ঘরের দেয়ালে ‘ড্যাম্প’ রোধ করতে

যদি ঘরের দেয়ালে এরই মধ্যে ভেজাভাব খেয়াল করেন তবে হয়ত দেরি করে ফেলেছেন।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 June 2021, 10:24 AM
Updated : 24 June 2021, 10:26 AM

ঘরের ছাদ কিংবা চারপাশের দেয়ালে কোনো ভেজা অংশ যদি চোখে পড়ে তবে বুঝতে বাড়ির পানির লাইন কিংবা পয়নিষ্কাশন লাইনে কোনো সমস্যা হয়েছে। আর সেটার প্রভাব ঘরের কোনো দেয়ালে দেখা দেওয়া মানে ইতোমধ্যেই আপনি পদক্ষেপ নিতে দেরি করে ফেলেছেন, সমস্যা গুরুতর আকার ধারণ করে ফেলেছে।

তবে আশা ফুরিয়ে যায়নি। সমস্যার কারণ খুঁজে বের করে তার সমাধান করতে পারলে ভবিষ্যত ক্ষতি থামানো যাবে।

‘লিভস্পেস’ নামক গৃহসজ্জা-বিষয়ক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে জানানো হল বিস্তারিত।

ভেজা ছোপের অবস্থান

ভেজা ছোপ যদি হয় ছাদ, দেয়াল কিংবা কোনো কোনায় তবে তার সম্ভাব্য কারণ বাড়ির পানির লাইনে কোনো সমস্যা হওয়ায় তা আটকে গেছে এবং ওই অংশে পানি ঝরছে। সেই পানিই দেয়ালের একপাশে অনবরত শোষিত হওয়া কারণে দেয়ালের অপরপাশেও ভেজা ছোপ তৈরি হচ্ছে।

যদি মেঝেতে এই ভেজা ছোপ দেখা দেয় তবে হয়ত মেঝের নিচের মাটি থেকে আর্দ্রতা পাওয়ার কারণে তা হচ্ছে। আবার মেঝের নিচে কোনো পানির লাইনে সমস্যা হলেও এমনটা হতে পারে।

আবার ঘর যদি স্যাঁতসেঁতে হয় কিংবা তা কোন স্থান থেকে শুরু হয়েছে তা বোঝা না যায় তবে বুঝতে হবে ঘরের ভেতরেই অতিরিক্ত আর্দ্রতা সৃষ্টি হয়েছে।

ঘরের পর্যাপ্ত আলো বাতাস চলাচলের সুযোগ না থাকলে এমনটা হয় বিশেষত, বর্ষাকালে।

‘সিল্যান্ট’, ‘পাটি’ কিংবা ‘গ্রাউট’ দিয়ে দেয়াল কিংবা পানির লাইনের ফাটল আটকে দিতে পারবেন।

ঘরের বাইরের দিকের দেয়ালে পানিরোধক রং বা ‘ওয়াটার প্রুফিং কোটিং’ ব্যবহার করতে হবে, যাতে বৃষ্টি কিংবা আর্দ্র পরিবেশ ঘরের ভেতরকে স্যাঁতসেঁতে করতে না পারে।

মাটি থেকে বাড়ির মেঝেতে যাতে আর্দ্রতা পৌঁছাতে না পারে সেজন্য মেঝে তৈরির সময় ‘ড্যাম্প প্রুফ কোর্স’ ব্যবহার করতে হবে।

মাটি আর মেঝের গাঁথনির মাঝে এই আস্তর থাকে, যা মাটির আর্দ্রতা মেঝেতে পৌঁছাতে দেয় না।

আবার ঘরের ভেতরের অংশের দেয়ালে ব্যবহার করতে পারেন সিলিকনভিত্তিক রং, যার আছে পানিরোধক গুন।

ছত্রাক সংক্রমণ দমানোর উপায়

বর্ষাকালের স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া কারণে প্রায়ই ঘরের দেয়ালে কালচে রংয়ের ছত্রাকের ছোপ তৈরি হতে দেখা যায়। তবে সকল ছত্রাকের আক্রমণের তৈরি হওয়া এই ছোপ কালো হয় না।

দেয়াল ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে ছত্রাক সংক্রমণ হয় যা মানুষ খালি চোখে দেখতেই পায় না। আর্দ্র ও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে এই ছোপ দেখা যায় যা ক্ষেত্রবিশেষে হতে পারে বিষাক্ত।

অনেকসময় দেয়ালে তৈরি হয় ঠিকই কিন্তু কালচে ও ছোপ আকারে দেখা না দেওয়ায় চোখে পড়ে না।

লক্ষণ

অবহেলা করলে ছত্রাকের এই সংক্রমণ প্রচণ্ড বিষাক্ত হয়ে উঠতে পারে। প্রথমেই যে লক্ষণটির প্রতি নজর রাখতে হবে তা হল দেয়ালের কোনো অংশের রংয়ে বুদবুদ দেখা দিচ্ছে কি-না।

দেয়ালের রংয়ের ভেতর আর্দ্রতা জমে এই বুদবুদ তৈরি হয়। এমনকি সেই বুদবুদের ভেতরে ছত্রাকের ছোপও থাকতে পারে।

ঘরের কোথাও ছত্রাকের আক্রমণ হলে ঘরের বাসিন্দাদের চোখে পানি আসা, চুলকানি, কাশি, সর্দি

সংক্রমণ দূর করার উপায়

ব্লিচ এই ছত্রাক সংক্রমণ দূর করতে কার্যকর।

দেয়াল, মেঝে, শৌচাগার, ঘরের বিভিন্ন স্থানের পাপোশ ইত্যাদি ব্লিচ দিয়ে পরিষ্কার করে ছত্রাক ছোপ দূর করতে পারবেন।

‘বোরাক্স’ কিংবা ভিনিগার দিয়ে ছত্রাক সংক্রমিত অংশ ঘষে পরিষ্কার করলেও কাজ হবে।

শৌচাগারে ছত্রাক সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সেখানে ‘এগজস্ট ফ্যান’ ব্যবহার করতে হবে। রান্নাঘর ও শৌচাগারে কোথাও পানি ‘লিক’ হলে তা দ্রুত মেরামত করতে হবে। 

আলো-বাতাস চলাচল

স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ দূর করার জন্য ঘরের ভেতরে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখা অত্যন্ত জরুরি।

‘ক্রস ভেন্টিলেইশন’ ঘরের আর্দ্রতা কমাতে সবচাইতে উপকারী। আর শুধু বর্ষাকালে নয়, আলো-বাতাসের প্রবাহ প্রয়োজন পুরো বছর, সব ঋতুতে। তাই ঘরের দরজা জানালা যথাসম্ভব খোলা রাখতে হবে।

আরও পড়ুন