শনিবারও কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত লাবনী পয়েন্টে এই ফেস্টিভ্যাল চলছে।
Published : 22 Feb 2025, 05:36 PM
কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতে শুরু হয়েছে চাকমা, মারমা, ম্রো, বাঙালিসহ ২১টি জাতিগোষ্ঠীর অংশগ্রহণে 'বিচ ফেস্টিভ্যাল’; যেখানে একুশের গান এবং দেশের গান থেকে শুরু করে ‘মারমা পাখা নৃত্য’, ‘বম জীবন ধারা নৃত্য’সহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সংস্কৃতি তুলে ধরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সেলের ব্যবস্থাপনায় এই আয়োজনের শুরুর দিন ছিল শুক্রবার। শনিবারও সৈকতের লাবনী পয়েন্টে উন্মুক্ত এই ফেস্টিভ্যালের আয়োজন রাখা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে শিল্পকলা একাডেমির জনসংযোগ বিভাগ জানিয়েছে।
উৎসবে অংশ নিয়েছে চাকমা, মারমা, ম্রো, ত্রিপুরা, লুসাই, খুমি, বম, খেয়াং, চাক, পাংখোয়া, তঞ্চঙ্গ্যা, মনিপুরি, সাঁওতাল, মাহালী, ওরাওঁ, মালপাহাড়িয়া, গারো, হাজং, কোচ, রাখাইন সম্প্রদায়ের শিল্পীরা।
এছাড়া কক্সবাজার জেলা শিল্পকলা একাডেমি, উপজেলা শিল্পকলা একাডেমি এবং স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠনের বাঙালি শিল্পীরাও উৎসবে যোগ দিয়েছেন।
উৎসবের উদ্বোধনী দিন প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ। সভাপতিত্ব করেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন। অনুষ্ঠানের সমন্বয় করেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম শামীম আকতার।
শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেন, “বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি জনগণের মাঝে জনবান্ধব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করতে চাই। কক্সবাজার আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এখানে বাংলাদেশের বিভিন্ন মানুষ আসেন পর্যটনের জন্য। তার সাথে আমাদের পাহাড় সংলগ্ন স্থান। কাজেই এই জায়গায় আমরা যদি এমন কোনো অনুষ্ঠান উপস্থাপন করতে পারি যাতে বাংলাদেশের মানুষ এতদিন যে কঠিন সময় পার করছে, সেই সময় নতুন স্বপ্নের বীজ বপন করতে পারি তাদের মাথায় তাহলে আমাদের কার্যক্রম স্বার্থক হবে।”
আলোচনা পর্ব শেষে বান্দরবান জেলার বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শিল্পীদের পরিবেশনা শুরু হয়।
প্রথমে বিভিন্ন ভাষায় ‘একুশের গান’ পরিবেশন করেন শিল্পীরা। সমবেত কণ্ঠে পরিবেশিত হয় ‘ধনধান্য পুষ্পভরা’ গানটি।
এরপর ‘মারমা পাখা নৃত্য’, ‘বম জীবন ধারা নৃত্য’ এবং ‘সংগীত’ পরিবেশিত হয়। এছাড়া ‘খুমি মাছ ধরা নৃত্য’, ‘ময়ূর নৃত্য’, ‘চাকমা গান’, ‘তঞ্চঙ্গা নৃত্য’, ‘ম্রো জুম নৃত্য’, ‘ত্রিপুরা গান’ ‘চাকমা প্রদীপ নৃত্য’, ‘লুসাই বাঁশ নৃত্য’, ‘সংগীত ও সম্প্রীতি নৃত্য পরিবেশিত হয়।
'দেশাত্ববোধক গান’ (মাহালী সাওতালী পাহাড়িয়া) পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সমতলের শিল্পীদের পরিবেশনা শুরু হয়। তারপর ‘দাসাই নৃত্য’ (সাওতালী), ‘পাহাড়িয়া নৃত্য’ এবং ‘কমেডি’ পরিবেশিত হয়।
এছাড়া শিল্পীরা পরিবেশন করে ‘ওরাও নৃত্য’ ও ‘মাহালী নৃত্য’। সবশেষে ‘মণিপুরী মৃদঙ্গ নৃত্য’ ও ‘মণিপুরী রাস নৃত্য’ পরিবেশনায় শেষ প্রথম দিনের আয়োজন।
শিল্পকলা একাডেমি জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার মূল প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে বাংলা ভাষাসহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর মাতৃভাষাকেও শ্রদ্ধা জানাতে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
এই আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশে বসবাসরত বিভিন্ন ভাষাভাষীর ২১টি জাতিগোষ্ঠীর মাতৃভাষায় পরিবেশিত সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বৈচিত্র্যময় বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে।