প্রায় এক দশক আগে যে সিনেমা তৈরির স্বপ্নের কথা জানিয়েছিলেন নির্মাতা গিয়াস উদ্দিন সেলিম, সেই ‘কাজলরেখা’র শুটিং শেষ হল অবশেষে।
চারশ বছর আগের প্রেক্ষাপটে নির্মিত সিনেমাটি ফেব্রুয়ারিতেই বড় পর্দায় আনার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন এ নির্মাতা।
২০০৯ সালে ‘মনপুরা’ সিনেমা মুক্তির পর সেলিমের ঘোষণা ছিল, ‘কাজলরেখা’ বানাবেন তিনি। কিন্তু নানা কারণে নির্মাণ কাজে জটিলতা আসে। এক দশক পর ২০২০ সালে ছবি তৈরিতে পাওয়া যায় সরকারি অনুদান। মূলত এরপরেই গতি আসে কাজে। কিন্তু মাঝে বাধ সাধে মহামারী।
শেষমেশ গেল এপ্রিলে নেত্রকোণার দুর্গাপুরে কাজলরেখার শুটিং শুরু হয়, আর মঙ্গলবার শেষ হয়েছে সিনেমার দৃশ্যধারণ পর্ব।
গ্লিটজকে গিয়াস উদ্দীন সেলিম বলেন, “আগামী ফেব্রুয়ারিতে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। শুটিং পর্ব শেষ হয়েছে। এখন বাকি কাজগুলো দ্রুতই শেষ করার কাজ চলছে। আমাদের টিম খুবই পরিশ্রম করছে।”
এ সিনেমার জন্য চারশো বছর আগের পট তৈরির অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে সেলিম বলেন, “৪০০ বছর আগে যেমন ছিল সবকিছু, সেট, কস্টিউম সেভাবেই বানাতে হয়েছে। সাধারণত যে বাজেটে ছবি হয়, তার থেকে তিনগুন বেশি বাজেট লাগছে।
“সেট বানাতে গারো এবং হাজং সম্প্রদায়ের অনেকে কাজ করেছেন। প্রডাকশন ডিজাইনার ছিলেন সাইফুল হক। তিনি বঙ্গীয় আর্ট সম্পর্কে দীর্ঘদিন গবেষণা করে যাচ্ছেন। ‘পুন্ড্রনগর টু শেরেবাংলা’ তার একটি বইও আছে। তার মত বিজ্ঞ আর্কিটেক্ট দিয়ে আমরা কাজ করেছি।”
‘কাজলরেখা’র নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মন্দিরা চক্রবর্তী। ২০১২ সালে চ্যানেল আই সেরা নাচিয়ে মঞ্চ থেকে উঠে আসা মন্দিরার বড় পর্দায় অভিষেক হতে চলেছে এ সিনেমা দিয়ে।
শুটিং শুরুর আগে চলতি বছরের মার্চে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে সংবাদ সম্মেলনে মন্দিরা চক্রবর্তী বলেছিলেন, “ছোটবেলায় ‘মনপুরা’ দেখেছিলাম। তখন থেকে পরিচালক সেলিম ভাইয়ের প্রেমে পড়েছি। তার মাধ্যমে প্রথমবার সিনেমায় কাজ করতে গিয়ে একটু ভয় পেলেও মনে হচ্ছে আমার স্বপ্নটা দ্রুত সত্যি হতে যাচ্ছে।”
‘কাজলরেখা’র মাধ্যমে প্রথমবার সেলিমের নির্দেশনায় কাজ করেছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। ‘কঙ্কণ দাসী’র খলচরিত্রে তাকে দেখা যাবে এ সিনেমায়।
মন্দিরা ও মিথিলা ছাড়াও অভিনেতা আজাদ আবুল কালাম, ইরেশ যাকের, শরিফুল রাজসহ আরও অনেকে কাজ করেছেন।
‘কাজলরেখা’র নির্বাহী প্রযোজক জুয়েইরিযাহ মউ গ্লিটজকে জানান, দুর্গাপুর ছাড়াও গত ছয়মাসে টাঙ্গুয়ার হাওর, কক্সবাজার, মাওয়া ঘাট, পদ্মা নদী, সুন্দরবন, ঢাকার জামদানী পল্লীসহ আরও কিছু জায়গায় শুটিং করেছেন তারা।
২০০৯ সালে ‘মনপুরা’ চলচ্চিত্রের ‘সাফল্যের’ পর দীর্ঘ বিরতি নিয়ে ২০১৮ সালে সেলিম দর্শকদের উপহার দেন তার দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ‘স্বপ্নজাল’। এছাড়া ‘পাপ-পূণ্য’ নামে আরেকটি সিনেমাও নির্মাণ করেছেন।