শামস আরেফিন পৃথিবীতে কিন্তু শুধু ঘুড়ির জন্যই কয়েকটি আস্ত জাদুঘরই আছে। আর এই জাদুঘরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়টির নাম ওয়েইফাং।
Published : 23 Jul 2013, 03:04 PM
পৃথিবীতে কিন্তু শুধু ঘুড়ির জন্যই কয়েকটি আস্ত জাদুঘরই আছে। আর এই জাদুঘরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়টির নাম ওয়েইফাং।
পৃথিবীতে কিন্তু শুধু ঘুড়ির জন্যই কয়েকটি আস্ত জাদুঘরই আছে। আর এই জাদুঘরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়টির নাম ওয়েইফাং। অবস্থিত চিনের শানতং প্রদেশের ওয়েইফাং শহরে। শহরের নামেই জাদুঘরটির নাম। জাদুঘরটিতে রয়েছে বিচিত্র সব ঘুড়ির সংগ্রহ। আছে চিনা ঘুড়ির ইতিহাসও। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ঘুড়ির এই জাদুঘরটির থিম হচ্ছে, ‘Silver line link the world, kites spread friendship’।
আয়তনে জাদুঘরটি বিশাল-- প্রায় ৮ হাজার ১০০ বর্গমিটার। এর মূল নকশা করা হয়েছে বিশেষ এক রকমের ঘুড়ির মতো করে। এই ঘুড়িটি ওয়েইফাংয়ের পৌরাণিক এক ড্রাগনের আকৃতিতে বানানো। ছাদের টাইলসগুলো টিয়া রংয়ের। দেখে মনে হবে যেন আকাশে ড্রাগন উড়ছে। চিনের নকশার তুলনায় জাদুঘরটির নকশা ব্যতিক্রমই বলতে হবে। আর জাদুঘরের ঠিক সামনেই আছে একটি ডানা মেলা পাখির বিরাট প্রতিকৃতি।
জাদুঘরটি যেহেতু ঘুড়ির, জাদুঘর জুড়ে সাজানো আছে নানা ধরনের ঘুড়ি। কোনো ঘুড়ি অনেক দামি, কোনো ঘুড়ি দেখতে একদমই ঘুড়ির মতো নয়। সেগুলোর কোনোটা দেখতে হুবহু কোনো প্রাণীর মতো। জাদুঘরটিতে আছে অন্তত এক হাজারেরও বেশি রকম ঘুড়ি। শুধু ঘুড়িই নয়, জাদুঘরটিতে আরও আছে ঘুড়ির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেক কিছুই; বিভিন্ন ধরনের ছবি, হস্তশিল্প, এমনি সব জিনিসপত্র। এককথায়, জাদুঘরটি পুরো চিনা সংস্কৃতিরই প্রতিনিধিত্ব করে। অবশ্য জাদুঘরটিতে যে বিদেশি কোনো ঘুড়িও নেই, তাও নয়।
এ জাদুঘরে ঘুড়িগুলো প্রদর্শিত হয় ছয়টি আলাদা গ্যালারিতে। শুধু গ্যালারিই নয়, এখানে আছে একটি পেক্ষাগৃহও। সেখানে চিনা ইতিহাস-ঐতিহ্যভিত্তিক বিভিন্ন চলচ্চিত্র দেখানো হয়।
জাদুঘরটি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের আয়োজনও করে। আয়োজন করে নানা প্রদর্শনীর। জাদুঘরটির এ রকম একটি আয়োজন কিন্তু রীতিমতো ভুবনবিখ্যাত। প্রতিবছর ২০-২৫ এপ্রিল ওয়েইফাং জাদুঘর আয়োজন করে ঘুড়ি উৎসবের। আর তাতে অংশগ্রহণ করেন নানা দেশের ঘুড়ি-বিশেষজ্ঞ আর ঘুড়ি-প্রেমিকরা। উৎসব উপলক্ষে শহরটি রাজকীয় সাজে সাজানো হয়। স্থানীয় লোকসংস্কৃতির বিভিন্ন অনুষ্ঠানও আয়োজিত হয় উৎসবটিকে ঘিরে। যেমন ধরে চিনাদের বিখ্যাত আগুন খেলা।
চিনের রাজধানী বেইজিং থেকে আকাশপথে সোয়া একঘণ্টাতেই পৌঁছানো যায় ওয়েইফাংয়ে। সড়ক যোগাযোগও মন্দ নয়। জাদুঘরটি সারাবছরই পর্যটকদের ভিড়ে গমগম করে। পর্যটকদের জন্য কাছেই আছে পাঁচতারা হোটেল। তবে সঙ্গে ঘুড়ি উৎসবের মজা নিতে হলে, যেতে হবে এপ্রিলেই।
বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকম/শামস আরেফীন/এনজে/আরএস/জুলাই ৪/১৩