২০২৩ সালের মে মাসে মূল্যস্ফীতি এক যুগের সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশে উঠে। এরপর তা কিছুটা কমে ডিসেম্বরে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৪১ শতাংশ।
Published : 14 Jan 2024, 06:14 PM
২০২৩ সালের শেষ বছর ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি আট মাসের সর্বনিম্ন হলেও তা উদ্বেগজনক অবস্থায় আছে। সরকার চলতি অর্থবছরে এই হার যেখানে নামাতে চায়, সেখান থেকে এখনও অনেক বেশি আছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ এই প্রতিবেদনের তথ্য চলছে, সদ্য সমাপ্ত ডিসেম্বর মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে সাধারণ মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৪১ শতাংশ। এই হার গত আট মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
গত বছরের মে মাসে মূল্যস্ফীতি গত এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশে উঠে। সে সময় তা ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায় কি না, তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়। তবে তা আর না বেড়ে কিছুটা পড়তির দিকে হয়। কিন্তু তা কখনো ৯ শতাংশের নিচে নামেনি।
নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি আগের মাসের তুলনায় কিছুটা কমে ৯ দশমিক ৪৯ শতংশে নামে। সেখান থেকে ডিসেম্বরে কমে আর ০.০৮ শতাংশ।
অর্থাৎ মূল্যস্ফীতি ক্রমেই কিছুটা কমতে থাকলেও কমার হার খুবই নগণ্য। এর মানে হলো, মানুষের মধ্যে আর্থিক চাপ আসলে কমছে না কোনোভাবেই।
করোনাভাইরাস মহামারী শেষে বিশ্ব অর্থনীতির চাকা ঘুরতে শুরু করলে ২০২১ সালের শেষে জ্বালানি ও খাদ্যের দাম চড়তে থাকে বিশ্ববাজারে। তখন থেকেই বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতির পারদ বাড়তে থাকে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির শেষে ইউক্রেইনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়।
২০২২ সালে দেশে বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৪২ শতাংশ। ২০২৩ সালের ১২ মাসের গড় আরো বেড়ে হয় ৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
এর অর্থ হলো ২০২২ সালের শেষে মানুষের পণ্য বা সেবা কিনতে যেখানে ১০০ টাকা খরচ হয়েছে, এক বছর পরে তা বেড়ে হয়েছে গড়ে ১০৯ টাকা ৪৮ টাকা। আগের বছরেও প্রায় একই হারে মূল্যস্ফীতি বাড়ায় দুই বছরে আসলে মানুষের ব্যয় বেড়েছে ২০ শতাংশের মতো।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে সরকার মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহারেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের অঙ্গীকার করেছে। এরই মধ্যে ভোট শেষে শপথ নিয়েছে নতুন সরকার।
গত মাসের মূল্যস্ফীতির প্রতিবেদন অনুযায়ী খাদ্য উপখাতের মূল্যস্ফীতি দুই অংক থেকে ৯ দশমিক ৫৮ শতাংশে নেমে এসেছে। নভেম্বর মাসে খাদ্য উপখাতের মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
অন্যদিকে গত মাসে খাদ্য বহির্ভূত উপখাতে মূল্যস্ফীতি সামান্য বেড়ে ৮ দশমিক ৫২ শতাংশ হয়েছে। নভেম্বর মাসে এই হার ছিল ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ।
ডিসেম্বর মাসে গ্রাম ও শহরাঞ্চলেও সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার কমে যথাক্রমে ৯ দশমিক ৪৮ এবং ৯ দশমিক ১৫ শতাংশ হয়েছে। আর আগের মাস নভেম্বরে গ্রাম ও শহরাঞ্চলের মূল্যস্ফীতির ছিল যথাক্রমে ৯ দশমিক ৬২ এবং ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ।
বাজারের চাপে কাঞ্চন মিয়াদের ‘জীবন আর চলে না’
ভরা মৌসুমে শীতের সবজির দাম এবার বাড়ছে