‘সারাদিন আমি যেন ভালো হয়ে চলি’ শিরোনামে বইটি প্রকাশ করেছে শৈশবপ্রকাশ।
Published : 21 Feb 2024, 12:50 PM
অমর একুশে বইমেলায় পাওয়া যাচ্ছে সাংবাদিক, শিশুসাহিত্যিক এবং বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য আখতার হুসেনের উপদেশমূলক কবিতাবই ‘সারাদিন আমি যেন ভালো হয়ে চলি’।
শৈশবপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত বইটির প্রচ্ছদ ও আঁকা নিয়াজ চৌধুরী তুলির। মূল্য ২০০ টাকা। বইটি পাওয়া যাবে মেলার ৭৪১-৭৪২ নাম্বার স্টলে।
বইটির ফ্ল্যাপে প্রকাশক লিখেছেন, “বিংশ শতাব্দীর চল্লিশ দশকের পর থেকে উপদেশমূলক কবিতা লেখার চল উঠেই গিয়েছিল বলা যায়। ওই সময়পরিসরে বাংলা সাহিত্যের জীবিত প্রবীণ বা তরুণ কোনো কবিরই কলম এ জাতীয় কবিতা রচনা করা থেকে ছিল বিরত। তারপর পেরিয়ে গেছে বিংশ শতাব্দীর পাঁচ, ছয় ও সাতের দশক। তখনো লেখা হয়নি। আটের দশকে এসে এককভাবে উপদেশমূলক কবিতা লিখতে থাকেন আখতার হুসেন। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশও হতে থাকে। সেই সব উপদেশমূলক কবিতারই সংকলন ‘সারাদিন আমি যেন ভালো হয়ে চলি’ নামের এ বই। নতুন করে প্রাণ ফিরে পেল এই ভাব, ভাবনা ও রীতির কাব্যশৈলী। চরম নৈতিক অবক্ষয়ের এই কালে এ বইয়ের প্রতিটি কবিতার পাঠ অশেষ গুরুত্ববহ।”
বইটিতে স্থান পাওয়া কবিতাগুলো হলো- ‘হোক না সে বই’, ‘প্রার্থনা’, ‘ঠিক সেই ক্ষণে’, ‘ছলে আর বলে’, ‘সেই দেশ’, ‘পাথরখণ্ড এক’, ‘যে পুরুষ’, ‘কেবল একটি দোষ রয়েছে তার’, ‘জ্ঞানী তো তাঁরাই’, ‘দুজনই অন্ধ হলে’, ‘ধরেছি বুঝি-বা জ্ঞানবৃক্ষের গুঁড়ি’, ‘খেতগুণে ফসল’, ‘ছোট তবু ছোট নয়’, ‘কাজে হব বড়’, ‘ভোরের বেলা গোলাপ ফোটে’, ‘হরবোলা’, ‘চাই শুধু ধ্যান’, ‘বহু পুরাতন কথা’, ‘আছে কি মূল্য সেই কুকুরের’, ‘যে জ্ঞানী বলেন, ‘কুয়োতে জন্ম যার’, ‘ছোটলোক ও বড়লোক’, ‘ক্ষুদ্রেরা ক্ষুদ্রই’, ‘পুতুল না হলে’, ‘এক ভাঁড় দুধ’, ‘মানুষের পরিচয়’, ‘সঠিক অর্থে’, ‘একটিকে ছাড়া’, ‘দেশের কান্ডারি যিনি’, ‘দেহে নয়, মনে’, ‘ধনী আর জ্ঞানী’, ‘পথ ও পথিক’, ‘এঁদো সে ডোবার দিকে’, ‘অন্ধের দাস তারা’, ‘জ্ঞানীদের মন’, ‘মানব মহান’, ‘কেন?’, ‘ক্ষুদ্র বলেই ক্ষুদ্র তো নয়’, ‘বংশে যতই হোক না দড়’, ‘তোমার আলোর মুখ দেখে না যে ঘর’, ‘সারা পৃথিবীর’, ‘মূল্য সমান’, ‘তুলনা’ এবং ‘মূল্যহীন সেই বাগান’।
বইটির ভূমিকায় সুবলকুমার বণিক লিখেছেন, “উপদেশমূলক কবিতা, ভাষান্তরে যাকে আমরা নীতিকবিতা বলেও অভিহিত করি, নিঃসন্দেহে কাব্যসাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা। শাখা না বলে হয়তো প্রশাখাও বলা চলে। কিন্তু এটা খুব দুঃখজনক যে, সাহিত্যের এই শাখা কিংবা প্রশাখাটি দিনে দিনে পত্রপুষ্পশূন্য হয়ে পড়েছে। আমাদের একালের কবিরা নীতিবোধকে উপজীব্য করে আর কোনো কবিতা লিখতে আগ্রহী নন। সমাজ থেকে ন্যায়নীতি ও নৈতিকতাবোধ যেভাবে অপসৃত হয়েছে, ঠিক তার সঙ্গে তাল রেখে যেন হারিয়ে গেছে নীতিকবিতাও...সবাই মুখ ফিরিয়ে নিলেও এ ধরনের কবিতা রচনায় যিনি নিজেকে নিবেদিত করেছেন, তিনি আমাদের স্বনামধন্য শিশুসাহিত্যিক আখতার হুসেন।”
আমাদের শিশুসাহিত্যের অন্যতম পুরোধা পুরুষ বলা হয় আখতার হুসেনকে। ১৯৪৫ সালের পহেলা নভেম্বর জন্ম নেওয়া আখতারের পেশাগত জীবনের শুরু সাংবাদিকতা দিয়ে। চাকরি করেছেন দেশের অনেক পত্রপত্রিকায়। তিনি বাংলা একাডেমির ফেলো।
তার প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘সমুদ্র অনেক বড়’, ‘রামধনুকের সাঁকো’, ‘দি টাইগার ও অন্যান্য গল্প’ (গল্প), ‘উল্টোপাল্টা’, ‘হালচাল’ (ছড়া), ‘আমার দুটো ডানা’ এবং ‘ও হাওয়া ও হাওয়া’ (কবিতা), ‘পাজি বেড়ালের শাস্তি’, ‘ফ্রিডম ফাইটার’, ‘কর্ণকুসুম ও কালোপাখার প্রজাপতি’ (উপন্যাস), ‘খেলাঘরের পুতুলগুলো’ (নাটিকা) ও ‘ছোটদের চারণ কবি মুকুন্দদাস’ (জীবনী) ইত্যাদি।