‘‘যারা ব্যাংকগুলোকে দখলে নিয়ে রেখেছে তাদের বের করে দিতে হবে। এদের অনেকেই সরকারের আপনজন। সরকার কঠোর না হলে কোনো ইতিবাচক ফলাফল হবে না।”
Published : 14 Jan 2024, 10:34 PM
নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের যারা শুভেচ্ছা জানাতে ভিড় করছেন, তাদের এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতির বিশ্লেষক আহসান এইচ মনসুর। তিনি সতর্ক করেছেন, এখন শুভেচ্ছার নামে যারা ভিড় করছেন তারাই ভবিষ্যতে অন্যায় সুবিধা চাইবে।
নতুন সরকারের সামনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও দেখছেন তিনি। আর আর্থিক খাতে সংস্কারে মোটাদাগে তিনটি পরামর্শ এসেছে তার কাছ থেকে।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান মনসুর বলেন, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য টাস্কফোর্স গঠন করতে হবে প্রতিটি ক্ষেত্রে। একটি মধ্যমেয়াদী পরিকল্পনা নিতে হবে যাতে তিন থেকে পাঁচ বছর সময় লাগবে। আর অন্যটি হলো ব্যাংকিং খাতের সংস্কার।
এর পাশাপাশি তিনি সরকারের মধ্যে ও বাইরে থেকে বিশেষজ্ঞদের এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়ার তাগিদ দেন তিনি।
রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সাপ্তাহিক আয়োজন ‘ইনসাইড আউট’ এ অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন আহসান মনসুর।
অনুষ্ঠানটি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ফেইসবুক পেইজ ও ইউটিউব চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
আধা ঘণ্টার এ আলোচনায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, সংকটের স্বরূপ, নতুন সরকারের সামনের চ্যালেঞ্জ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পরিস্থিতি, মুদ্রা বিনিময় হার, ব্যাংক ব্যবস্থার সংস্কার, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে রাজস্ব নীতি ও মুদ্রানীতির মত নানান প্রসঙ্গ উঠে আসে।
আলোচনায় মূল্যস্ফীতি কমিয়ে ২ থেকে ৩ শতাংশে নামিয়ে আনার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং যারা অন্যায়ভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে, তাদেরকে ব্যাংক থেকে বের করে দেওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন আহসান মনসুর। একই সঙ্গে জ্বালানির স্বয়ংক্রিয় মূল্য পদ্ধতি নির্ধারণ, রাজস্ব আয় বাড়ানো, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার কথাও বলেছেন তিনি। বলেছেন, অর্থনীতির চাপ থেকে বের হয়ে আসতে হলে এটাই করতে হবে।
মোট দেশজ উৎপাদন বা ডিজিপির তুলনায় করহার ৮ শতাংশ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় মন্তব্য করে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সাবেক এই কর্মকর্তা বলেন, এ কারণেই উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থায়নের পুরোটাই দেশের ভেতরে বা বাইরে থেকে ঋণ করতে হয়। এটা কোনো টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা হতে পারে না।
‘তাদের ভিড়তে দেবেন না’
অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজাতে নতুন সরকারের জন্য কী কী পরামর্শ থাকছে-এই প্রশ্নে আহসান মনসুর বলেন, “যারা ফুল ও বিভিন্ন জিনিস নিয়ে তাদের দরজায় ধাক্কা খাচ্ছে এবং ভাঙছে, তাদের এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ, তারাই যারা অনুগ্রহ চাইবে, সুরক্ষা চাইবে, সিস্টেমের অপব্যবহার করার জন্য আরও সময় চাইবে। তাদেরকে অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে।’’
সরকারের চ্যালেঞ্জ কী কী
সরকারের দীর্ঘমেয়াদী চ্যালেঞ্জ বিষয়ে অর্থনীতির এই বিশ্লেষক বলেন, “প্রথমটি হচ্ছে উচ্চ হারের মূল্যস্ফীতি। এটিকে সরকারের স্বীকৃতি দিতে হবে। দ্বিতীয়টি হচ্ছে সামষ্টিক অর্থনীতির জন্য বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারকে স্থিতিশীল করা। এটা না করতে পারলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না।”
গত দুই বছর ধরে রিজার্ভ ক্ষয় উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “গত ডিসেম্বরে সরকারের জোরালো পদক্ষেপে কিছুটা বেড়েছে। আরও বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে।’’
সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি, রাজস্ব আদায়ে জোর দেওয়া ও টাকা ছাপানো বন্ধ করার পরামর্শও দেন তিনি। বলেন, ‘‘সরকার কী করবে তা জানি না। তবে আমি মনে করি নীতি ও ঋণ সুদহার বাড়াতে হবে। নতুন মন্ত্রী এসেছেন, আশা করব বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করে সুদহার বাড়াবে।”
নীতি সুদহার বৃদ্ধির ফলে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার ও মূল্যস্ফীতি কীভাবে স্থিতিশীল হবে তার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ‘‘সুদহার বাড়লে ডলারের বিপরীতে টাকার দিকে ব্যবসায়ীরা গুরুত্ব দেবে। আমানতের সুদহার বাড়লে আমানতকারীরা ব্যাংকমুখী হবেন। তখন ডলারের বদলে ব্যাংকে টাকা রাখবেন সবাই। ডলারের প্রবাহ বাড়বে। এটাই সমাধানের মূল চাবিকাঠি অতিদ্রুত পদক্ষেপের।’’
বৈদেশিক মুদ্রার একক বিনিময় হার নিশ্চিতে জোর দিয়ে তিনি বলেন, “যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক একটি দর জানিয়েছে, ১১০ টাকায় বিক্রি করতে হবে। কিন্তু বাস্তবে তো এই দর নেই।
‘‘কেন ডলারের অনেকগুলো দর হবে? এটি বাজারের জন্য ভালো সংকেত দেয় না। প্রথমেই একটি দরে নিয়ে আসতে হবে ডলারকে।’’
রাজস্ব খাতেও সংস্কারের ওপর জোর দেন আহসান মনসুর। তিনি বলেন, “কোনো উন্নয়নশীল দেশের জন্যই ৮ শতাংশের নিচে কর-জিডিপি অনুপাত কাঙ্ক্ষিত নয়।’’
পশ্চিম থেকে অর্থায়ন কমবে কি?
নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমারা যে শীতল প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, তাতে উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়নে কোনো সমস্যা হবে কি না-এমন প্রশ্নে আইএমএফে কাজ করে আসা আহসান মনসুর বলেন, “নির্বাচন নিয়ে তাদের প্রতিক্রিয়ার কারণে ভবিষ্যতে অর্থায়ন পেতে কোনো সমস্যা হবে বলে মনে হয় না।
‘‘সত্যি কথা বলতে আমি বিশ্বাস করি যদি অর্থনৈতিক কাঠামো ঠিক রাখতে পারি, বিনিয়োগের ভালো পরিবেশে নিশ্চিত করতে পারি, সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রাখা যায়, বিনিময় হার ও মূল্যস্ফীতি স্থিতিশীলতায় আনা যায়, তাহলে বিনিয়োগকারীরা আসবেন।”
বিনিয়োগের জন্য ভালো পরিবেশ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘‘বাস্তবতা হচ্ছে বাংলাদেশ এমন জায়গা নয় যেখানে বিদেশিরা তাদের টাকা রাখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।
“আইনি কোনো সমস্যা দেখা দিলে ২০ বছরেও আদালতে নিষ্পত্তি হচ্ছে না। যে দেশে ২০ বছরেও ন্যায়বিচার হয় না সেখানে কে বিনিয়োগ করবে? এখানে আইনি অধিকার সুরক্ষিত নয়। এটি ইতোমধ্যে রাজনৈতিক এবং অন্যান্য উপায়ে লঙ্ঘন করা হয়েছে।’’
অনেক বড় বড় বিদেশি করপোরেট প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা কোরিয়ান ইপিজেডে এটি দেখেছি। আমরা গ্রামীণফোন ও বিকাশ নামের প্রতিষ্ঠানে এটি দেখেছি।
‘‘বিকাশ ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স পাচ্ছে না। এগুলো সবই সরকারের অভ্যন্তরে কিছু পক্ষপাতের প্রতিফলন, যা সমগ্র বিশ্ব থেকে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য খুব একটা সুবিধাজনক নয়।”
নানা কারণে বিদেশিরা দূরে চলে যাচ্ছে জানিয়ে আহসান মনসুর বলেন, “তারা ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, ভারতে এমনকি পাকিস্তানে যাচ্ছে, বাংলাদেশে আসছে না, এটি দুঃখজনক।’’
‘মেগা প্রকল্প আরও লাগবে’
সরকারের মেগা প্রকল্পগুলো মোটামুটি শেষ হয়ে আসায় ভব্যিষতের অর্থায়নের চাপ কমবে কি না-এ প্রশ্নে আহসান মনসুর বলেন, “সবকিছুই নির্ভর করছে সরকার নতুন মেগা প্রজেক্টে যাবে না কি কিছুক্ষণ বিরতি দেবে।
“তবে সরকারের প্রতি আমার পরামর্শ থাকবে এটাই যে, আপনাকে সব সময় কিছু মেগা প্রকল্প করতে হবে। একই সময়ে আমাদের এটি সঠিকভাবে করতে হবে, যা আমাদের বিনিয়োগে ভালো রিটার্ন দেবে।”
ঢাকায় ভূগর্ভস্থ মেট্রোরেলে বিনিয়োগ করা উচিত কি না, এই প্রশ্ন রেখে তিনি নিজেই বলেন, “উত্তর হলো, ‘হ্যাঁ’। এটি করার দরকার আছে? জাপান এতে অর্থায়ন করতে ইচ্ছুক।
‘‘যদি সমস্ত মহাসড়ককে চার লেইন, ছয় লেইন করতে চান, উত্তর হলো, ‘হ্যাঁ’। আমাদের এটা করতে হবে। কিন্তু একই সঙ্গে আমাদের নিজস্ব সম্পদ তৈরি করতে হবে।’’
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের শতভাগ অর্থই অভ্যন্তরীণ বা বৈদেশিক উৎস থেকে ধার করতে হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সে বিনিয়োগ লাভজনক হতে পারে না, টেকসই হতে পারে না।
‘‘যে রাজস্ব আদায় হয়-তা বেতন, মজুরি, সুদ পরিশোধে যায়। আমাদের ধার করা ৬০-৭০ শতাংশ কমাতে পারলে তা টেকসই হবে।”
জ্বালানি তেলের ব্যবসায় বেসরকারি লাইসেন্স দেওয়ার পরামর্শ
মার্চ থেকে জ্বালানির মূল্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ধারণ করলে জনসাধারণ ও সামগ্রিকভাবে অর্থনীতিতে কী প্রভাব পড়বে?-এই প্রশ্নে আহসান মনসুর বলেন, ‘‘আমি মনে করি আমাদের এটি ১০ বছর আগে করা উচিত ছিল। শুধু কেন আমরা এটা করি না, ভারত বহু বছর আগে এটি করেছে। পাকিস্তান তা করেছে। সবাই এটা করেছে।
‘‘এলপিজির দাম প্রতি সপ্তাহে দাম বাড়ে বা কমে যায়। কখনও ১০০ টাকায় উঠে আবার ৫০ টাকা কমে যায়। জ্বালানি খাত বেসরকারি পর্যয়ায়ে ছেড়ে দেওয়া উচিত।’’
জ্বালানির দাম ধরে রাখার সমালোচনা করে তিনি বলেন, “নিয়ন্ত্রণ করতে হলে চাল ও ডালের দাম নিয়ন্ত্রণ করুন, পেট্রোলিয়াম পণ্যের দাম কেন নিয়ন্ত্রণ করছেন।”
জ্বালানি তেলের ব্যবসায় বেসরসারি খাতকে সম্পৃক্ত করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে বেসরকারি খাত পারবে সারাদেশে পেট্রোলিয়াম পণ্য সরবরাহ করতে। শুধু তাদের পরিচালনা এবং প্রতিযোগিতার লাইসেন্স দিন। তারা বরং সরকারকে ব্যবসার বাইরে নিয়ে যাবে। যেমনটি টেলিকম খাতে টেলিটক ও বিটিসিএল চলে গিয়েছে।’’
ব্যাংকে সুশাসন কীভাবে ফিরবে
এমন প্রশ্নে আহসান মনসুর বলেন, ‘‘এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার। সরকার কি এটা করতে আগ্রহী হবে?”
তিনি বলেন, ‘‘আমি হলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা ব্যাংকিং বিভাগ সম্পূর্ণভাবে বাতিল করে দিতাম। এটি সম্পূর্ণরূপে অপ্রয়োজনীয় এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়।
‘‘ব্যাংকিং বিভাগকে অর্থ বিভাগের সঙ্গে একীভূত করে রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি সব ব্যাংককে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংক পৃথকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত নয়। এটি একটি খারাপ দৃষ্টান্ত এবং ফল হয়েছে ভয়ঙ্কর।’’
নব্বইয়ের দশকে ও দুই হাজার সালের শুরুতে ব্যাংক খাতে সংস্কারে ভালো ফল পাওয়া গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসা সরকার খারাপ দৃষ্টান্ত রাখতে শুরু করেছে। ব্যাংকগুলোর সুশাসনে ঘাটতি দেখা দেয়, সরকারই খারাপ হওয়ার সুযোগ করে দেয়। এর উদাহরণ হলো ইসলামী ব্যাংকের মতো একটি ব্যাংক দুরাবস্থায় গিয়েছে। ভালো একটি ব্যাংক সরকার ছিনতাই হতে দিয়েছে। এখন ব্যাংকটির ঋণ আদায় করা ছাড়া আর কোনো টাকা অবশিষ্ট নেই।’’
ইসলামী ব্যাংক এখন তাদের আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারবে এমন অবস্থায় নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, “অন্যান্য ইসলামী ব্যাংকের মধ্যে অনেকের অবস্থা একই। প্রচলিত ধারার আরও ব্যাংকের অবস্থাও ভালো নয়। ব্যাংকগুলোতে মূলধন যোগান দিতে সরকারের কয়েক লাখ কোটি টাকা লাগবে। এজন্য উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে কারিগরি ও অর্থায়ন সহযোগিতা লাগবে।’’
পরিস্থিতি বদলানোর জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরি জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনি যদি এটি না চান, তাহলে কিছুই করা হবে না। এবং এটি আরও খারাপ হবে।
‘‘আপনি যদি সত্যিই এটি পরিবর্তন করতে চান, তাহলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের টেকনোক্র্যাট, বাংলাদেশ ব্যাংকের টেকনোক্র্যাট এবং অন্যান্যদের বলতে হবে, আপনি যা করা দরকার তা করুন। যারা কাজ করবে তাদের হাত বেঁধে রাখা যাবে না। কাজ করতে দিতে হবে।’’
আহসান মনসুর বলেন, ‘‘যারা ব্যাংকগুলোকে দখলে নিয়ে রেখেছে তাদের বের করে দিতে হবে। এদের অনেকেই সরকারের আপনজন। সরকার কঠোর না হলে কোনো ইতিবাচক ফলাফল হবে না।”
মূল্যস্ফীতির নিয়ে আরও উচ্চাভিলাষী হতে হবে
ডলার সংকটের প্রেক্ষাপটে হারানো দর টাকা ফিরে পেতে পারে কি না-এমন প্রশ্নে আহসান মনসুর বলেন, ‘‘হয়ত পাঁচ বা ১০ টাকা টাকা কমতে পারে ডলারের বিপরীতে।”
মূল্যস্ফীতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমরা সব সময়ই ৫ শতাংশের উপরে মূল্যস্ফীতি ধরে পরিকল্পনা করি। এখন আমাদের মূল্যস্ফীতি ৯-১০ শতাংশের ঘরে।
“এখনও সরকার মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ৬-৭ শতাংশ করছে। কেন এটি ২-৩ শতাংশ নয়। এটি আমাদের ঠিক করতে হবে।”
ভারতের মূল্যস্ফীতি ৪ শতাংশের ঘরে থাকে জানিয়ে তিনি বলেন, “নিজ দেশে মূল্যস্ফীতি বেশি রেখে ২ শতাংশের ঘরে থাকা দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য করে টাকা শক্তিশালী করা সম্ভব নয়।”
ডলার সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব?-এ প্রশ্নে আহসান মনসুর বলেন, ‘‘আমি আগেই বলেছি, ডলারকে স্থিতিশীল করতে টাকাকে আরও আকর্ষণীয় করতে হবে। নইলে বিনিময় হারকে স্থিতিশীল করতে পারবেন না।
‘‘ডলারের বিপরীতে স্থিতীশীলতা পেতে আপনাকে মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে আনতে হবে।’’
আর্থিক খাতের পরামর্শ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘তিনজন মন্ত্রী ও এক প্রতিমন্ত্রীর সবাইকে নতুন দেখেছি। তারা এই চাকরিতে নতুন। একটি প্লাস পয়েন্ট হলো তারা খোলা মনের অধিকারী। আশা করি তারা স্বার্থান্বেষী মহলের হাতে ধরা পড়বেন না।’’