“আমি হিসাব করে দেখেছি, সমস্ত তেল কোম্পানিগুলো গত তিন বছরে ১৪ বিলিয়ন ডলারের ডাকাতি করেছে”, বলেন তিনি।
Published : 24 Mar 2024, 07:52 PM
রিজার্ভ সংকটের জন্য সামষ্টিক অর্থনীতিতে যে চাপ তৈরি হয়েছে তার জন্য বৈশ্বিক তেল রপ্তানিকারক কোম্পানিগুলোকে দায়ী করেছেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।
তিনি বলেছেন, ‘‘তিন বছরে বাংলাদেশ থেকে তেল কোম্পানিগুলো ১৪ বিলিয়ন ডলার ডাকাতি করে নিয়ে গেছে।’’
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএস আয়োজিত ‘আনপ্যাকিং দ্যা ইকোনোমিক মেনিফেস্টো অব দ্যা আওয়ামী লীগ; ট্রেন্ডস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস ফর টুমোরোস বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বক্তব্য দেন।
ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরুর পর জ্বালানি তেলের বাড়তি দাম পরিশোধ করতে গিয়ে বাংলাদেশে সামষ্টিক অর্থনীতিতে চাপ তৈরি হয় জানিয়ে তৌফিক-ই-ইলাহী বলেন, ‘‘এখানে একটি ডাকাতি হয়েছে। আমি হিসাব করে দেখেছি, সমস্ত তেল কোম্পানিগুলো গত তিন বছরে ১৪ বিলিয়ন ডলারের ‘ডাকাতি’ করেছে।’’
যুদ্ধ শুরুর আগে অশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ছিল ৬০ ডলারের ঘরে। এক পর্যায়ে তা ১৩০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। পরে অবশ্য দাম কমে আসে। এখন ৮০ ডলারের ঘরে উঠানামা করছে।
তবে ডলার সংকটের পর বাংলাদেশের মুদ্রা মান হারানোর পর দর কমার সুবিধা আসলে ততটা বেশি পায়নি বাংলাদেশ। কারণ, এই দুই বছরে টাকা দর হারিয়েছে ২০ শতাংশের মতো।
জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, ‘‘রিজার্ভ থেকে এ পরিমাণ ডলার চলে যাওয়ায় সংকটটা তৈরি হয়েছে। সামষ্টিক অর্থনীতিতে সমস্যার যে কারণগুলো বলা হচ্ছে তা তাত্ত্বিক দিক আসছে।’’
এ পরিমাণ ডলার চলে যাওয়ায় ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীলতা হারায়, বৈদেশিক বাণিজ্যর চলতি হিসাব ঘাটতিতে পড়ে বলেও মনে করেন তিনি।
ইউক্রেইন-রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরের বছর ২০২১ সাল থেকে সময়টি ধরেছেন বলে জানিয়েছেন তৌফিক-ই-ইলাহী।
তিনি বলেন, ‘‘এই সম্পদ দেশ থেকে চলে যাওয়ার সঙ্গে আমেরিকার সুদহার বাড়ানো মূল্যস্ফীতি সৃষ্টি করেছে। তারা বিশ্ব থেকে ডলার নিয়ে গেছে।’’
মূল্যস্ফীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষও কষ্ট পেয়েছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রীর এ জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, মূলত এসব কারণে বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতি চাপে পড়েছে। মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ সবচেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছে। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।’’
অনেক দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় থাকা সংকটকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘‘বিশ্বে এখন গণতন্ত্রের যে ঘাটতির কথা বলা হচ্ছে, তা কিন্তু এখন হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। জ্বালানি তেল এবং ডলার এখন হাতিয়ার।’’
গত ১৫ বছরে সরকার যে সব নীতি র্নিধারণী সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে সার্বিকভাবে দেশে উন্নয়ন হয়েছে। উন্নয়নের সুবিধা গরিব মানুষই বেশি পেয়েছে। তাদের আয় ও কর্মসংস্থান বেড়েছে মন্তব্য করেন তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।