মেয়ে নিখোঁজ ৭ দিন, আদালতে অপহরণের মামলা মায়ের

মায়ের অভিযোগ, স্থানীয় এক সবজি বিক্রেতা ‘বেড়াল দেওয়ার লোভ দেখিয়ে’ তার মেয়েকে অপহরণ করেছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 March 2023, 10:48 AM
Updated : 28 March 2023, 10:48 AM

চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী এলাকার এক স্কুল পড়ুয়া মেয়ে সাত দিন ধরে নিখোঁজ জানিয়ে স্থানীয় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা করেছেন তার মা।

চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক শরমিন জাহানের আদালতে মঙ্গলবার ওই মামলা করা হয়।

বাদীর আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ জানান, বিচারক অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে পাহাড়তলী থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

নিখোঁজ আবিদা সুলতানা আয়নী ওরফে আঁখি মনি (১০) পাহাড়তলি এলাকার আব্দুল হাদি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। পাহাড়তলীর আব্দুর কাজীর দীঘির পাড় এলাকায় তাদের বাসা।

শিশুটির মা মোছাম্মৎ বিবি ফাতেমা (২৬) পোশাক কারখানার কর্মী। শিশুটির বাবা ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন।

মামলায় আসামি করা হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা মো. রুবেলকে (৩৫)। রুবেল ওই এলাকার তরকারি বিক্রেতা।

বাদীর আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “২১ মার্চ বিকেলে আবিদা সুলতানাকে অপহরণ করা হয়। ইতোমধ্যে আট দিন পেরিয়ে গেছে। থানায় জিডি করা হয়েছে। মামলা করার জন্য থানায় গেলে তারা বলেছে আদালতে মামলা করতে।

“আসামি রুবেলকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে নিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু তাকে আটক করেনি। আদালত অভিযোগটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করতে বলেছে।”

মামলার বাদী ফাতেমা সাংবাদিকদের বলেন, “আমার মেয়ে বিড়ালের জন্য পাগল ছিল। বিড়াল দেওয়ার কথা বলে আমার মেয়েকে নিয়ে গেছে। আপনারা য়েভাবে হোক আমার মেয়েকে খুঁজে দেন।”

মামলার এজাহারে বলা হয়, ২১ মার্চ বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আরবি পড়তে বাসা থেকে বের হয়েছিল আবিদা। সে সময় সে বোরকা পরিহিত ছিল।

মামলার এজাহারে বলা হয়, “ওই এলাকার সিসিটিভি ভিডিও এবং স্থানীয়দের সাথে আলাপ করে জানা যায়, আসামি রুবেলের হাতে তখন একটি বাজারের থলে ছিল, যাতে একটি বিড়াল ছানা ছিল। রুবেল বিড়াল ছানাটি আবিদাকে দেয়। এরপর থেকে রুবেল ও আবিদাকে আর দেখা যায়নি।

“বিড়াল ছানা দেবার নাম করে আসামি রুবেল সহযোগীদের সহায়তায় আবিদাকে ভুল বুঝিয়ে বা ভয়ভীতি দেখিয়ে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে আটকে রেখেছে অথবা অসৎ উদ্দেশ্যে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তর করেছে।”

মামলার এজাহারে মোছাম্মৎ বিবি ফাতেমা বলেন, “ঘটনার দু-তিন দিন আগে স্কুলের এক বান্ধবী বিড়াল কিনেছে জানিয়ে আমার কাছে বিড়াল ছানা কিনে দেয়ার আবদার করে মেয়ে। তখন বলেছিলাম, বেতন পেলে বিড়াল ছানা কিনে দিব।

“তখন আবিদা বলেছিল, রাস্তার এক তরকারি বিক্রেতা বলেছে, তার এক পরিচিত লোক আছে। সেখান থেকে আমাকে বিড়াল ছানা এনে দেবে।”

জানতে চাইলে পাহাড়তলী থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শিশু নিখোঁজের ঘটনায় আগে জিডি হয়েছে, সেটি ধরেই আমরা তদন্ত করছি।

“শিশুটির মা-বাবা আলাদা থাকেন। যে তরকারি বিক্রেতার কথা বলা হচ্ছে সে স্থানীয়। সব বিষয় বিবেচনায় রেখেই আমরা কাজ করছি। যাদের প্রয়োজন তাদের সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এখনই কনক্লুসিভ কিছু বলতে পারছি না।”