বন্ধুর পথ সামনে রেখে ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ যাওয়ার বাজেট নিয়ে আসছেন মুস্তফা কামাল

অনেক চ্যালেঞ্জ হাজির হয়েছে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের আগে; সংকট কাটিয়ে ওঠার পাশাপাশি রয়েছে আইএমএফের শর্ত পূরণ ও নির্বাচনকালীন রাজনৈতিক প্রত্যাশা মেটানোর চাপ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 May 2023, 07:30 PM
Updated : 31 May 2023, 07:30 PM

আয়ের চেয়ে বেশি ব্যয়ের হিসাব মেলানো সবসময়ই জটিল; বাজেট এলে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রীকে বরাবরই এ কাজটি করতে হয়। বর্তমান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অঙ্ক মেলানোর এ গুরু দায়িত্ব সামলাচ্ছেন পঞ্চমবার। প্রথমবার ‘সমৃদ্ধির সোপান’ থেকে স্বপ্নযাত্রা শুরুর কথা বলতে পারলেও পরের চারবারই তিনি বিশেষ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন; কাঁটা সরিয়ে তাকে এগোতে হয়েছে, এবারও তাই।

কোভিড মহামারীতে পিষ্ট হওয়ার পর পুনরুদ্ধারকালীন সময়েই যুদ্ধের হানায় বৈশ্বিক অর্থনীতি পিছলে পড়ে; সেই তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে বাদ যাননি কামালও। ব্যবসা থেকে রাজনীতিতে আসা অর্থমন্ত্রী কামালের পঞ্চম বাজেট দেওয়ার প্রেক্ষাপট যে কারণে মসৃণ নয়।

অনেক চ্যালেঞ্জ হাজির হয়েছে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের আগে; সংকট কাটিয়ে ওঠার পাশাপাশি রয়েছে আইএমএফের শর্ত পূরণ ও নির্বাচনকালীন রাজনৈতিক প্রত্যাশা মেটানোর চাপ।

বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় জাতীয় সংসদে নতুন অর্থবছরের বাজেট নিয়ে হাজির হওয়ার আগে এগুলোর মধ্যে তাকে সবার আগে ভাবতে হয়েছে মূল্যস্ফীতির উচ্চ হার নিয়ে। পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জেরবার জনজীবনে স্বস্তি আনার কৌশল ঠিক করতে হয়েছে।

মোটামুটি সাত লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকার যে বাজেট প্রস্তাব করতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের দ্বাদশ অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল, তাতে অর্থনীতির বাকি সব সংকট ও চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণেই অগ্রাধিকার থাকছে বলে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক শামসুল আলমও এমন আভাস দিয়েছেন। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেছেন, “সবার কাছে মূল্যস্ফীতি একটি বড় উদ্বেগের জায়গা। তাই সেটাকে গুরুত্ব দিয়েই চিন্তা করছি যাতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। জনগণের জন্য এটাই বড় উপহার হবে।”

  • বাজেটের সম্ভাব্য আকার ৭ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা (জিডিপির ১৫.২%)

  • চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে ১২.৩৪% বেশি

  • সম্ভাব্য মোট রাজস্ব আয় ৫ লাখ কোটি টাকা, এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা

  • আনুমানিক বাজেট ঘাটতি ২ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা; জিডিপির ৫.২%

  • প্রবৃদ্ধি ৭.৫% (সম্ভাব্য), অর্জিত হলে অর্থবছর শেষে জিডিপি হবে ৫৩ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা

  • সম্ভাব্য এডিপি ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা

  • বিদেশি ঋণ ১ লাখ ২৭ হাজার কোটি টাকা (সম্ভাব্য)

  • নিট ব্যাংক ঋণ ১,৩২০০০ কোটি টাকা, সঞ্চয়পত্র ১৮,০০০ কোটি টাকা (সম্ভাব্য)

  • মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য ৬.৫%

বাজেটের আগের দিন বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এবারের বাজেটের মূল দর্শন হিসেবে ‘২০৪১ সালের মধ্যে সুখী-সমৃদ্ধ উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ’কে তুলে ধরা হয়েছে।

"সঙ্গত কারণেই এবারের বাজেটে স্বাস্থ্য, কৃষি, খাদ্য উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনাকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। অর্থবছরের পুরো সময় জুড়েই থাকবে সরকারের নানা ধরনের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি, বাড়ানো হয়েছে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা,” বাজেটের লক্ষ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

অর্থনীতির চালচিত্র অর্থমন্ত্রীকে নির্বাচনের আগে নতুন বাজেটের আকার জিডিপির আনুপাতিক হারে গতবারের চেয়ে বাড়ানোর বিলাসিতার দিকে যেতে দেয়নি। টাকার অংকে তার এই বাজেট বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ১৫ শতাশের মত বেশি।

২০২২-২৩ অর্থবছরের মূল বাজেটে ৬ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের ফর্দ সাজানো হলেও অর্থবছরের শেষে এসে তা সংশোধন করে ৬ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়।

টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রথম বাজেট দেওয়ার ছয় মাস না যেতেই কোভিডের ছোবল এসে পড়ে অর্থনীতিতে। সেই পরীক্ষায় টিকে থাকার সংগ্রামের মধ্যেই গায়ের উপর এসে পড়ে ইউক্রেইন যুদ্ধ; যে জের টেনেই অর্থমন্ত্রী কামালকে করতে হয়েছে চতুর্থ বাজেট।

আর এবার উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে কঠিন হয়ে পড়া জীবনযাত্রা এবং অস্থির সময়ের অর্থনীতিতে পরিস্থিতি আরও সঙ্গিন। এরপরও ভোটের আগে সরকারের মেয়াদের শেষ বাজেটে পথ হারানো অর্থনীতিকে উত্তরণের দিশা দেওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে পরিকল্পনা সাজাতে হয়েছে তাকে।

বিপুল এ চাপ সামলে সংকটের পথ মাড়িয়েই ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ পৌঁছানোর বাজেট দিতে চান মুস্তফা কামাল।

চাটার্ড অ্যাকাউটেন্ট হিসেবে কর্মজীবন শুরু করা মুস্তফা কামাল পরিকল্পনামন্ত্রী থেকে অর্থমন্ত্রী হওয়ার পর বাজেট শুরু করেছিলেন ‘সমৃদ্ধির সোপানে বাংলাদেশ, সময় এখন আমাদের’- এই শিরোনাম দিয়ে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে তিনি যখন তার প্রথম বাজেট প্রণয়ন করেন, টানা তিনবারের আওয়ামী লীগ সরকারেরও প্রথম বাজেট ছিল সেটা। এর মাঝে সময় পাল্টেছে; বৈশ্বিক কারণে গতি হারিয়েছে অর্থনীতি।

এসব চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এবার তিনি যাত্রা শুরু করতে চান 'উন্নয়নের অভিযাত্রার দেড় দশক পেরিয়ে, স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা'। ডিজিটাল যুগের স্মার্ট নাগরিকদের জন্য সমাজ, সরকার ও অর্থনীতি সব পর্যায়ে সরকারের ‘স্মার্ট’ স্লোগান তুলে ধরার প্রস্তুতি নিয়েছেন তিনি। তবে বরাবরের মতই তাকে বাজেট সাজাতে হয়েছে বড় ঘাটতি রেখে; টাকার অঙ্কে যা ২ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি।

বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত দেড় দশকে বর্তমান সরকারের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের অর্জন একটি টেকসই গ্রাউন্ডওয়ার্ক বা ভিত্তিপ্রস্তর তৈরি করে দিয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশ চারটি মূল স্তম্ভের উপর প্রতিষ্ঠিত হবে। স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট গভর্নমেন্ট, স্মার্ট সোসাইটি ও স্মার্ট ইকোনমি। 

আর আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট 'স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে প্রথম বাজেট' বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছে।

বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের অর্থ মন্ত্রণালয় সামলাতে গিয়ে আয়-ব্যয়ের বিশাল ফারাক মেটানোর চাপ বরাবরই থাকে; এবার তার চেয়েও বেশি হিসাব নিকাশের অঙ্ক করতে হয়েছে মুস্তাফা কামালকে।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করে প্রবৃদ্ধির যে উচ্চ লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করতে যাচ্ছেন তিনি- তা কীভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে, তা জানার আগ্রহ রয়েছে বিশ্লেষকদের মধ্যে।

বহুমুখী চাপ

আয় ও ব্যয়ের ফারাক বেড়ে যাওয়ায় পারিবারিক ব্যয়ের হিসাব মেলাতে হিমশিম খাচ্ছে সীমিত আয়ের মানুষ; ভাঙতে হচ্ছে সঞ্চয়।

মহামারীর ধাক্কায় ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে টানা দুই বছর অর্থনীতির যে ক্ষতি হয়েছিল, সেটা চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেটে কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা ছিল; তবে সাফল্য খুব বেশি আসেনি।

সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, বিদেশি মুদ্রার সংকটে রিজার্ভ ধরে রাখা, বহিঃখাতের ভারসাম্য, রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি, বাড়তে থাকা বাজেট ঘাটতির অর্থায়ন, চলমান উন্নয়ন কর্মসূচি চালিয়ে নেওয়া, প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় রাখা এবং খাদ্য নিরাপত্তার মতো বহুমুখী চাপ সামলানোর বাজেট করতে হচ্ছে অর্থমন্ত্রীকে। সেই সঙ্গে থাকছে ঋণের পরের কিস্তি পেতে আইএমএফ এর শর্ত বাস্তবায়নের চাপ।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বাজেটের আগে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আইএমএফের সংস্কার কর্মসূচিকে ‘শর্ত নয় করণীয়’ মন্তব্য করে বলেছেন, বৈষম্যসহ সব ধরনের চ্যালেঞ্জ দূর করাই সরকারের মূল লক্ষ্য। এজন্য পর্যায়ক্রমে এসব করণীয় কৌশলগত কারণে নিজেদের প্রয়োজনেই বাস্তবায়ন করা হবে।

আর এমন প্রেক্ষাপটে আগামী বাজেটের মূল দর্শন অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার ও বিভিন্ন বণ্টনের ন্যায্যতা নিশ্চিত করা হওয়া দরকার বলে পরামর্শ দিয়েছেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদের কাছ থেকে এসেছে স্বল্পমেয়াদী পদক্ষেপের মাধ্যমে সংকট মোকাবিলার তাগিদ।

আর ব্যবসায়ীদের সংগঠন এমসিসিআই এক বিবৃতিতে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল করার উদ্যোগের পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রাজস্ব আয় বাড়ানো, গ্যাস-বিদ্যুৎ ঠিক রাখা এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে।

সুখবরও আছে কিছু

চতুর্মুখী চাপ কাঁধে নিয়ে নতুন বাজেটের পরিকল্পনা অর্থমন্ত্রী কামালকে খুব বেশি স্বস্তির জায়গা না দিলেও সুখবর যে একেবারেই নেই, তা নয়। আমদানি নিয়ন্ত্রণ ও ব্যয় সাশ্রয়ের নীতির ফলে আগের অর্থবছরের পাহাড়সম বাণিজ্য ঘাটতি এবার কমে এসেছে। লেনদেন ভারসাম্যেও উন্নতি হয়েছে। রেমিটেন্স ও রপ্তানি আয়েও প্রবৃদ্ধি বজায় রয়েছে।

আলোচনায় আইএমএফের শর্তপূরণ, জনতুষ্টি

নির্বাচনের ঠিক ছয় মাস আগে এ বাজেট নিয়ে কৌতুহলের কমতি নেই। রয়েছে ভর্তুকি কমানোসহ আইএমএফের একগুচ্ছ শর্ত পূরণের অঙ্গীকার রক্ষার বিষয়টি। শর্ত মেনে ভতুর্কি তুলতে গেলে তা চাপ বাড়াবে সাধারণের ওপর। এগুলো বিবেচনা করে হিসাব নিকাশ চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানান অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

করমুক্ত আয় সীমা বাড়ানো, সাধারণের ওপর প্রভাব পড়ে এমন পণ্যে নতুন কর আরোপ না করা, কৃষিসহ কিছু ক্ষেত্রে ভর্তুকি বজায় রাখা, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে বরাদ্দ বাড়ানো, সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানোর ঘোষণার যে আভাস এখন পর্যন্ত মিলেছে, সেগুলোর মাধ্যমে জনগণের ওপর চাপ কমিয়ে তাদের সন্তুষ্ট করার পদক্ষেপের অংশ বলে মনে করা হচ্ছে।

কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারপ্রধানের পরামর্শ মেনে নির্বাচনের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে অর্থনীতির চাপ কাটিয়ে ওঠার দিকে। এ কারণে আগের নির্বাচনী বছরগুলোর বাজেটের সঙ্গে এটির মিল পাওয়া যাবে না।

পরিকল্পনামন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর কথাতেও সেরকম আভাস মিলছে। এ বিষয়ে এম এ মান্নান বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছেন নির্বাচনী বাজেট আবার কী? আমরা জনগণের জন্য কল্যাণ করি। সকল বাজেটেই আমাদের জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ। ইটস ভেরি রাইট, তাই হওয়া উচিত। তারপরও আমাদের মাথার ওপরে নির্বাচনের প্রেক্ষিত আছে।”

নির্বাচনের বছরে জনগণের সন্তুষ্টির জন্য কী থাকছে- এমন প্রশ্নে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বলেন, “আলাদা করে কিছু থাকছে না। সরকার এত বছর ধরে যেসব মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, তার মধ্যে বেশ কয়েকটি এ বছরের শেষের দিকে উদ্বোধন করা হবে। এগুলোই নির্বাচনী উপহার।”

বাজেট তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, প্রস্তাবিত বাজেট প্রণয়নে ছায়া আকারে আইএমএফের সংস্কার ও শর্তের বিষয়গুলোও গুরুত্ব পেয়েছে। অর্থমন্ত্রী শর্ত পূরণের বিষয়ে কিছু ঘোষণাও দিতে যাচ্ছেন। যেগুলোর মধ্যে আর্থিক খাত সংস্কার, খেলাপি ঋণ কমানো, ভর্তুকির মত বিষয় থাকছে।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ- জিডিপি বৃদ্ধির ছক

চলতি অর্থবছরের এপ্রিল শেষে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ হারে। খাদ্যপণ্যে যা আরও বেশি। এর প্রভাব সর্বত্রই দৃশ্যমান।

উচ্চ এ হার আগামী অর্থবছর শেষে সাড়ে ৬ শতাংশে বেঁধে রাখার লক্ষ্য নিয়ে এগোতে চান অর্থমন্ত্রী।অথচ সাম্প্রতিক সময়ে মূল্যস্ফীতির গ্যাড়াকলে নানামুখী দোটানার মধ্যেই রয়েছে সরকার।

বাজেট ঘাটতি মেটাতে বড় অংকের ব্যাংক ঋণ নিতে হচ্ছে, যা উসকে দিচ্ছে মূল্যস্ফীতিকে। আবার মূল্যস্ফীতিতে মুখ্য ভূমিকা রাখা সরবরাহ সমস্যা ও আমদানিজনিত বৈশ্বিক কারণও মোকাবিলা করতে হচ্ছে।

সিপিডি বলছে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজারভিত্তিক সুদহার চালু করা দরকার। এতে আবার ব্যবসার খরচ বেড়ে যাবে। অপরদিকে সামাজিক সুরক্ষার আওতায় ঝুঁকিপূর্ণদের সরাসরি সহায়তার মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি আটকানোর পদক্ষেপ একটি আদর্শ বাজেটের আর্থিক ভারসাম্যের উদ্দেশ্যের বিপরীত।

এত কিন্তুর মধ্যেও সরকার কয়েক মাসের মধ্যে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চায় জানিয়ে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বলেছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় এবার বাজেটের আকার খুব একটা বড় হবে না। এ হার কমিয়ে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং প্রবৃদ্ধিকে প্রধান লক্ষ্য করে বাজেট করা হচ্ছে।

বাজেটে আয়-ব্যয়ের কোন দিকে বেশি গুরুত্ব দিতে চান- এমন প্রশ্নে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের গবেষণা পরিচালক অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মূল্যস্ফীতি। অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়ন মানেই হচ্ছে পিছিয়ে পড়া মানুষকে কিছু স্বস্তি দেওয়া।

এদিকে সংকটের এ সময়েও অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলনে আগের মত উচ্চাভিলাষী থাকছেন। বাজেটে এ হার সাড়ে ৭ শতাংশ প্রস্তাব করা হচ্ছে। অথচ সাময়িক হিসাবে চলতি অর্থবছর শেষে যা হবে ৬ দশমিক ০৩ শতাংশ।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর সরাসরিই বললেন, এতটা প্রবৃদ্ধি পূরণ হওয়ার নয়।

“কারণ অবস্থা তো ভালো না। মূল্যস্ফীতির চাপ, বিনিয়োগ কমে যাচ্ছে, আমদানি কমে যাচ্ছে। এই পরিবেশে প্রবৃদ্ধি খুব একটা যে হবে সেটা আশা করা ঠিক না। এ বছর বলা হচ্ছে ৬ দশমিক ০৩। সেটাও কমে হয়ত ৫ এর ঘরে চলে আসবে। আগামী বছর যে খুব একটা ব্যতিক্রম কিছু হবে তা মনে হয় না।“

এমন প্রেক্ষাপটে অর্থনীতির স্থিতিশীলতাকে প্রধান গুরুত্বে রেখে সরকারকে কাজ করা উচিত বলে পরামর্শ তার।

অর্থনীতিবিদদের মতে, সরকার ব্যাংক খাত থেকে বেশি ঋণ নিলে বেসরকারি খাত চাহিদা অনুযায়ী ঋণ পায় না, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও জিডিপির প্রবৃদ্ধিতে। সে রকম হলে আগামী বাজেটে জিডিপির বিপরীতে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বিনিয়োগ করা কঠিন হবে। আর কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় বিনিয়োগ না হলে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ৭.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে না।

জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে কিছু পদক্ষেপের ঘোষণা আসতে পারে বাজেটে। স্থানীয় শিল্পকে অগ্রাধিকার দিতে শুল্ক সুরক্ষার পথে হাঁটতে পারেন অর্থমন্ত্রী। কৃষি উৎপাদনে উৎসাহ দিতে এবারও প্রণোদনা ও ভর্তুকি অব্যাহত রাখার হিসাবই করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর সালেহ উদ্দিন আহমেদ একই সঙ্গে শিল্পে কর্মসংস্থান বাড়াতে এসএমই শিল্প খাতে নজর দেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন। তবে বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চেয়ে সামাজিক উন্নয়নের চেষ্টা বাজেটে থাকা দরকার বলে তিনি মনে করছেন।

ভর্তুকি: আইএমএফের শর্ত মেনে স্বস্তি থাকবে?

অর্থ মন্ত্রণালয় বাজেটে ভুর্তকির যে হিসাব করেছে তাতে দেখা গেছে জ্বালানি তেল-গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কারণে এসব খাতে নতুন করে ভর্তুকি বাড়বে না। তবে আগের অন্যসব খাতে ভর্তুকি আরও অনেক বাড়ানোর প্রস্তাব থাকছে। নতুন বাজেটে খাদ্য ভর্তুকিও হাজার কোটি টাকার মত বাড়ানোর ছক কষা হয়েছে।

আইএমএফের ভর্তুকি কমানোর শর্তের মধ্যেই চলতি অর্থবছরের চেয়ে আগামী অর্থবছরে ভর্তুকি বাড়ানোর আভাস মিলেছে পরিকল্পনামন্ত্রীর কথায়। বাজেটের খসড়া বলছে, এক লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা প্রস্তাব করা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকির পরিমাণ ছিল ৮১ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা, যা পরে ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়।

পরিকল্পনামন্ত্রী মান্নান বলেন, “আইএমএফ চাওয়ার প্রেক্ষিতে ভর্তুকি থেকে সরে আসার ক্ষেত্রে আমাদেরও কিছু বক্তব্য আছে। ঢালাওভাবে সবক্ষেত্র থেকে আমরা সরে আসব না। সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় অসহায় মানুষদের যে সামান্য টাকা দেয় সেখান থেকে আমরা সরে আসতে পারব না। বরং এখানে আমি বলব আরও বাড়াও।

“খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করার জন্য আরও যেটুকু বাকি আছে সেটুকু অর্জন করতে হবে। এজন্য সার, বীজ, গবেষণা, যান্ত্রিকীকরণ, বাণিজ্যিকীকরণ এগুলোকে আমরা প্রমোট করব।”

রাজস্ব: তবুও পরোক্ষ করে জোর

উচ্চ মূল্যস্ফীতির এ সময়ে অর্থমন্ত্রী আয়করে ছাড় দেওয়ার দাবি কিছুটা মেনে নিচ্ছেন বলে শোনা যাচ্ছে। আয়মুক্ত করা সীমা তিন লাখ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে তিন লাখ করার হতে পারে। তবে অন্য খাত থেকে আয় বাড়ানোর পদক্ষেপ থাকছে।

রাজস্ব বাড়াতে কার্বন কর চালু, সম্পদ কর বাড়ানো, ফ্ল্যাট-আবাসনে বাড়তি কর, আরও ছয় ধরনের সেবায় রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক করার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

এছাড়া আয় বাড়াতে বেশ কিছু শুল্ক-কর ছাড় সুবিধা বাতিল, কর অবকাশ সুবিধা কমানোর প্রস্তাবও আসতে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে বেশ কিছু খাতের ওপর থেকে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা তুলে এবং সবক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের ঘোষণা থাকতে পারে বলে আভাস মিলছে। ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) বাড়ানোর মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের গতি আনার জোরালো উদ্যোগের কথা বলবেন মুস্তফা কামাল।

  • রাজস্ব: ২,২৭,০০০ কোটি টাকা (এনবিআরের); প্রবৃদ্ধি ১০.৫৪% (জুলাই-মার্চ ২০২২-২৩); লক্ষ্যমাত্রার ৬০.৯৫%

  • আমদানি: ৬২.৩৯ বিলিয়ন ডলার; কমেছে ৮.১৫% (জুলাই-মার্চ ২০২২-২৩)

  • রপ্তানি: ৪,৫৬৭ কোটি ডলার; বেড়েছে ৫.৩৮% (জুলাই-এপ্রিল ২০২২-২৩)

  • রেমিটেন্স: ১,৭৭১ কোটি ডলার; প্রবৃদ্ধি ২.৩৯% (জুলাই-এপ্রিল ২০২২-২৩)

  • বাণিজ্য ঘাটতি: ১,৪৬১ কোটি ডলার; কমেছে ৪১.৬৩% (জুলাই-মার্চ ২০২২-২৩)

  • বিনিয়োগ- এফডিআই: ১৮০ কোটি ৩৯ লাখ ডলার (জুলাই-ডিসেম্বর ২০২২-২৩)

  • রির্জাভ: ২৯.৯৬ বিলিয়ন ডলার (২৪ মে, ২০২৩ শেষে)

  • টাকার অবমূল্যায়ন: এক বছরে ২২.৯৫%; প্রতি ডলার ১০৮ টাকা ৭ পয়সা(২৪ মে)

  • মূল্যস্ফীতি: ৯.২৪% (এপ্রিল, ২০২৩)

  • জিডিপি: ৬.০৩% (সাময়িক হিসাবে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে)

  • এডিপি বাস্তবায়ন: ৫০.৩৩% (জুলাই-এপ্রিল, ২০২২-২৩)

  • বিদেশি ঋণ ছাড়: ৫৩৬ কোটি ডলার (জুলাই-মার্চ, ২০২২-২৩)

  • বেসরকারি ঋণ প্রবৃদ্ধি: ১২.০৩% (জুলাই-মার্চ, ২০২২-২৩)

আগামী বাজেটে মোট পাঁচ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণের যে প্রস্তাবের খসড়া করা হয়েছে, তাতে এনবিআরের মাধ্যমে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা আহরণের লক্ষ্য ধরা হচ্ছে। কর-জিডিপি অনুপাতে এ লক্ষ্যমাত্রাও অনেক কম বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। বরাবরের মত এবারও জোর দেওয়া হচ্ছে পরোক্ষ করে। এ নিয়েও দীর্ঘদিন ধরে আপত্তি জানিয়ে আসছেন তারা।

সাম্প্রতিক সময়ে আয় কমে যাচ্ছে জানিয়ে সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন বলেন, অসমতা দূর করে প্রবৃদ্ধির সুফল সবার ঘরে পৌঁছে দিতে প্রত্যক্ষ করে জোর দিতে হবে। বিশ্বের কোনো দেশই ভ্যাট নির্ভর নয়। ভ্যাট নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

ঋণ চুক্তির সমঝোতায় আইএমএফের চাওয়া অনুযায়ী আগামী অর্থবছরে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ হারে বাড়তি রাজস্ব বাড়াতে সম্মতি দেয় বাংলাদেশ। বাজেটে এ নিয়ে অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা থাকার কথা জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। শর্ত মেনে রাজস্ব আদায় ব্যবস্থাপনা সংস্কারের কথাও স্থান পাবে বাজেট বক্তৃতায়।

ঘাটতি বাজেটে অর্থায়নের চ্যালেঞ্জ

সরকারের আয় ব্যয়ের বিশাল ফর্দ মেলাতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী ও তার দলকে বেশ কঠিন পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হয়েছে। দেশের কর ও জিডিপির অনুপাতে এতদিনেও আশানুরূপ উন্নতি না হওয়ায় বরাবরের মত বড় ঘাটতির বোঝাই টানতে হচ্ছে।

পিআরআই এর নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, নতুন বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ প্রায় দুই লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকার আশেপাশে থাকবে। এই ঘাটতির অর্থের যোগান দেওয়া সরকারের জন্য খুবই কঠিন হবে।

তার মতে, “মানুষ সঞ্চয়পত্র ভাঙছে। তাহলে বেশির ভাগ টাকা ব্যাংক থেকে নিতে হবে। এদিকে ব্যাংকিং খাতে ডিপোজিট গ্রোথ নেই বললেই চলে। গত বছর মাত্র সাড়ে ৭ শতাংশ। প্রাইভেট সেক্টরে ডিপোজিট গ্রোথও ১১ শতাংশে নেমে এসেছে। প্রতিমাসেই কমছে, সামনে আরও কমতে পারে।“

অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান থেকে সিপিডি বলছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনুদানসহ বাজেট ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ২০১ কোটি টাকা। ব্যাংক থেকে ঋণ বেড়ে মার্চ পর্যন্ত হয়েছে ৮২ হাজার কোটি টাকা।

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা। আর ১২ মাসে এই ঘাটতি হতে পারে ৪০ হাজার কোটি টাকা।

নিম্ন আয় শ্রেণির মানুষের প্রত্যাশা পূরণের চেষ্টার অংশ হিসেবে প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তার খাতে ভর্তুকি আরও বাড়ার কথা বলেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী মান্নান। তবে আওতা আর নাও বাড়তে বলে আভাস দিয়েছেন।

একই সঙ্গে সর্বজনীন পেনশনের ঘোষণা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বাজেটে, যা ২০২৮ সালের পর বাধ্যতামূলক করা হতে পারে।

সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় আগামী অর্থবছরে বরাদ্দ আরও কিছু বাড়ানোর প্রস্তাব করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী। তবে পেনশন ও সঞ্চয়পত্রের সুদ বাদ দিলে বাজেটে সামাজিক সুরক্ষা যে খুব একটা থাকে না, সে কথা তুলে ধরে অর্থনীতির শিক্ষক সায়মা বিদিশা বলছেন, বরাদ্দ বাড়ানোর বিকল্প নেই।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় সামাজিক বীমা চালু এবং আরও ব্যাপকভিত্তিক কর্মসংস্থানমূলক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করার কথাও বলেন তিনি।

বাজেটে লেনেদেন ভারসাম্য ও বিদেশি মুদ্রার সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে রিজার্ভ ঠিক রাখার পদক্ষেপের কথাও অর্থমন্ত্রী জানাবেন।

অর্থনীতির এসব জটিল হিসাব অবশ্য সাধারণ নাগরিকের মাথাব্যথার কারণ নয়। বাজেট এলেই তাদের মাথায় সবচেয়ে বড় যে চিন্তা ভর করে– জিনিসপত্রের দাম আর জীবনযাত্রার ব্যয় কোথায় কতটা বাড়বে। সে প্রশ্নের উত্তরও মিলবে অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতায়।

[প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন জাফর আহমেদ, ফয়সাল আতিক ও আবু তালেব]