‘সাধারণ নাট্যকর্মী ঐক্য’ গড়ে তোলার উদ্যোক্তারা বলছেন, তারা গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনেই আছেন।
Published : 24 Jun 2023, 05:02 PM
গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের বর্তমান কমিটির উপর অনাস্থা জানিয়ে নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য নতুন প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুললেন একদল নাট্যকর্মী।
শনিবার সকালে ঢাকায় জাতীয় নাট্যশালার প্রবেশদ্বারের পাশে ‘নিশাত চত্বরে’ সংবাদ সম্মেলন করে ‘সাধারণ নাট্যকর্মী ঐক্য’ গড়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
একুশে পদকজয়ী নাট্যব্যক্তিত্ব আহমেদ ইকবাল হায়দার, রংপুরের শিখা সংসদের সভাপতি বিপ্লব প্রসাদ, নাট্যনির্দেশক ও অভিনয়শিল্পী আজাদ আবুল কালাম, ফয়েজ জহির, ঠাণ্ডু রায়হান, অধ্যাপক রতন সিদ্দিকী, অলোক বসু, শহিদুজ্জামান সেলিম, আমিনুর রহমান মুকুল, অপু শহিদ, মোহাম্মদ বারী এসময় উপস্থিত ছিলেন।
গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির ‘স্বেচ্ছাচারিতা, অগঠনতান্ত্রিক ও অবৈধ কার্যক্রম’র কারণেই এ প্লাটফর্মটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান প্ল্যাটফর্মটির মুখ্য সমন্বয়ক মোহাম্মদ বারী।
এটি কোনো সংগঠন বা মোর্চা নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, “গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের অনিয়ম নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা আন্দোলনের একটি প্লাটফর্ম। সারাদেশের নাট্যকর্মী, নাটকের দলসমূহ এবং সামগ্রিক নাট্যচর্চার উন্নয়নে কাজ করার ক্ষেত্র তৈরি করতে বদ্ধ-পরিকর ‘সাধারণ নাট্যকর্মী ঐক্য’।”
এক প্রশ্নের জবাবে আহমেদ ইকবাল হায়দার বলেন, “আমরা বার বার বসে সংকটের সমাধান করতে চেয়েছি। কিন্তু ফেডারেশন সভাপতি এবং শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক একই ব্যক্তি হওয়ায় সংকট সমাধান হচ্ছে না।
“ফেডারেশন তার প্রতিবাদী চরিত্র হারিয়েছে। নাট্যকর্মীদের অধিকার আদায়ে এই ফেডারেশন অকার্যকর। তাই ফেডারেশনকে কার্যকর করার জন্যই আমরা আন্দোলন করছি। আমরা যারা ফেডারেশন সদস্যভুক্ত দল আছি, আমরা কেউই ফেডারেশন ছাড়ছি না।”
মোহাম্মদ বারী বলেন, “আমাদের আন্দোলন ফেডারেশনের বিপক্ষে নয়, বরং নিষ্ক্রিয় ফেডারেশনে গতি সঞ্চার করার জন্যই আমাদের আন্দোলন। নাট্যকর্মীদের অধিকার আদায়ে যেভাবে ফেডারেশন সোচ্চার থাকার কথা, সেটি ফেডারেশন করছে না বলেই আমাদের ‘নাট্যকর্মী ঐক্য’ প্লাটফর্মটি করতে হয়েছে।”
আজাদ আবুল কালাম বলেন, “আমরা ঠিকমতো থিয়েটারটা করতে চাই। আমরা কারো বিপক্ষে নয়, থিয়েটার ঠিকমতো করার জন্য কিছু অনিয়মের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছি।”
গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সভাপতি লিয়াকত আলী লাকীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করে আসছেন এই নাট্যকর্মীরা। লাকী অবশ্য সেসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে যাচ্ছেন।
আলোচনার মধ্য দিয়ে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নে আজাদ আবুল কালাম বলেন, “গত বছরের জুলাই মাসে সাধারণ নাট্যকর্মীবৃন্দ ব্যানারে মহিলা সমিতি মঞ্চে একটি সভার আয়োজন করা হয়, সেখানে আমাদের আহ্বান ছিল ফেডারেশন সভাপতি লিয়াকত আলী লাকী এবং ফেডারেশন নেতৃবৃন্দরা যেন সেই সভায় উপস্থিত থাকেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে এরপর থেকে তারা আমাদেরকে প্রতিপক্ষ মনে করা শুরু করেছেন।
“আমরা কিন্তু তাদের প্রতিপক্ষ নয়। তারা আমাদের সহকর্মী। নাট্য আন্দোলনে আমরা একসঙ্গে ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে আমরা এখন ‘বেয়াদব’ হয়ে উঠেছি, ‘প্রতিপক্ষ’ হয়ে উঠেছি। কিন্তু আমরা প্রতিপক্ষ হতে চাই না। থিয়েটারের স্বার্থে সংকটের সমাধান চাই। তাদেরকে অনেকবার বসার আহ্বান জানানো হয়েছে। কিন্তু তারা বসতে রাজি হচ্ছেন না বলেই আমাদেরকে আন্দোলনে যেতে হয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে নতুন প্ল্যাটফর্মের ১৩ সদস্যের একটি সমন্বয় কমিটি গঠনের কথা জানান হয়।
মুখ্য সমন্বয়ক মোহাম্মদ বারী। অন্যান্য সমন্বয়কারীরা হলেন- মলয় ভৌমিক, আহমেদ ইকবাল হায়দার, বিপ্লব প্রসাদ, তৌফিক হাসান ময়না, মোহাম্মদ আবুল মনসুর, শামসুল বাসেত শেরো, শহীদুজ্জামান সেলিম, ফয়েজ জহির, আজাদ আবুল কালাম, সাইফুদ্দিন আহমেদ দুলাল, আমিনুর রহমান মুকুল, অলোক বসু, শামীমা শওকত লাভলী ও কাজী রোখসানা রুমা।