ট্রাইব্যুনালের পিপি রুবেল পাল জানিয়েছেন, ঢাকা জেল থেকে এক জন এবং চট্টগ্রাম জেলে থাকা আট জন আসামিকে ডিজিটাল মাধ্যমে উপস্থিত রেখে বিচার কাজ পরিচালিত হয়েছে।
Published : 22 Jan 2024, 05:00 PM
চট্টগ্রামে পুলিশ বক্সে বোমা হামলার ঘটনায় সন্ত্রাস দমন আইনে করা একটি মামলায় ৯ আসামির ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে মামলার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
এই মামলায় ২০২৩ সালের ২৮ অগাস্ট ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। সোমবার ছিল মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর দিন।
‘আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার আইন ২০২০’ এর মাধ্যমে এই প্রথম চট্টগ্রামের সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের কোনো মামলার কার্যক্রম পরিচালিত হল।
সোমবার চট্টগ্রামের সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আবদুল হালিমের আদালতে অডিও-ভিডিও কনফারেন্সিয়ের মাধ্যমে ৯ আসামির ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে মামলার বাদির সাক্ষ্য নেওয়া হয়।
ট্রাইব্যুনালের পিপি রুবেল পাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আইন অনুসারে আসামিদের অনুপস্থিতিতে সাক্ষ্যগ্রহণ করা যায় না। কিন্তু নিরাপত্তাজনিত কারণে জঙ্গিদের কারাগার থেকে আদালতে হাজির করতে কোনো কোনো সময় সমস্যা হয়।
“তাই আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার আইন ২০২০ এর ৫ ধারা অনুসরণ করে হাই কোর্টের নির্দেশাবলী মতে ঢাকা জেলে থাকা এক জন এবং চট্টগ্রাম জেলে থাকা আট জন আসামিকে ডিজিটাল মাধ্যমে উপস্থিত রেখে বিচার কাজ পরিচালিত হয়েছে।”
চট্টগ্রামের সন্ত্রাস বিরোধী ট্রাইব্যুনালে এই ধরণের ডিজিটাল উপস্থিতি এই প্রথম জানিয়ে পিপি রুবেল পাল বলেন, “আদালত কক্ষে এর জন্য প্রয়োজনীয় কারিগরি সেটআপ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি কক্ষে আসামিদের হাজির করা হয়। সেখানে জেলার উপস্থিত ছিলেন।
“আমরা স্ক্রিনে দেখে ও কথা বলে আসামিদের হাজিরা নিশ্চিত করেছি। আদালত কক্ষে আসামিদের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। মামলার বাদি প্রথম সাক্ষ্য দিয়েছেন।”
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগের প্রশাসন শাখা ২০২০ সালের ২৩ অগাস্ট এ সংক্রান্ত একটি প্র্যাকটিস নির্দেশনা দেয়।
অডিও-ভিডিও বা অন্য কোনো ইলেকট্রিক ডিভাইসের মাধ্যমে বিচারপ্রার্থী পক্ষগণ, তাদের আইনজীবী বা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো ব্যক্তি বা সাক্ষীগণের ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে সাক্ষ্যগ্রহণ ও শুনানিসহ মামলার যে কোনো পর্যায়ে অবশ্যকরণীয় ক্ষেত্রে এই নির্দেশনা দেয়া হয়।
ওই নির্দেশনায় আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার আইন ২০২০ এর ৫ ধারার ক্ষমতাবলে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি এই ‘প্র্যাকটিস নির্দেশনা’ জারি করেন।
সোমবার সাক্ষ্য হওয়া এই মামলার ১৫ জন আসামির মধ্যে দুবাই প্রবাসী শাহজাহান শুরু থেকে পলাতক। মামলার আসামিদের মধ্যে হাজতে থাকা দুইজন এবং উচ্চ আদালত থেকে জামিনে থাকা তিনজন সশরীরে আদালতে হাজির ছিলেন এদিন।
আসামিদের মধ্যে এক জন কিশোরও রয়েছে।
২০২০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে ষোলশহর ২ নম্বর গেইট ট্রাফিক বক্সে ওই বিস্ফোরণে দুই ট্রাফিক পুলিশ সদস্যসহ পাঁচজন আহত হন। বিস্ফোরণে ট্রাফিক বক্সটিতে থাকা সিগন্যাল বাতি নিয়ন্ত্রণের সুইচ বোর্ড ধ্বংস হয়।
এই হামলায় আইএস জড়িত থাকার দায় স্বীকার করে বলে জঙ্গিবাদ পর্যবেক্ষণকারী সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ তখন দাবি করেছিল।
এ ঘটনায় ট্রাফিক পুলিশের পক্ষে টিআই অনিল বিকাশ চাকমা পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা করেন। তা তদন্তের দায়িত্ব পায় নগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।
২০২২ সালের ২২ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের এসআই সঞ্জয় গুহ।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, মামলার আসামিরা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির মতাদর্শী নব্য জেএমবির সদস্য। সরকারি স্থাপনায় হামলা ও সরকারি কর্মচারীদের হত্যা করে নিজেদের কার্যক্রমে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেছে।
আরও পড়ুন...
চট্টগ্রামে পুলিশ বক্সে বোমায় অভিযোগপত্র, আসামি প্রবাসীসহ ১৬
চট্টগ্রামে ট্রাফিক বক্সে বিস্ফোরণ, ২ পুলিশ আহত