স্ট্রোক হলে দ্রুত স্ট্রোক সেন্টারে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
Published : 30 Oct 2022, 07:53 PM
বিশ্বে প্রতি ২ সেকেন্ডে একজনের স্ট্রোক ও প্রতি ছয় সেকেন্ডে একজনের মৃত্যু হয় বলে এক বৈজ্ঞানিক সভায় জানিয়েছে বিশেষজ্ঞরা।
এছাড়া জীবন যাপনের পরিবর্তন, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের কারণে স্ট্রোক আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে জানান চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. হাসানুজ্জামান।
রোববার কলেজের শহীদ শাহ আলম বীর উত্তম মিলনায়তনে ‘বিশ্ব স্ট্রোক দিবস’ উপলক্ষে ‘স্ট্রোক ব্যবস্থাপনায় নতুনত্ব কী’ শীর্ষক সভায় এসব তথ্য জানানো হয়। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মো. হাসানুজ্জামান।
এর আগে ‘মূল্যবান সময় বাঁচান’ স্লোগানে শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে মো. হাসানুজ্জামান বলেন, স্ট্রোক হলে দেরি না করে রোগীদের অবশ্যই স্ট্রোক সেন্টারে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে। কারণ স্ট্রোক পরবর্তী প্রতি মিনিটে ব্রেইনের এক দশমিক ৯ মিলিয়ন কোষ মারা যায়।
“এতে মস্তিস্কের স্থায়ী ক্ষতি হয়। পুরো বিশ্বে প্রতি দুই সেকেন্ডে একজন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় এবং প্রতি ছয় সেকেন্ডে একজন রোগী মারা যায়।”
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্ট্রোকের রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের নিউরোলজি ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীর পরিসংখ্যানের দিকে তাকালেই সেটি স্পষ্ট হয়ে উঠে।
“মূলত আমাদের জীবন যাপনের পরিবর্তন, অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের কারণে স্ট্রোক বাড়ছে। স্ট্রোকের চিকিৎসা শতভাগ নিরাময়যোগ্য না হলেও নিয়মতান্ত্রিক চলাফেরা করে সুস্থ থাকা সম্ভব।”
দুই ধরনের স্ট্রোক রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর মধ্যে ৮৬ শতাংশই ইস্কেমিক স্ট্রোক এবং বাকি ১৪ শতাংশ হলো হেমোরজিক স্ট্রোক। ইস্কেমিক স্ট্রোক তখন হয় যখন মস্তিষ্কের রক্তনালীতে জমাট বেঁধে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয়। আবার হেমোরজিক স্ট্রোক হলো- যখন মস্তিষ্কের রক্তনালী ফেটে গিয়ে রক্তক্ষরণ হয়।
“স্ট্রোক রোগীর পুনবার্সন প্রক্রিয়া নিয়েও আমাদের ভাবতে হবে। কারণ স্ট্রোকের চিকিৎসা খুবই দীর্ঘমেয়াদী। তবে বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোলজি ওয়ার্ডে আধুনিক চিকিৎসা শুরু হয়েছে।
“স্ট্রোকের লক্ষণ শুরু হওয়ার তিন ঘণ্টার মধ্যে আমাদের ওয়ার্ডে আসলে থ্রম্বোলাইটিক থেরাপির মাধ্যমে স্ট্রোক সম্পূর্ণ নিরাময় করা সম্ভব। ইতোমধ্যে আমরা যতগুলো থেরাপি দিয়েছি, শতভাগ সফল হয়েছে। রোগীরা সুস্থ জীবন যাপন করছেন।”
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. হাফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় নিউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মুহিতুল ইসলাম, ডা. প্রদীপ কুমার কায়স্থগীর, ডা. শিউলি মজুমদার, ডা. পঞ্চানন দাশ, সহকারী অধ্যাপক ডা. মাহবুবুল আলম খন্দকার, ডা. মসিহুজ্জামান আলফা, ডা. তৌহিদুর রহমান, আনোয়ারুল কিবরিয়া, ডা. জামান আহম্মদ, ডা. একরামুল আজম শাহেদ, কনসালটেন্ট ডা. সীমান্ত ওয়াদ্দাদার ও রেজিস্টার ডা. পীযুষ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।