রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের গল্পের এই সিনেমার শুটিং হয়েছে টাঙ্গাইলের মধুপুর, ধনবাড়ি এলাকার বনাঞ্চলে।
Published : 08 Apr 2024, 12:47 PM
দেশ-বিদেশে সুনাম কুড়ানো ‘নোনা জলের কাব্য’ চলচ্চিত্রের নির্মাতা নিয়ে আসছেন ‘মাস্টার’ নামের নতুন একটি সিনেমা। যে সিনেমায় দেশের তৃণমূল পর্যায়ের রাজনীতির নানা দিক উঠে আসবে।
গেল বছরের জুন মাসে সরকার ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ২২টি পূর্ণদৈর্ঘ্য এবং ৬টি স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমাকে অনুদান দিয়েছে। ওই তালিকায় ‘মাস্টার’ সিনেমার জন্য অনুদান পেয়েছিলেন প্রযোজক ও পরিচালক রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত।
সম্প্রতি সিনেমাটির শুটিং শেষ করেছেন এই নির্মাতা। সিনেমার শুটিং হয়েছে টাঙ্গাইলের মধুপুর, ধনবাড়ি এলাকার বনাঞ্চলে।
সিনেমার গল্প নিয়ে সুমিত বলেছেন, “ছোট একটি উপজেলার স্থানীয় রাজনীতি এই সিনেমার প্রেক্ষাপট। ওই এলাকার একজন শিক্ষক আছেন যার নাম জহির আহমেদ, সমাজসেবায় তিনি এলাকাবাসীর কাছে জনপ্রিয়। ওই এলাকার উপজেলা নির্বাচনের সময় প্রার্থীর অভাব দেখা দেয়। তখন শিক্ষক জহির আহমদের প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান এলাকাবাসী।
“এরপর সবার অনুরোধে ভোটে দাঁড়িয়ে যান জহির। ভোটে জয় পেয়ে চেয়ারম্যানও হয়ে যান তিনি। উপজেলার চেয়ারম্যান হওয়ার পর বদলে যায় ওই শিক্ষকের জীবন।”
সিনেমার মূল চরিত্র জহির হয়েছেন অভিনেতা নাসির উদ্দীন খান। জহিরের স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাকিয়া বারী মম।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) চরিত্রটি করেছেন আজমেরী হক বাঁধন।
আরও অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, লুৎফর রহমান জর্জ, তাসনুভা তামান্না, মাহমুদ আলম, আমিনুর রহমান মুকুল।
সুমিত গ্লিটজকে বলেন, “মাস্টার সিনেমার শুটিং শেষ করে কয়েকদিন আগেই ফিরলাম ঢাকায়। প্রায় দেড় মাসের মত টাঙ্গাইলের মধুপুর, ধনবাড়ি এলাকায় শুটিং হয়েছে। মধুপুর ধানবাড়ির প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য দারুণ ভাবে উঠে এসেছে। মধুপুর শালবন, বন ঘেষা জনপদ, আনারস ক্ষেত, এখানকার অর্থনৈতিক অংশগুলো খুব সুন্দরভাবে সিনেমায় ফুটিয়ে তুলা হয়েছে।
“গল্পে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মধ্যে এক ধরনের প্রতিযোগিতা, কোলাবোরেশান চলতে থাকে। এই চরিত্র দুটি দারুণভাবে করেছেন নাসির ভাই ও বাঁধন আপু।”
রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিতের গল্পে সিনেমাটির চিত্রনাট্য করেছেন সাব্বির হোসেন শোভন ও নির্মাতা নিজে।
টাঙ্গাইলের মধুপুর, ধনবাড়ি এলাকার ছেলে নির্মাতা সুমিত। নিজের এলাকায় শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা জানিয়ে নির্মাতা বলেন, “সিনেমাটি পলিটিক্যাল ড্রামা হওয়ার কারণে অনেক মানুষের সমাগম প্রয়োজন ছিল। প্রত্যেকটা ফ্রেমেই আমাদের প্রচুর মানুষ দরকার ছিল। সবাইকে তো ঢাকা থেকে নেওয়া সম্ভব না। তাই আঞ্চলিকভাবে আমাদের প্রচুর কাস্ট করতে হয়েছে। আর এতে আমাকে সহযোগিতা করেছে মধুপুর, ধনবাসীর বাসিন্দারা। তারা একবারে সবাই মিলে আমার সিনেমাটায় প্রাণ দিয়েছেন, প্রাণবন্ত করে তুলেছেন।
সিনেমাটি মুক্তির প্রসঙ্গ তুলে নির্মাতা বলেন, “আমাদের কাছে প্রিপ্রোডাকশন যেমন গুরুত্ব ছিল, পোস্ট প্রোডাকশন তেমন গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সিনেমায় নির্বাচনের দৃশ্য আছে, ক্রাউড সিন, বড় বড় সেটআপ, নির্বাচনের ক্যাম্পিংয়ের শুটিং করেছি। এগুলোর সাউন্ড ডিজাইন মিক্সিং, কালার গ্রেডিং, মিউজিক এগুলো তে অনেক সময় দিতে হবে। মিউজিক। এই সব কাজ ঠিকভাবে শেষ করে এ বছরের শেষে মুক্তির চিন্তা ভাবনা করব।”
এই সিনেমা দিয়ে প্রথমবার একসঙ্গে পর্দায় দেখা যাবে দুই বন্ধু বাঁধন ও মমকে। ২০০৬ সালে ‘লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার’ প্রতিযোগিতা দিয়ে শোবিজে পথচলা শুরু দুজনের। তবে, এখন পর্যন্ত একসঙ্গে পর্দায় দেখা যায়নি তাঁদের।
নতুন সিনেমা নিয়ে গ্লিটজের সঙ্গে কথা বলেছেন অভিনেত্রী বাঁধন।
নিজের অনুভূতি জানিয়ে তিনি বলেন, “প্রথম বারের মতো ইউএনও চরিত্রে অভিনয় করলাম।…কাজের অভিজ্ঞতা দুর্দান্ত। কাজটা করে এসে বা কাজ করার সময় এমন অনুভব হয়নি যে, কেন কাজটি করতে আসলাম, বরং মনে হয়েছে এমন একটা কাজের সঙ্গে থাকাটা আমার সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল।
“এখানে মাস্টার চরিত্রের নাসির ভাই প্রধান। তারপরও চরিত্র শুনে আমার কাজ করতে ইচ্ছে হয়েছিল। সুমিত সবগুলো চরিত্র এমনভাবে ডিল করেছে, এখানে জাকিয়া বারী মম, তাসনুভা তামান্না মানে প্রতিটা চরিত্রই এতো ভালোভাবে করেছে যে, কাজটা করার পরে নিজের মধ্যে সন্তুষ্টি কাজ করছে।”
সিনেমাটি নিয়ে দারুন আশাবাদী এই অভিনেত্রী।