যে কারণে রাতে খেলে ওজন বাড়ে

রাত গভীরে বেশি খেলে বাড়বে ওজন দিনে দিনে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Feb 2023, 07:56 AM
Updated : 13 Feb 2023, 07:56 AM

কখন কী খেতে হবে সেটা জানা না থাকলে ওজন কমানো কষ্টকর হয়ে যায়।

আর রাতে খেলে যে ওজন বাড়ে এ কথা নতুন করে বলার কিছু নেই। তবে দিনের চাইতে সন্ধ্যার পর, বিশেষ করে গভীর রাতে খেলে ওজন বাড়ার কারণ নিয়ে প্রশ্ন জাগতেই পারে।

নিউ ইয়র্কয়ের পুষ্টিবিদ ‘স্লিম ডাউন উইথ স্মুদিস’ বইয়ের লেখক লরা বিউর‌্যাক এই বিষয়ে তিনটি কারণ উল্লেখ করেন ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে।

চাহিদার চাইতে বেশি ক্যালরি গ্রহণ করা

সন্ধ্যার পর কম খাওয়া উচিত।

বিউর‌্যাক ব্যাখ্যা করেন, “দিন শেষে অপ্রয়োজনীয় ক্যালরি গ্রহণ করার ফলে শরীরে সেটা জমা হয়। কারণ বেশিরভাগের ক্ষেত্রেই সন্ধ্যার পর দেহের শক্তি খরচের পরিমাণ কমে আসে।”

সারাদিন ধরে যা খাওয়া হয় সেখান থেকেই কাজের জন্য শক্তি পাওয়া যায়।

বিউর‌্যাক বলেন, “আমরা প্রায় সবাই সন্ধ্যার পর নাস্তা করতে ভালোবাসি আর রাতে ভারী খাবার খাই। ফলে শরীরের শক্তি খরচে এক ধরনের ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়।”

আসল বিষয় হল, সন্ধ্যা থেকে রাতে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত দিনের চাইতে কম শক্তি খরচের দরকার হয়। যে কারণে রাতে বেশি খেলে সেটা খরচ না হয়ে শরীরেই জমা হতে থাকে।

ঘুমের আগে খাবার খেলে হজমের সমস্যা

খাওয়ার কারণে শুধু ঘুম আসতেই দেরি হয় না, এই বদভ্যাসের কারণে হজমতন্ত্রে অস্বস্তি ও গ্যাসের সমস্যাও তৈরি করতে পারে। ফলে রাতের ঘুমের বারোটা বাজবেই।

বিউর‌্যাক বলেন, “ভারী, চর্বিযুক্ত খাবার হজম হতে সময় লাগে। এই ধরনের খাবার রাতে খেলে ঘুমের সমস্যা হবেই। পাশাপাশি পেট অতিরিক্ত ভরা থাকার কারণে বাড়তে পারে হৃদস্পন্দনের গতি সেই সঙ্গে বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যাও দেখা দেয়। যে কারণে ঘুম ভালো হয় না। আর এই সব মিলিয়েই ওজন কমানোর লক্ষ্য ভ্রষ্ট হতে থাকে।”

উচ্চ ক্যালরিযুক্ত অস্বাস্থ্যকর খাবার

গভীর রাতে মুখোরোচক খাবারই চিবাতে ইচ্ছে করে। গাজর বা শাক-পাতা নয়। মনের চাহিদা মেটাতে গিয়ে খাওয়া হয়ে যায় উচ্চ ক্যালরির খাবার। আর ওজন কমানোর ক্ষেত্রে এই ধরনের খাদ্যাভ্যাস ত্যাগ করতে বলা হয়।

বিউর‌্যাক বলেন, “ভাজা, সস ও ক্রিম যুক্ত সরল শর্করা ধরনের খাবার ওজন কমানোর অন্তরায়।”

যুক্তরাষ্ট্রের ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক জানাচ্ছে, চিপস ও এই ধরনের লবণাক্ত খাবারে চর্বি ও শর্করা থাকে বেশি। এসব খাবারসহ অ্যালকোহল, ক্যাফেইন ও মিষ্টি ধরনের খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।

যদি মিষ্টি খেতে পছন্দ হয় তবে ওজন কমানোর ক্ষেত্রে কষ্ট করে হলেও ক্যান্ডি, চকলেট, কেক, বিস্কুট এসব খাবার এড়াতে হবে। তবে সপ্তাহের একদিন ‘চিট ডে’ পালন করাই যায়। সেক্ষেত্রে দিনের আলো থাকতেই নিজেকে ট্রিট দিন। রাতে নয়।

যেভাবে রাতে কম খাওয়ার অভ্যাস করা যায়

বিউর‌্যাক পরামর্শ দেন, “এক্ষেত্রে খাওয়ার অভ্যাস উল্টিয়ে ফেলতে হবে। মানে সারা দিন ধরে খেতে হবে, রাতে খাওয়ার পরিমাণ কমাতে হবে।”  

আর সারাদিন ধরে ভালো মতো খেলে সন্ধ্যার পর খিদার পরিমাণও কমে আসবে। তখন টিভিতে প্রিয় অনুষ্ঠান দেখার সময় খাইখাইভাবটাও কাজ করবে না।

হজম কাজে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টার বিশ্রাম: বিউর‌্যাক এই পদ্ধতিকে বলছেন ‘ডাইজেস্টিভ রেস্ট’। এই সময়ের মধ্যে কোনো খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

ধরা যাক, সন্ধ্যা ৭টার সময় খাবার খেয়েছেন। এক্ষেত্রে পরদিন সকাল ৭টার আগে নাস্তা করা যাবে না। এই ১০ থেকে ১২ ঘণ্টার মধ্যে পানি পান করা যেতে পারে।

আরও পড়ুন:

Also Read: সস্তায় স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পন্থা

Also Read: ওজন কমাতে রাতের খাবারের সঠিক সময়

Also Read: খাদ্যাভ্যাস ঘুমের ওপর প্রভাব ফেলে

Also Read: লক্ষণ যখন হজমে গণ্ডগোল