বেইকিং সোডা ও ভিনিগার দিয়ে গোসলখানার পানি বের হওয়ার রাস্তা পরিষ্কার করা যায়।
সকালে ঘুম থেকে উঠে কিংবা সারাদিন পর বাসায় ফিরে গোসল করার মতো প্রশান্তি হয়ত অন্য কোথাও নেই। তবে গোসল করতে গিয়ে যদি দেখেন পানি যাওয়ার রাস্তাটা নোংরা হয়ে আছে, দুর্গন্ধ বের হচ্ছে তবে পুরো ব্যাপারটাই বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
গোসলখানার পানি যাওয়া রাস্তাটা ময়লা জমে আটকে গেলেই এই বিপত্তি বাঁধে। আর তা সঠিকভাবে পরিষ্কার করার পদ্ধতি জানা থাকলে সমস্যার সমাধান করাও সম্ভব।
তবে পথ যদি পুরোপুরি আটকে যায়, পানি একেবারে অপসারণ না হয়ে গোসলখানায় পানি জমতে শুরু করে সেক্ষেত্রে ‘সুইপার’ ডেকে আনতেই হবে।
রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে জানানো হল বিস্তারিত।
কতদিন পর পর পরিষ্কার করা উচিত?
গোসলাখানার পানির রাস্তা আটকে যাওয়া পেছনে প্রধান কারণ হল দলা পাকানো চুল। সাধারণ ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রতি মাসে একবার এই পানি নিষ্কাশনের পথ পরিষ্কার করা উচিত।
তবে গোসলখানার অধিকাংশ ব্যবকারীর যদি লম্বা চুলের অধিকারী হয়ে থাকে তবে প্রতি সপ্তাহের একবার পরিষ্কার করতে হবে। এজন্য ব্যবহার করতে হবে ‘টয়লেট প্লানজার’ কিংবা ‘ড্রেইন স্নেক’।
এছাড়া ব্যবহার করা যায় শক্তিশালী কোনো রাসায়নিক উপাদান। তবে সেক্ষেত্রে ব্যবহারবিধি ভালোভাবে জানতে হবে এবং অনুসরণ করতে হবে।
পানি নিষ্কাশনের পথ নিয়মিত পরিষ্কারের জন্য বেইকিং সোডা, ‘ডিসটিলড হোয়াইট ভিনিগার’, ‘ক্লোরিন ব্লিচ’ ইত্যাদি ব্যবহার করা যায়।
মনে রাখতে হবে, একাধিক পরিষ্কারক উপাদানে একসঙ্গে মেশানো উচিত নয়। যেমন ‘ক্লোরিন ব্লিচ’ আর ভিনিগার একসঙ্গে মেশালে বিষাক্ত গ্যাস তৈরি হবে।
তাই না বুঝে এগুলো একসঙ্গে ব্যবহার করা যাবে না। প্রয়োজনে একটা ব্যবহার করে ধুয়ে ফেলে আরেকটা ব্যবহার করতে হবে।
টয়লেট প্লাঞ্জার ব্যবহারের উপায়
পানি যাওয়ার রাস্তা আটকে গেলে প্রথম উপায় হল ‘টয়লেট প্লাঞ্জার’।
প্রথমে পানি যাওয়ার রাস্তাটা আটকে গোসলাখানার মেঝেতে পানি জমাতে হবে। এবার পানি যাওয়া রাস্তা খুলে গিয়ে তার ওপর ‘টয়লেট প্লাঞ্জার’ বসিয়ে চাপ দিতে হবে।
পানির চাপে পানি অপসারণের পথ খুলে যাবে। যতক্ষণ পানি যাওয়া শুরু না করবে ততক্ষণ চাপ দিতে থাকতে হবে।
ড্রেইন স্নেক ব্যবহারের উপায়
এটা ব্যবহার করা খুবই সহজ। প্রথমে পানি যাওয়া রাস্তার ওপরের ঢাকনাটি খুলে নিতে হবে। এবার আংটাওয়ালা ‘ড্রেইন স্নেক’টি ভেতরে ঢুকিয়ে দিয়ে ভেতরের ময়লাগুলো টেনে বের করে আনতে হবে। সবশেষে প্রচুর পরিমাণে পানি ঢালতে হবে।
রাসায়নিক উপাদান ব্যবহারের ক্ষেত্রে
রাসায়নিক এই পরিষ্কারক উপাদানগুলো মুলত ‘অ্যালকালাইন বেইজড’। এতে থাকে সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড ও অন্যান্য রাসায়নিক উপাদান যা পানি যাওয়া রাস্তায় আটকে থাকা যে কোনো কিছু নরম করে বা গলিয়ে দেয়।
তবে এগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে খুব সাবধান থাকতে হবে। শক্তিশালী এই রাসায়নিক উপাদানগুলো ত্বক, চোখ ও শ্বাসতন্ত্রের জন্য মারাত্মক হুমকির। তাই ব্যবহারের সময় হাতে ‘গ্লাভস’ পরতে হবে, চোখে চশমা পরতে হবে, নাক, মুখ ঢেকে নিতে হবে।
প্যাকেট কিংবা কৌটার গায়ে লেখা ব্যবহারবিধি পড়তে হবে এবং অক্ষরে অক্ষরে মানতে হবে। এগুলো ব্যবহারের পর ‘টয়লেট প্লাঞ্জার’ কিংবা ‘ড্রেইন স্নেক’ ব্যবহার করা যাবে না।
বেইকিং সোডা ও ভিনিগার ব্যবহারের উপায়
চুল আটকে থাকলে তা বেইকিং সোডা ও ভিনিগার দিয়ে পরিষ্কার করা যাবে না। তবে সাবান ও অন্যান্য ময়লা পার হওয়ার কারণে পাইপের গায়ে যে আস্তর পড়ে তা দূর করতে পারবে। এতে পানি নিষ্কাশনের পাইপ দিয়ে পানি পার হবে দ্রুত, কমবে দূর্গন্ধ ও জীবাণুর মাত্রা।
প্রথমে চার কাপ পরিমাণ পানি একটি কেতলিতে ফুটিয়ে নিতে হবে। তাতে যোগ করতে হবে এক কাপ বেইকিং সোডা আর এক কাপ ভিনিগার।
এবার তা পাইপের মধ্যে ঢালতে হবে ধীরে ধীরে। ১০ মিনিট অপেক্ষা করে আরও গরম পানি ঢালতে হবে। পাইপ প্লাস্টিকের হলে ঠাণ্ডা পানি ব্যবহার করতে হবে, অন্যথায় পাইপের স্থায়িত্ব কমবে।
আরও পড়ুন