ডিআরইউতে দেখানো হবে ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার' সিনেমা।
Published : 15 Dec 2023, 11:13 PM
গান, আবৃত্তি, নাটকসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আয়োজনে বিজয় দিবস উদযাপন করবে দেশ।
শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, শিল্পকলা একাডেমি, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ বিভিন্ন স্থানে এসব আয়োজন উপভোগ করা যাবে।
ঢাবি মাঠে ছায়ানটের ‘দেশগান'
প্রতি বছরের মত এবারও বিজয় দিবসে ‘দেশগান’ নিয়ে আসছে ছায়ানট; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্রের মাঠে হবে এ আয়োজন।
অনুষ্ঠান উপলক্ষে সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে দোয়েল চত্বর সংলগ্ন সুইমিং পুল গেইট। আয়োজক, সাংবাদিক এবং নির্বাচিত শিল্পী ও তাদের সঙ্গীরা মাঠে প্রবেশ করবেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন জিমনেসিয়ামের গেইট দিয়ে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল, দীপ্ত টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী জাহেদুল হাসান এবং ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী অনুষ্ঠানের সূচনা করবেন। অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হবে দীপ্ত টেলিভিশনে।
এবারের অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে নৃত্যসহ আটটি সম্মেলক গান, একটি একক গান ও পাঠ নিয়ে। মূল অনুষ্ঠান শুরু হবে ১৬ ডিসেম্বর বিকাল পৌনে ৪টায়।
অনুষ্ঠানে সৈয়দ শামসুল হকের ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়' কাব্য নাটকের নির্বাচিত অংশ উপস্থাপন করবেন ত্রপা মজুমদার, একক গান গাইবেন আবুল কালাম আজাদ।
দেশাত্মবোধক গানবেছে নেওয়া হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, গোবিন্দ হালদার, আবদুল লতিফ, মোহাম্মদ মোশাদ আলী, গাজী মাজহারুল আনোয়ার ও গুরু সদয় দত্তের রচনা থেকে।
নৃত্য পরিবেশিত হবে ‘ও আমার দেশের মাটি’, ‘আজি রক্ত নিশি ভোরে’, ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’, ‘এই না বাংলাদেশের গান গাইতে রে দয়াল’, ‘লাখো লাখো শহীদের রক্তমাখা’, ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’, ‘আরে ভালো ভালো ভালোরে ভাই’ এবং ‘কারার ঐ লৌহকপাট’ গানের সঙ্গে।
আত্মসমর্পণ দৃশ্য মঞ্চায়ন করবে ঢাবি নাট্য সংসদ
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল দখলদার বাহিনী।
বাঙালির সেই ঐতিহাসিক বিজয়ের মুহূর্ত অভিনয়ের মাধ্যমে মঞ্চায়ন করবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নাট্য সংসদ। শনিবার বিকাল ৪টা ৩১ মিনিটে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মঞ্চায়িত হবে পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণ দৃশ্যটি।
অনুষ্ঠানটির আয়োজন ও সার্বিক ব্যবস্থাপনায় রয়েছে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের বিজয় উৎসব
‘আমার দেশ, সন্ত্রাস-সাম্প্রদায়িকতামুক্ত বাংলাদেশ’ এই স্লোগানে ‘বিজয় উৎসব’ উদযাপন করছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।
মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই আয়োজন শুরু হয়, যা শেষ হবে বিজয় দিবসে।
শনিবার সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে ‘বিজয় শোভাযাত্রা’ বের হবে। আর বিকাল ৪টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ মঞ্চে বিজয় উৎসবের অনুষ্ঠান হবে।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
ঢাকার আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের চলছে সপ্তাহব্যাপী বিজয় উৎসব। চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, নাচ-গান ও আবৃত্তি পরিবেশনা, শিশু-কিশোরদের আনন্দানুষ্ঠান, বিশিষ্টজনদের কথনসহ নানা আনুষ্ঠানিকতায় সজ্জিত হয়েছে এ উৎসব।
বাংলাদেশের গণহত্যা বিষয়ে পাকিস্তানি ভিন্ন মতালম্বীদের ধারাভাষ্যময় ‘ভয়েস অব কনসায়েন্স' শীর্ষক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে ছয় দিনের উৎসবের সূচনা হয় ৯ ডিসেম্বর।
শনিবার সকাল ১০টায় বিজয় দিবসের আয়োজন শুরু হবে জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে। পরে থাকবে হবে শিশু কিশোর আনন্দানুষ্ঠান।
এতে অংশ নেবে কল্পরেখা, এসওএস শিশুপল্লী, কচিকাঁচার মেলা, শিল্পবৃত্ত, খেলাঘর, বধ্যভূমির সন্তানদল, ইউসেপ বাংলাদেশ, বছিলা উচ্চ বিদ্যালয়।
সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদের দুই দিনের আয়োজন
বিজয় দিবস উপলক্ষে দুই দিনের অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে বাংলাদেশ সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ। শুক্রবার বিকাল ৫টায় প্রথম দিনের কার্যক্রম শুরু হয়।
ঋষভ সংগীত অঙ্গনের উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এদিন আলোচনা সভায় অংশ নেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক ড. মোহাম্মদ হান্নান।
আলোচনা সভার পর শুরু হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা পর্ব। সংগীত পরিবেশন করেন সুরনন্দন নজরুল সঙ্গীত চর্চা কেন্দ্র, সারগাম ললিতকলা একাডেমি, লোকাঙ্গন সাংস্কৃতিক অঙ্গনের শিল্পীরা। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন শিল্পী বেলায়েত হোসেন, শিরীন ইসলাম ও আহসান উল্লাহ তমাল।
শনিবার সমবেত ও একক সংগীত এবং আবৃত্তি পরিবেশন করবেন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, বাঁশুরিয়া, নির্ঝরিনী, সপ্তরেখা, গীতশতদল, জাগরণ ও নন্দন সংগঠনের শিল্পীরা।
মঞ্চনাটক
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হবে ইতিহাসনির্ভর মঞ্চনাটক ‘ভাগের মানুষ’।
একই সময়ে নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হবে ‘লালজমিন' এবং বেইলী রোডের মহিলা সমিতি মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হবে ‘মেঘের কোলে রোদ'।
নাট্যদল ‘সময়' প্রযোজিত ‘ভাগের মানুষ' নাটকটিতে নির্দেশনায় আছেন প্রয়াত আলী যাকের।
সা’দত হাসান মান্টো’র ছোট গল্প ‘টোবাটেক সিং’ অবলম্বনে এ নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করবেন আকতারুজ্জামান, রেজাউর রহমান, ফখরুল ইসলাম মিঠু, তোফায়েল সরকার, মানসুরা আক্তার লাভলী, পাভেল ইসলাম, সুনীতা বড়ুয়া, আলমগীর হোসেন, মাহমুদুল আলম, ইয়ামিন জুয়েল, সাইফুল বাবু, সানি, চন্দন বোস, সাবিহা সুলতানা, সাঈফ, রাকিব আল হাসান।
অন্যদিকে ‘লালজমিন’ নাটকটির গল্প মুক্তিযুদ্ধের একটি খণ্ডচিত্রের বয়ান। এ নাটকে একক অভিনয় করবেন মোমেনা চৌধুরী।
দুরন্ত থিয়েটারের প্রযোজনায় ‘মেঘের কোলে রোদ' নাটকটির রচয়িতা ইকবাল জাভেদ এবং মঞ্চে নির্দেশনায় আছেন সাদ ইব্রাহীম।
ডিআরইউ'তে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি আয়োজন করেছে চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর। শনিবার বিকাল ৪টায় ডিআরইউ নসরুল হামিদ মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার' প্রদর্শন করা হবে। এর আগে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।
অন্যান্য আয়োজন
শিল্পকলা একাডেমিসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও বিজয় দিবসে নানা অনুষ্ঠান আয়োজন করবে।
সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে সকাল ৯টা ১০ মিনিটে শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে হবে স্বরচিত কবিতাপাঠ, আবৃত্তি, দেশের গান ও অ্যাক্রোব্যাটিক প্রদর্শনী। একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় হবে বিজয় দিবসের আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।