ভারতের স্বাধীনতা দিবসে সোশ্যাল মিডিয়ায় অক্ষয় জানিয়েছে, তিনি ভারতের নাগরিকত্ব পেয়েছেন।
Published : 15 Aug 2023, 05:53 PM
অবশেষে কটাক্ষের খেতাব ‘কানাডা কুমার’ থেকে মুক্তি নিলেন বলিউড অভিনেতা অক্ষয় কুমার। দেশের স্বাধীনতা দিবসে ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার খবর জানালেন তিনি।
নাগরিকত্ব নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে সমালোচনায় বিদ্ধ অক্ষয় কানাডায় পাসপোর্ট পরিবর্তনের জন্য আবেদন করেছিলেন অনেক আগেই।এরপর ভারতীয় পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন ২০১৯ সালে। কিন্তু মাঝে বাধ সাধে মহামারী।
টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, মঙ্গলবার ভারতের স্বাধীনতা দিবসে সোশ্যাল মিডিয়ায় অক্ষয় জানিয়েছে, তিনি ভারতের নাগরিকত্ব পেয়েছেন।
অক্ষয় থাকেনও ভারতে, করও দেন জন্মভূমির দেশেই। সেখানে তিনি একের পর এক সিনেমাও করে যাচ্ছেন। তবুও কানাডিয়ান নাগরিকত্ব নেওয়ার জন্য নানা ভাষায় সমালোচনা-বিদ্রুপ শুনতে হয়েছে অক্ষয়কে। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে কানাডা পর্ব শেষ করলেন তিনি।
ইনস্টাগ্রামে ছবি দিয়ে অক্ষয় লিখেছেন, “মন এবং নাগরিকত্ব, দুটোই ভারতীয়। স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা। জয় হিন্দ।“
চলতি বছরের শুরুতে অক্ষয় টুইটে বলেছিলেন, “আমি আমার কানাডিয়ান পাসপোর্ট পরিবর্তন করার জন্য আবেদন করেছি এবং সেখানকার নাগরিকত্ব পরিবর্তন হলেই...।
নির্মাতা প্রযোজক করণ জোহর তার শোতে অক্ষয়কে বলেছিলেন, “তুমি কি জানো, লোকে তোমাকে কানাডা কুমার ডাকে?“
অক্ষয়ের ভাষ্য ছিল “ভারতই আমার কাছে সবকিছু। আমি যা কিছু অর্জন করেছি, যা কিছু পেয়েছি তা এখান থেকেই। কানাডার নাগরিকত্ব নেওয়ার কারণ না জেনে মানুষ যখন কিছু বলে, তখন খারাপ লাগে।
বলিউডের ‘খিলাড়ি’ অক্ষয় কুমারের জন্ম পাঞ্জাবের অমৃতসরে, বড় হওয়া দিল্লিতে। তার কানাডার পাসপোর্ট নেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয় ২০১৯ সালে ভারতের লোকসভা নির্বাচনের সময়।
ওই নির্বাচনে বলিউডের এক সময়ের নায়িকা টুইঙ্কেল খান্না ভোট দিলেও তার স্বামী নায়ক অক্ষয় কুমার ভোট দেননি। কারণ কানাডার নাগরিকত্ব নেওয়ার পর ভারতে তিনি ভোটাধিকার হারান।
কেন কানাডাকে বিকল্প দেশ হিসেবে বেছে নিতে হয়েছিল সে ব্যাখ্যায় ‘হেরা ফিরি’, ‘নমস্তে লন্ডন’, ‘টয়লেট: এক প্রেম কথা’, ‘প্যাডম্যান’ এর মত হিট সিনেমার নায়ক অক্ষয় জানান, নব্বইয়ের দশকের শুরুতে দিন এমনও গেছে যে পরপর ১৪টি সিনেমা তার ফ্লপ হয়েছে।
“তখন হতাশায় একেবারে মুষড়ে পড়েছিলাম। তখন কানাডাপ্রবাসী এক বন্ধুকে ফোন করি। বন্ধু বললেন, চিন্তা করিস না দোস্ত। আমি আছি। দুজনে মিলে কিছু একটা করবই।“
অক্ষয় জানান, সেই বন্ধুই তাকে কানাডার পাসপোর্টের ব্যবস্থা করে দেন। কানাডায় গিয়ে কিছুদিন কাজও করেছেন অক্ষয়। তবে কী মনে করে ফের ভারতে ফিরে ১৫ নম্বর সিনেমাটিও শেষ করেন তিনি।
“কোনো আশা ছিল না। কিন্তু সেই সিনেমাই জীবন বদলে দেয়। সুপারহিট হয়।“
ওই সিনেমার পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি অক্ষয় কুমারকে। কিন্তু কানাডার সেই পাসপোর্টও তিনি হারাতে চাননি। এদিকে ভারত আবার দ্বৈত নাগরিকত্ব দেয় না।
এর জন্য কম কটু কথা শুনতে হয়নি অক্ষয়কে। তিন বছর লোকসভা নির্বাচনের সময় তাকে নিয়ে রীতিমতো ট্রল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। দেশ বা সংস্কৃতি নিয়ে কোনো কথা বললেই মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ত তার ওপর। তাদের মতে, “যে দেশের নাগরিকই না, সে আবার কেন দেশের বিষয় নিয়ে কথা বলতে আসে!”
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হন অক্ষয় কুমার। টুইটারে তিনি লিখেছিলেন, “আমি কোন দেশের নাগরিক, তা নিয়ে হঠাৎ কিছু মানুষের এত উৎসাহ দেখে অবাক হচ্ছি। তারা আমাকে নিয়ে নানা নেতিবাচক মন্তব্য করছেন। আমার কানাডার পাসপোর্ট রয়েছে, এ কথা কখনো লুকিয়েছি কিংবা অস্বীকার করেছি? গত সাত বছরে আমি একবারও কানাডা যাইনি। আমি ভারতে কাজ করছি। আমি এবং আমার পরিবার এখানেই আছি। ঠিক সময়ে আমি যাবতীয় ট্যাক্সও পরিশোধ করি।“
সে সব ঘটনার চারবছর পর ৫৫ বছর বয়সী অক্ষয় ফিরে পেলেন তার জন্মভূমির নাগরিকত্ব।
গত বছর থেকে বলিউডি সিনেমায় ফের ‘দুর্দিনে’ আছেন অক্ষয়। এমনকি তিনি তার পারিশ্রমিকও কমিয়েছেন।
কয়েকদিন আগে তার ‘ওএমজি ২’ মুক্তি পায়। প্রায় একই সময়ে মুক্তি পাওয়া সানি দেওলের ‘গদর ২’ বক্স অফিসে অক্ষয়কে টপকে গেছে।
আগামীতে অক্ষয়ের 'বড়ে মিয়া ছোট মিয়া', 'হেরা ফেরি ৪' এবং 'দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান রেসকিউ’ মুক্তি পাবে।
পুরনো খবর
কানাডার পাসপোর্ট ফিরিয়ে দেবেন অক্ষয়
ফের ‘ওএমজি ২’ –এর পোস্টার শেয়ার করলেন অক্ষয়