রবীন্দ্রসংগীত উৎসবে সম্মাননা পাচ্ছেন এনামুল কবীর ও লিলি ইসলাম

১৬২তম রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে ঢাকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এই উৎসব হবে আগামী ১২ ও ১৩ মে।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 May 2023, 11:00 AM
Updated : 5 May 2023, 11:00 AM

শতাধিক শিল্পীর অংশগ্রহণে ‘বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা’র আয়োজনে রবীন্দ্রজয়ন্তীতে হতে যাচ্ছে ‘জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত উৎসব’।

‘করিস নে লাজ, করিস নে ভয়/আপনাকে তুই করে নে জয়’ প্রতিপাদ্যে ১৬২তম রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে ঢাকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এই উৎসব হবে আগামী ১২ ও ১৩ মে।

বরাবরের মত উৎসবের ৩৪তম আসরেও থাকছে গুণীজন সম্মাননা। উদ্বোধনী দিনে এবারে সম্মাননা পাচ্ছেন গিটার শিল্পী এনামুল কবীর ও রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী লিলি ইসলাম।

উৎসব সামনে রেখে শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ওই সম্মেলন থেকে উৎসবের বিস্তারিত ও সংস্থার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন এর নির্বাহী সভাপতি আমিনা আহমেদ।

সংবাদ সম্মেলনে অস্ট্রেলিয়া থেকে ভার্চুয়ালি অংশ নেন সংস্থার সভাপতি তপন মাহমুদ। বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক পীযূষ বড়ুয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্থার আজীবন সদস্য রফিকুল আলম।

অন্যান্যের মধ্যে তানজিমা তমা, অনিকেত আচার্য, কনক খান, আবদুর রশিদ, রিফাত জামাল, শর্মিলা চক্রবর্তী, আহমাদ মায়া আখতারী, জাফর আহমেদ, নির্ঝর চৌধুরীসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

উৎসব ঘিরে আমিনা আহমেদের বাসায় প্রতিদিন সন্ধ্যায় চলছে মহড়া। শিল্পী পীযূষ বড়ুয়ার নেতৃত্বে এতে অংশ নিচ্ছেন শতাধিক শিল্পী।

আমিনা আহমেদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, "শুদ্ধ সংস্কৃতি বিকাশের পথে নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা যেন আমাদের বারবার রবীন্দ্রনাথের কাছেই ফিরিয়ে নিয়ে যায়। রবিঠাকুর প্রতিক্ষণ আমাদের জাতীয় এবং বাঙালি প্রাত্যাহিক জীবনের জন্য প্রাসঙ্গিক।" 

তিনি বলেন, "আমরা সুস্থ সংগীত বিকাশে ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য পঙ্কিলতা মুক্ত একটি সুন্দর সংস্কৃতিবান্ধব আগামী গড়ার সংগ্রামে লড়াই করে যেতে চাই। বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে সেই লক্ষ্যেই কাজ করেই যাচ্ছে। ভবিষ্যতে এ ধারা অব্যাহত থাকবে।"

তপন মাহমুদ বলেন, "সংস্কৃতিমনা মানুষকে প্রতিনিয়ত উদ্দীপ্ত রাখতে এই সংস্থা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং ভবিষতে করে যাবে। রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে দুই দিনের উৎসবে শুদ্ধ, সুস্থ ও অশ্লীলতামুক্ত সুরলোক সৈকত ভাসিয়ে দেবে আমাদের নিবেদিতপ্রাণ শিল্পীরা।"

রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থার সূচনা লগ্ন থেকে তার ‘আত্মিক’ সম্পর্ক জানিয়ে রফিকুল আলম বলেন, “এই সংগঠন যে উদ্দেশে গঠিত হয়েছে তার সাথে আমার আদর্শের মিল রয়েছে। রবীন্দ্রসংগীত আমাদের সদা জাগ্রত রাখে ও প্রেরণা দায়ী। বছর বছর সংগীত উৎসবের মাধ্যমে এই সংস্থা যেভাবে সংস্কৃতিমনা মানুষকে জাগিয়ে রেখেছে.. সংগীত চর্চার মধ্য দিয়ে ওই অপশক্তিকে প্রতিহত করতে হবে।

হয়ে আসছে তা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। যতই বাধা বিপত্তি আসুক না কেনো এই সংস্থা তার মহৎ উদ্দেশ্য থেকে বিন্দুমাত্র সরে আসবে না।"

পীযূষ বড়ুয়া বলেন, "বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা ফাউন্ডেশনের নামে সংগঠনটি বাংলাদেশ সরকারের জয়েন্ট স্টক কোম্পানির অ্যান্ড ফার্মস এর অধীনে নিবন্ধিত সংগঠন। নিবন্ধিত সংঘ স্মারকের ‘ক (১) ধারা অনুযায়ী কেবল সরকারি ও আর্থিক যোগাযোগ ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে সংগঠনটি ১৯৮৮ সালের ২৭ মে প্রতিষ্ঠিত নাম ‘বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা হিসেবেই পরিচালিত হবে।"

তিনি বলেন, “বাংলাদেশব্যাপী ফাউন্ডেশনের মূল কার্যক্রম বিস্তৃত থাকবে। এই ফাউন্ডেশন-রবীন্দ্রসংগীত শিল্পীদের সক্রিয় অংশগ্রহণে ‘বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা’র ব্যানারে রাজধানী ঢাকায় (মূল সংগঠন/শাখা) এবং বাংলাদেশের প্রতি বিভাগ ও জেলায় একটি করে বিভাগীয়/ জেলা শাখা গঠন, ঢাকা মহানগরের জন্য একটি আলাদা মহানগর শাখা গঠন এবং দেশের বাইরে কোনো দেশ বা সে দেশের রাজধানী বা যে কোনো শহর ভিক্তিক শাখা গঠন করতে পারবে যা ফাউন্ডেশনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পরিচালিত।

“এর বাইরে কোনো ব্যক্তি বা তথাকথিত সংগঠন এই সংস্থার সুনাম ব্যবহার করে অনুমতি ছাড়া একই নামে কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করলে সেটা হবে অবৈধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যারা অনুমতি ছাড়া এই সংস্থার নাম ব্যবহার করবেন তারা নিশ্চিতভাবে আইনি জটিলতায় পড়বেন।"

দুই দিনের উৎসবে যা থাকছে

দেশের খ্যাতনামা শিল্পীরা ছাড়াও সংস্থার শতাধিক শিল্পী দলীয় ও একক পরিবেশনা দেখা যাবে ১২ মে। অনুষ্ঠানের সূচনা হবে প্রথা অনুযায়ী পর পর তিনটি দলীয় গানের মধ্য দিয়ে। এরপর দেওয়া হবে গুণীজন সম্মাননা।

প্রথম দিনের অনুষ্ঠান দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। প্রথম পর্ব উদ্বোধন ও গুণীজন সম্মাননা। দ্বিতীয় পর্ব শুরু সন্ধ্যায়।

উদ্বোধনী দিনে এনামুল কবীর ও শিল্পী লিলি ইসলামের হাতে সম্মাননা তুলে দেবেন উৎসবের উদ্বোধক ও প্রধান অতিথি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। ওইদিন সভাপতিত্ব করবেন সংস্থার নির্বাহী সভাপতি আমিনা আহমেদ।

পরদিন ১৩ মে অনুষ্ঠান শুরুর সময় বিকালে ৫টা। ওইদিনও দেশ সেরা আবৃত্তিকার ও কণ্ঠশিল্পীরা অংশ নেবেন।

সূচনাতে ওইদিনও থাকবে সংস্থার প্রথা অনুযায়ী পর পর তিনটি কোরাস গান। উৎসব সবার জন্য উন্মুক্ত থাকছে।

Also Read: শুরু হল জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মেলন

Also Read: জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মেলনের পর্দা উঠছে বৃহস্পতিবার