এক সাংবাদিক মারধরের দৃশ্য ভিডিও করে তা সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করলে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে, পুলিশ তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয়।
Published : 11 Jun 2023, 06:53 PM
এক শিশুকে মারধরের ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের এক সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে ঘটনার তদন্তে এক কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
রোববার মারধরের এ ঘটনায় যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই পুলিশ সদস্যের নাম শওকত আলী। নগর পুলিশের যানবাহন শাখায় সংযুক্ত এ পুলিশ কনস্টেবল ট্রাফিক বিভাগের রেকার চালক।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (যানবাহন) কীর্তিমান চাকমা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, শিশুকে মারধরের অভিযোগ পেয়েই কনস্টেবল শওকতকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
পাশাপাশি সহকারী কমিশনারকে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
রোববার বেলা ১১টার দিকে নগরীর টাইগার পাস মোড়ের ট্রাফিক পুলিশ বক্সের পাশে একটি চায়ের দোকানে মারধরের এ ঘটনা ঘটে।
সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া মারধরের ভিডিওতে দেখা যায়, পোশাক পরিহিত ওই পুলিশ সদস্য ধূমপানরত অবস্থায় টাইগার পাস মোড়ে একটি চায়ের দোকানে এ শিশুকে মাথার চুল ধরে গাল-পিঠে থাপ্পড় মারতে মারতে এক টেবিল থেকে আরেক টেবিলের দিকে নিয়ে যায়। সেখানে এক সাংবাদিক বিষয়টি দেখে ভিডিও করেন এবং ওই শিশুকে মারধর করতে নিষেধ করেন।
বেলা ১টার দিকে ওই সাংবাদিকের ফেইসবুকে ভিডিওটি পোস্ট করার পর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিও পোস্টকারী দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার চট্টগ্রাম অফিসের ফটোসাংবাদিক আবু সাঈদ মোহাম্মদ তামান্না বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বৃষ্টির কারণে আমি মোটরসাইকেল থামিয়ে টাইগার পাস মোড়ে চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়িয়েছিলাম। এসময় এক পুলিশ সদস্যকে শিশুটিকে মারধর করতে দেখে ভিডিও ধারণ করি। আমি শিশুটিকে কেন মারধর করা হচ্ছে সেটি ওই পুলিশ সদস্যের কাছে জানতে চাইলে তিনি মারধর বন্ধ করেন।”
আনুমানিক ১২ বছর বয়সী ওই শিশুর জানান, পুলিশ বক্সের টেবিলের ড্রয়ার থেকে সিগারেট চুরির অভিযোগে তাকে মারধর করেন ওই পুলিশ সদস্য।
তার দাবি, চায়ের দোকানে বসে নাস্তা করার সময় হঠাৎ করেই ওই পুলিশ সদস্য তাকে মারধর শুরু করেন।
এ বিষয়ে কনস্টেবল শওকতের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য জানা যায়নি।
এদিকে রোববার বিকালে এ বিষয়ে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের যানবাহান শাখার উপ কমিশনার হোসাইন মোহাম্মদ কবির ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বলা হয়, কনস্টেবল শওকত আলী যানবাহন শাখা থেকে ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের রেকার চালক হিসেবে কর্মরত আছেন।
“পুলিশের ইউনিফর্ম পরিধান করে ধূমপানরত অবস্থায় একটি দোকানের মধ্যে অজ্ঞাতনামা এক শিশুর সঙ্গে অশোভন আচরণ করার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেইসবুক) ভাইরাল হয়। বিষয়টি পুলিশের ভাবমূর্তি জনসম্মুখে ক্ষুন্ন করেছে। শৃঙ্খলাপরিপন্থি এ কার্যকলাপের কারণে পিআরবি ৮৮০ বিধি মোতাবেক কনস্টেবল শওকতকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হল। সাময়িত বরখাস্ত চলাকালীন সময়ে তিনি আরআই দামপাড়া পুলিশ লাইনে সংযুক্ত থাকবেন এবং নিয়মিত রোলকলে হাজির থাকবেন।”
বরখাস্ত থাকাকালীন সময়ে বিএসআর (পার্ট-১) ৭১ বিধি মোতাবেক খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন বলেও আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।