“অভিভাবকদের প্রতি আবেদন- আপনারা শিশুদের মোবাইল নয়, বই দিন,” বলেন তিনি।
Published : 01 Mar 2024, 08:40 PM
বাঙালি সংস্কৃতি ও চেতনাকে লালন করে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রামের সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী।
শুক্রবার অমর একুশে বইমেলা মঞ্চের সাংস্কৃতিক আয়োজনের সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। চট্টগ্রামের অমর একুশে বইমেলার পর্দা নামছে শনিবার।
বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বলেন, “ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীন দেশ গড়ার ইচ্ছা বাঙালির মনে জন্ম নিয়েছে৷ অনেক দেশে গিয়েছি৷ কোনো দেশে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড কেবল বিদেশি কোনো ভাষায় লিখতে দেখিনি৷
“আমরা রক্ত দিয়ে বাংলা ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করেছি৷ তবে ভাষাপ্রেমের চেতনা যেন আমাদের অনেকের মাঝে কমে গেছে৷ আমি কিছুটা হতাশাবোধ করতাম৷”
মেয়র বলেন, “তবে এবার বইমেলায় তরুণদের যে সাড়া দেখেছি তাতে আমি আশাবাদী৷ তরুণরা জাগলে বাংলা ভাষা বাঁচবে, বাঙালি বাঁচবে৷ বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকবে বাঙালি জাতি৷ আসুন আমরা বাঙালি হই।”
আগামী বছর চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক মানের বইমেলা আয়োজনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে মেয়র বলেন, “আগামী বছর এই বইমেলায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ের লেখক, প্রকাশক, সংস্কৃতিকর্মীসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে আরো বড় পরিসরে চট্টগ্রাম বইমেলা করতে চাই আমি৷ আমি মনে করি বই মুক্তি দিবে মাদক ও মৌলবাদ থেকে৷
“জ্ঞানের আলোয় দূর হবে সংকীর্ণতা, সাম্প্রদায়িকতা ও সভ্যতার সংকট৷ অভিভাবকদের প্রতি আবেদন- আপনারা শিশুদের মোবাইল নয়, বই দিন। শিশুদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সংযুক্ত করেন৷ আসুন শিশুদের জন্য সম্পদ গড়ার চেয়ে শিশুদের সম্পদ হিসেবে গড়ে তোলাকে লক্ষ্য বানাই৷”
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন অমর একুশে বইমেলার আহ্বায়ক ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, চট্টগ্রাম বিভাগীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রধান সমন্বয়ক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান ভূ-স্বম্পত্তি কর্মকর্তা সুজন চৌধুরী, সৃজনশীল প্রকাশনা পরিষদের সভাপতি শাহাবুদ্দিন বাবু ও সাধারণ সম্পাদক আলী প্রয়াস।
উপস্থিত ছিলেন উপ-পুলিশ কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান, কাউন্সিলর আবদুস সালাম মাসুম, মো. জাবেদ, হাসান মুরাদ বিপ্লব, শাহেদ ইকবাল বাবু, নুরুল আমিন, আবদুল মান্নান, আতাউল্লাহ চৌধুরী, আনজুমান আরা, বইমেলা কমিটির সদস্য সচিব ও মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেম ও সিসিসি’র উপসচিব আশেকে রসুল চৌধুরী টিপু।
অনুষ্ঠানে সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন অপর্ণাচরণ সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, কাপাসগোলা সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ এবং কুসুমকুমারী সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা৷
নৃ-গোষ্ঠী শিল্পী দল, দ্যা স্কুল অব ক্লাসিক্যাল অ্যান্ড ফোক ডান্স, শিমুল শীল ও তার দল, ঐশী রক্ষিত, অনন্য সেন নিপা, সমাপ্তি বড়ুয়া গান ও নৃত্য পরিবেশন করেন৷
এবার সেরা স্টল হিসেবে অক্ষরবৃত্ত প্রকাশনী প্রথম, বাতিঘর প্রকাশনী দ্বিতীয় এবং প্রথমা ও বিদ্যানন্দ যৌথভাবে তৃতীয় পুরস্কার অর্জন করে। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের স্টল বিশেষ পুরস্কার পায়৷
মেলা আয়োজনে বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশকে সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা স্মারক দেওয়া হয়৷