন্ডিয়ান ডার্মাটোলজি অনলাইন জার্নাল’য়ে প্রকাশিত এক গবেষণা থেকে জানা যায়, নারিকেল তেল ত্বক আর্দ্র রাখতে এবং ফাটা দাগ কমাতে সহায়তা করে। এছাড়াও নারিকেল তেল ত্বকের কোলাজেন ভেঙে যাওয়া প্রতিরোধ করে। আর ফাটা দাগ হ্রাস করে।
ব্যবহার পদ্ধতি: দুতিন টেবিল-চামচ নারিকেল তেল একটা পাত্রে নিয়ে আলতোভাবে আক্রান্ত স্থানে মালিশ করতে হবে। তেল ত্বকে সম্পূর্ণ শুষে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
জলপাইয়ের তেল
‘ইন্ডিয়ান ডার্মাটোলজি অনলাইন জার্নাল’য়ে প্রকাশিত আরেকটি গবেষণা অনুসারে, জলপাইয়ের তেল ভালোভাবে আর্দ্রতা রক্ষা করতে পারে। এতে আছে খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বকের ক্ষতি কমায়। যেমন- চুলকানি ও ফাটা দাগ।
ব্যবহার পদ্ধতি: দুতিন টেবিল-চামচ ‘কোল্ড প্রেসড’ জলপাইয়ের তেল ফাটা দাগ আছে এমন স্থানে মেখে মালিশ করতে হবে। নিয়মিত ব্যবহারে ধীরে ধীরে দাগ কমে।
চিনি
“মৃত কোষ দূর করতে চিনি মৃদু এক্সফলিয়েটর হিসেবে কাজ করে এবং ত্বক সতেজ রাখে। ফলে হ্রাস পায় ত্বকের ফাটা দাগ”- বলেন ডা. মাহাজান।
ব্যবহার পদ্ধতি: স্ক্রাব তৈরি করতে চিনি, লেবুর রস ও জলপাইয়ের তেল মিশিয়ে নিতে হবে। মিশ্রণটি ত্বকের ফাটা দাগের ওপরে ১০ মিনিট মালিশ করে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
নিতম্বে ফাটা দাগ হওয়া রোধ করার উপায়
ডা. মহাজান নিতম্বে ফাটা দাগ প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে জানান।
ঘরোয়া উপাদান কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয় কী?
সাধারণত ঘরোয়া উপাদান ব্যবহার করা নিরাপদ এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন। অনেক ক্ষেত্রে জ্বলুনি, শুষ্কভাব বা চামড়া ওঠার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তাই ব্যবহারের আগে অল্প করে নিয়ে পরখ করে নেওয়া আর বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
আরও পড়ুন