যাত্রীবেশে উঠে মোটর সাইকেল ছিনতাই, গ্রেপ্তার ১০

ছিনতাই করা মোটর সাইকেলসহ সাতটি বাইক উদ্ধার করেছে পুলিশ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 May 2023, 02:17 PM
Updated : 7 May 2023, 02:17 PM

চট্টগ্রামে ভাড়ায় চালিত এক মোটর সাইকেল ছিনতাইয়ের তদন্ত করতে গিয়ে ১০ জনের একটি চক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ।

চট্টগ্রাম নগরী, সীতাকুণ্ড, কুমিল্লার নাঙ্গলকোট এবং ঢাকার কামরাঙ্গীরচর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করার পাশাপাশি ছিনতাই করা মোটর সাইকেলসহ সাতটি বাইক উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তাররা হলেন- সাইদুল ইসলাম ওরফে নয়ন (২৫), কামরুল হাসান (২৫), মো. শাহীন ওরফে কাকা (২৯), মো. রানা (২৫) মো. রানা ওরফে বোং ভাই (২৪), রবিউল হাসান ওরফে সাজু (২২), মো. নাসির (২৫), দেলোয়ার হোসেন দেলু (৪০), বাপ্পারাজ দাশ (২২) এবং মো. তামিম (২১)।

তাদের মধ্যে বাপ্পারাজ ও তামিমকে গত ২৮ এপ্রিল গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাকিদের শনি ও রোববার অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় বলে আকবরশাহ থানার ওসি ওয়ালী উদ্দিন আকবর জানান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, গত ১৮ এপ্রিল রাতে উত্তর কাট্টলী টোল রোড এলাকা থেকে চালককে মারধর করে একটি বাইক ছিনতাই করে যাত্রীবেশী এক যুবক এবং তার সহযোগীরা। ওই ঘটনায় মামলা হলে তদন্ত করতে গিয়ে গত ২৮ এপ্রিল বাপ্পারাজ ও তামিমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

“জিজ্ঞাসাবাদে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চক্রের অন্য সদস্যদের সন্ধান পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে শনিবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাক্কা রাস্তার মাথা এলাকা থেকে নয়ন, কামরুল, শাহীন ও রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ঢাকার কামরাঙ্গীরচর ও কুমিল্লার লাঙ্গলকোট এবং সীতাকুণ্ডের কালুশাহ নগর থেকে অন্যদের গ্রেপ্তার করা হয়।”

ওসি জানান, মামলার বাদী শিবাংকর ভাড়ায় বণিক মোটর সাইকেলে যাত্রী বহন করেন। গত ১৮ এপ্রিল সল্টগোলা ক্রসিং থেকে এক যাত্রীকে ভাড়া নিয়েছিলেন। তাকে নিয়ে যাওয়ার পথে উত্তর কাট্টলী টোল রোড এলাকার এজেসি পেট্রোল পাম্পের কাছে সেই যাত্রী বাইক থামতে বলেন।

এসময় আরও চার পাঁচজন এসে চালককে আটকে মারধর করে এবং তার মোটর সাইকেল, মোবাইল ও টাকা পয়সা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।

ওসি বলেন, এ চক্রের সদস্যরা দুই ভাগে ভাগ হয়ে মোটর সাইকেল ছিনতাই করে। তাদের একটি অংশ যাত্রীবেশে মোটর সাইকেলে উঠে ছিনতাই করেন। অন্য অংশ সরাসরি চুরির সাথে জড়িত।

“চুরির নেতেৃত্বে আছেন সাইদুল ইসলাম নয়ন, আর ছিনতাইয়ের সাথে দেলু। নয়নের সাথে থাকেন শাহীন ও রানা। দেলুর নেতৃত্বে কাজ করেন বাপ্পারাজ, তমিম ও রানা ওরফে বোং ভাই।”

পুলিশ কর্মকর্তা ওয়ালী জানান, ১৮ এপ্রিল শিবাংকরের মোটর সাইকেলে যাত্রীবেশে উঠেছিলেন বোং ভাই। কাট্টলী এলাকায় পৌঁছানোর পর অন্যরা চালককে মারধর করে মোটর সাইকেলটি ছিনতাই করে।

“মূলত বক্ষব্যাধি হাসপাতালের পেছনে টোল রোডের নির্জন স্থানে চক্রটি মোটর সাইকেল ছিনতাই করে। বিভিন্ন স্থান থেকে ভাড়ায় চালিত বাইকে যাত্রীবেশে উঠে সেখানে নিয়ে তারা কাজ সারে।”

ওসি বলেন, গত ১৮ এপ্রিল মোটর সাইকেল চুরির পরিকল্পনা করেন নয়ন ও শাহীন। এসময় তারা দেলুর সাথে যোগাযোগ করেন। একসাথে হয়ে তারা রানা ওরফে বোং ভাইকে যাত্রীবেশে শিবাংকরের মোটর সাইকেলে তুলে দেন। অন্যরা টোল রোডে অবস্থান নিয়েছিলেন। ছিনতাইয়ের পর তারা মোটর সাইকেলটি ১৭ হাজার টাকায় নাসিরের কাছে বিক্রি করে দেন।

“নাসির ও সাজু মূলত চোরাই মোটর সাইকেলের ক্রেতা। কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের গোত্রশালায় নাসিরের একটি মোটর সাইকেলের গ্যারেজ আছে। সেখান থেকে শিবাংকরের বাইকটিসহ মোট সাতটি বাইক উদ্ধার করা হয়।”

রানা ওরফে বোং ভাইয়ের বাড়ি ভোলায়। তবে চট্টগ্রাম ও ঢাকার কামরাঙ্গীচরে তারা আলাদা দুটি বাসা আছে। কামরাঙ্গীচরের বাসা থেকে শনিবার রাতে তাকে গ্রেপ্তারের পর শিবাংকরের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া মোবাইলটি উদ্ধার করা হয়।

এছাড়া দেলুকে রোববার সকালে সীতাকুণ্ড থানার কালুশাহ নগরের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করার কথা জানান ওসি।