দেশে পাঠান মুক্তি: ‘বাংলা সিনেমার ভালো’ দেখছে জাজ মাল্টিমিডিয়া

একই সময়ে এ প্রযোজনা সংস্থার ‘শনিবার বিকেল’ মুক্তি পাবে, তবুও তারা চায় দেশে পাঠান মুক্তি পাক।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Jan 2023, 01:43 PM
Updated : 29 Jan 2023, 01:43 PM

বলিউডে আলোচনা ও রেকর্ডের ঝড় তোলা শাহরুখ খানের সিনেমা পাঠান ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশে মুক্তি দেওয়া নিয়ে যে আলোচনা চলছে তাতে লাভই দেখছে জাজ মাল্টিমিডিয়া; উল্টোটা হলেই বরং ‘ক্ষতি’র কথা বলছে দেশি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটি।

পাঠানকে সবুজ সংকেত দেওয়া হলে তা চাপে ফেলবে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় এ প্রযোজনা সংস্থাকে। কেননা ৩ ফেব্রুয়ারি মুক্তির তারিখ রয়েছে ‘শনিবার বিকেল’ এর। এতে প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হবে জেনেও জাজ মাল্টিমিডিয়া চায় দেশে ‘পাঠান’ মুক্তি পাক।

‘এতে বাংলা সিনেমার জন্য ভালো হবে,’ বলে মনে করছে প্রতিষ্ঠানটি, যেটি গুলশান হামলা নিয়ে সিনেমা ‘শনিবার বিকেল’ প্রযোজনা করেছে।

চার বছর আটকে থাকার পর গত ২১ জানুয়ারি মোস্তফা সরয়ার ফারুকী নির্মিত এ সিনেমা বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের আপিল কমিটির ছাড়পত্র পায়।

এরমধ্যেই চলচ্চিত্র জগতে আলোচনার ঢেউ তুলেছে শাহরুখ খানের পাঠান। ভারতসহ ১০০টি দেশে মুক্তির পর বক্স অফিসে রেকর্ড করেই চলেছে। বাংলাদেশেও সিনেমাটি মুক্তির অনুমতি চেয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়কে দেওয়া চিঠি বিবেচনাধীন।

হল মালিকদের সংগঠন চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতিও চায় হিন্দি সিনেমাটি বাংলাদেশের হলে মুক্তি দেওয়া হোক। সাফটা চুক্তির আওতায় এটি মুক্তির সম্ভাবনাও আছে। তবে দেশে পাঠানের মুক্তি নিয়ে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের মাঝে মতপার্থক্যও রয়েছে। কেউ সিনেমা মুক্তির পক্ষে তো কেউ বিপক্ষে।

এমন প্রেক্ষাপটে শীর্ষস্থানীয় প্রযোজনা সংস্থা জাজ মাল্টিমিডিয়া দেশের হলগুলোতে ‘পাঠান’ মুক্তি দেওয়া হলে তা ‘ভালো হবে’ বলেই মনে করছে।

শনিবার এক ফেইসবুক পোস্টে প্রতিষ্ঠানটি ‘ভারতীয় সিনেমা মুক্তির কী লাভ কী ক্ষতি’ শিরোনামে তাদের মতামত ছয়টি পয়েন্ট তুলে ধরেছে।

নিজেদের ক্ষতি হবে জেনেও ভারতীয় সিনেমা মুক্তির পক্ষে কথা বলতে গিয়ে জাজ বলেছে, “পাঠান যদি বাংলাদেশে ৩ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পায়, ক্ষতি হবে আমার! কারণ জাজের ‘শনিবার বিকেল’ একইদিন মুক্তি পাবে। তবুও জাজ চায় ‘পাঠান’ মুক্তি পাক। এতে বাংলা সিনেমার জন্য ভালো হবে।”

লাভের বিষয়ে প্রথমে লেখা হয়, “অনেক নতুন সিনেমা হল খুলবে। বাংলা সিনেমা মুক্তি দিয়ে বাংলাদেশের প্রযোজকরা লাভবান হবে। প্রযোজক লাভবান হলে আরও বেশি সিনেমা নির্মাণ হবে।”

দেশের সিনেমা হলগুলোর সাউন্ড সিস্টেমে উন্নয়ন ঘটবে আশা করে জাজ বলেছে, “সবাইকে ডিজিটাল সিনেমা প্যাকেজ (ডিপিসি) এর অধ্যয়নে আসতে হবে; অন্তত ই-সিনেমা সিস্টেম চালু করতে হবে। এতে বাংলা সিনেমাগুলো ভালো একটা সিস্টেমে চলবে।”

ভারতীয় সিনেমা চললে শতাধিক সিনেপ্লেক্স চালু হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়ে পরের পয়েন্টে বলা হয়েছে, “তখন বাংলা সিনেমার প্রযোজকরা এক সপ্তাহে তাদের মূলধন ফিরে পাবে। ফলে প্রযোজকরা আরও বেশি সিনেমা নির্মাণে এগিয়ে আসবে। আমাদের সকল শিল্পী ও কলাকুশলী বেশি বেশি কাজের সুযোগ পাবে।”

তা না হলে ক্ষতিই বেশি হবে মন্তব্য করে জাজ বলছে, “যদি ভারতীয় সিনেমা না আসে, যে হলগুলো আছে সেগুলোও বন্ধ হয়ে যাবে। সিনেপ্লেক্স বাড়বে না। তাহলে, কে বানাবে বাংলা সিনেমা।”
এতে ওটিটি নির্ভরতাও কমবে বলে মনে করছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটি।

তবে ভারতীয় সিনেমা মুক্তির আগে কিছু নীতিমালায় পরিবর্তন ও শর্ত দেওয়ার কথা বলেছে জাজ। পোস্টে বলা হয়, “কিন্তু ভারতীয় সিনেমা মুক্তি দিতে হলে কিছু শর্ত প্রযোজ্য। শিল্পী সমিতির লাভের ১০ শতাংশ নেওয়ার পক্ষে আমরা না। আমরা মনে করি, ১০ শতাংশ না নিয়ে শিল্পী সমিতির এমন কিছু দাবি করা উচিত; যা তাদের শিল্পীদের কাজে দিবে। শিল্পীরা কাজ করলে তাদের আর কারও সহযোগিতার প্রয়োজন পড়বে না।”

Also Read: ‘ফেব্রুয়ারির শুরুতেই’ বাংলাদেশকে পাঠান দেখাতে চান হল মালিকরা

Also Read: তিন দশক পর পাঠানে হাউজফুল কাশ্মীরের সিনেমা হল

Also Read: কেজিএফ-২ ও বাহুবলী-২ কে টপকে পাঠানের রেকর্ড

Also Read: শনিবারে ছাড়পত্র পেল ‘শনিবার বিকেল’, চিঠির অপেক্ষায় ফারুকী


শিল্পী সমিতিকে কিছু দাবি তোলার পরামর্শ দিয়ে পোস্টে সিনেপ্লেক্স বা সিঙ্গেল স্ক্রিন সবক্ষেত্রে কমপক্ষে ৬০ শতাংশ বাংলাদেশি এবং সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ বিদেশি সিনেমার শো রাখার কথা বলা হয়। প্রাইম টাইমে কমপক্ষে দুইটা শো বাংলাদেশি সিনেমা চালাতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়।

সেই সঙ্গে যৌথ প্রযোজনা ও বিদেশে শুটিংয়ের বিষয়গুলো সহজ করার আহ্বান জানানো হয়। শিল্পী সমিতিসহ চলচ্চিত্রের সব সমিতি এসব বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বলে আশা প্রতিষ্ঠানটির।