নতুন অর্থবছরের জন্য সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে যে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে তাতে বরাবরের মত ‘অবহেলা’ করা হয়েছে বলে মনে করছেন সাংস্কৃতিক কর্মীরা।
সংস্কৃতি খাতকে ‘অবহেলার’ প্রতিবাদ এবং বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আগামী শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।
সংগঠনটি মনে করছে, এবারও জাতীয় বাজেটে সংস্কৃতিকে ‘অবহেলা’ করা হয়েছে, এই বাজেট সংস্কৃতিচর্চাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য অপ্রতুল। তারা এবার বাজেটের অন্তত ১ শতাংশ বরাদ্দ আশা করেছিলেন।
বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন।
তাতে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জন্য ৬৯৯ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে, যেখানে বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এই পরিমাণ ছিল ৬৬২ কোটি টাকা।
সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এবার কিন্তু বাজেটে সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ কমেছে। যে ৬২ কোটি টাকা বেড়েছে, সেটা তো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর কারণে সেখানেই খরচ হবে, বরং ঘাটতি থাকবে।”
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, বাঙালি সংস্কৃতির অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং ভাষা, সাহিত্য, শিল্প, সঙ্গীত, নাটক ইত্যাদির বিকাশে সরকার ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দেশজ সংস্কৃতি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বিকাশ, মুক্তিযুদ্ধ ও সমকালীন শিল্প-সাহিত্যের গবেষণা, প্রদর্শন, প্রকাশনা, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনসমূহ চিহ্নিতকরণ, খনন, সংস্কার, সংরক্ষণ ও প্রদর্শন, সৃজনশীল সৃষ্টিকর্মের কপিরাইট সংরক্ষণসহ ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ, ভাষা শহীদ দিবস এবং বাংলা নববর্ষসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসসমূহ ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনায় উদযাপন করা হচ্ছে।
“দেশের ৭টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতির সংরক্ষণ, চর্চা ও বিকাশে আমরা বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছি। মনীষী ও গুণীজনের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ নিয়মিত পুরস্কার, সংবর্ধনা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া অসচ্ছল সংস্কৃতিসেবী এবং সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক সহায়তা প্রদান কার্যক্রমও অব্যাহত আছে।”
তবে প্রতিবারই সংস্কৃতির বাজেটে অবহেলা করা হয় দাবি করে সাংস্কৃতিক জোটের গোলাম কুদ্দুছ বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম, এবার সরকার সংস্কৃতির বরাদ্দ বাড়াবে। কারণ সারা দেশে তরুণ প্রজন্মকে মানবিক করে তুলতে হলে একটা বড় রকম সাংস্কৃতিক জাগরণ প্রয়োজন।
“তার জন্য জাতীয় মোট বাজেটের অন্তত ১ শতাংশ সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ দিতে হবে৷ এবারও সেটা করা হয়নি, আমরা হতাশ।“