অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাত থেকে সুরক্ষা দিতে চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা, হালিশহর ও কাট্টলী এলাকায় সাগর তীরের জেলেপল্লীগুলো থেকে কমপক্ষে তিন হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার রাত থেকে রানী রাসমনি ঘাট, আকমল আলী ঘাট ও পতেঙ্গা সৈকত এলাকা থেকে তাদের সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু হয়।
সেদিন রাত ১১টায় জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান এসব জেলেপল্লীতে যান। সেখানকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে তিনি ঘরে ঘরে গিয়ে আহ্বান জানান।
এসময় স্থানীয় বাসিন্দাদের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, “আপনারা অনেকেই জিনিসপত্র সরিয়েছেন কিন্তু নিজেরা এখনো ঘর ছেড়ে যাননি। ঝড় আসার জন্য অপেক্ষা করার সুযোগ নেই। ঝড়ের আগেই আপনাদের সবাইকে যেতে হবে।
“এখানে আপনাদের ঘর ও জিনিসপত্র পাহারার জন্য পুলিশ ও আনসার সদস্যরা থাকবেন। ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলে আমরা মেরামত করতে পারব কিন্তু জীবনের নিরাপত্তা সবার আগে।”
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) মো. তৌহিদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জেলা প্রশাসক স্যার রাত ১টা পর্যন্ত সেখানকার জেলে পল্লীগুলোতে গিয়েছেন। তাদের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যেতে বলেছেন।
“শনিবার দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার বাসিন্দাকে এসব এলাকা থেকে সরানো হয়েছে। সেখানে মোট প্রায় ৫ হাজার বাসিন্দার বসবাস।”
গত বছর অক্টোবরে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে নগরীর আকমল আলী ঘাট এলাকায় বেড়িবাঁধের বাইরে উন্মুক্ত সাগর তীরে বসবাসকারী কয়েকশ জেলে পরিবার সর্বস্ব হারিয়েছিল। তাদের ঘর তছনছ হওয়ার পাশাপাশি মাছ ধরার জালও পানিতে ভেসে গিয়েছিল।
সেই আশঙ্কায় গতকাল শুক্রবার থেকে সেখানকার মৎস্যজীবীরা জাল ও মাছ ধরার অন্যান্য সরঞ্জাম নিরাপদ স্থানে সরাতে শুরু করে।
এনডিসি মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, জেলেদের মাছ ধরার সরঞ্জামাদি, ঘরের মালামাল ও আসবাবপত্র সরিয়ে নেয়ার জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে পিকআপ দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে।
“পতেঙ্গা, হালিশহর, কাট্টলী এলাকার সাগরপাড় থেকে যেসকল লোকজন এখনো নিরাপদে সরেনি তাদেরকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়ার কার্যক্রম জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে এখনো চলছে।”
ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে অতি ভারী বর্ষণ ও ভূমিধসের সতর্কতা জারির পর বন্দর নগরীর ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় গুলো থেকেও লোকজনকে সরিয়ে নিতে শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন।